শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৭ অপরাহ্ন

অপারেশন থিয়েটারে ঢুকল গেমস খেলাবস্থায়, বের হলো লাশ হয়ে

অপারেশন থিয়েটারে ঢুকল গেমস খেলাবস্থায়, বের হলো লাশ হয়ে

স্বদেশ ডেস্ক:

বগুড়ায় ভুল চিকিৎসায় তাউহিদ হাসান (৯) নামের এক শিশুর মৃত্যুর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ডক্টরস ক্লিনিক (ইউনিট-২) নামের একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।

শিশুটির বাবা ও তার পরিবারের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসার কারণে তাউহিদের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর জনতার তোপের মুখে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (নাক কান ও গলা) ডা. সাঈদুজ্জামান ও ডা. নিতাই চন্দ্রকে আটক করে পুলিশ।

শিশু তাউহিদ হাসান সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী গ্রামের ফিরোজুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে শাজাহানপুর এলাকার শাহীন একাডেমিতে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বাবা সাইফুল ইসলাম তার ছেলের লেখাপড়ার জন্য পরিবার নিয়ে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া এলাকায় বসবাস করছিলেন।

শিশুর পরিবারের অভিযোগের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, টনসিলজনিত অপারেশনের জন্য তাউহিদ হাসানকে বৃহস্পতিবার বিকেলে তার বাবা শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ডক্টরস ইউনিট-২ নামের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাউহিদ হাসানকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডা. সাঈদুজ্জামান তাউহিদ হাসানের টনসিল অপারেশন করেন। তারপর থেকে থেকে শিশুটির জ্ঞান আর ফিরে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে অপারেশন থিয়েটারেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের পরিবার ও তার বাবা ফিরোজুল ইসলাম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, অপারেশনের পর তাউহিদকে অতিরিক্ত সময় অপারেশন থিয়েটারে রাখার পর একটি আলাদা রুমে নিয়ে রাখা হয়। এ সময় সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। শিশুর পরিবারকে জানানো হয় সেখানে যাওয়া যাবে না।

বিষয়টি নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কঠোর গোপনীয়তা এবং শিশুটির বিষয়ে কিছু জানতে না দেওয়ার কারণে পরিবারের সদস্যদের উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়। তখন তাদের বলা হয় শিশুটি ভালো আছে।

এক পর্যায়ে শিশুর পরিবার এক রকম জোর করেই ওই রুমে ঢুকে শিশুটির শরীরে হাত দিলে তারা দেখেন শিশুটির শরীর বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে আছে। তারা বুঝতে পারেন আরও আগেই শিশুটি মারা গেছে।

নিহত শিশুর বাবা ফিরোজুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা অভিযোগ করে জানান, তার ছেলে মোবাইল ফোনে গেমস খেলতে খেলতে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে, আর ফিরে এলো লাশ হয়ে।

তার অভিযোগ, চিকিৎসকদের দাবিকৃত টাকা আগাম পরিশোধের পরও তার শিশুসন্তানকে মেরে ফেলা হয়েছে। এমন মৃত্যুর পরেও তা গোপন করে তাদের মিথ্যা কথা বলা হয়েছে।

ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ লোকজন ক্লিনিকে চড়াও হতে থাকে। ঘটনার খবর পেয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামার ও পরিদর্শকসহ (তদন্ত) পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ সময় জনতার রোষের মুখে পুলিশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর  রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (নাক কান ও গলা)  ডা. সাঈদুজ্জামান ও ডা. নিতাই চন্দ্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল ইসলাম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় মধ্যরাতে চিকিৎসকদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষে অভিযোগ করা হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে এবং তা মামলা আকারে নথিভুক্ত করা হবে।

এদিকে, অভিযুক্ত ডাক্তার ডা. সাঈদুজ্জামান বলেন, ‘অ্যানেসথেসিয়ার কারণে শিশুটির মৃত্যু ঘটে থাকতে পারে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877