বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

বড় দেশগুলোর সাথে সুষম সম্পর্ক চান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বড় দেশগুলোর সাথে সুষম সম্পর্ক চান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বদেশ ডেস্ক:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রার শুরুতে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন। এছাড়া সব দেশের সাথে সুসম্পর্ক গড়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সবার সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। বড় দেশগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।’

এই মুহূর্তে দেশে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই মূল অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হলে বাকিগুলোও সঠিক পথে ফিরবে।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে নতুন যাত্রার আশা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শপথ নেয়ার পরই দেশজুড়ে সহিংসতা বন্ধে ড. ইউনূসের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ড. ইউনূসের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কূটনৈতিক আলাপচারিতায় কথা বলব না, তবে স্পষ্টতই একটি বিষয় আমরা পরিষ্কার করেছি যে, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত গড়তে দেখতে চাই।’

মিলার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সরাও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, তারা বাংলাদেশের নতুন (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকারের সাথে যুক্ত হতে এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের এই জটিল পরিস্থিতিতে সমর্থন দিতে আগ্রহী।

ইইউ বলে, এই পরিবর্তন সুশাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার অংশ হওয়া উচিত।

ইইউয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন,‘নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের শপথ গ্রহণকে স্বাগত জানাচ্ছে ইইউ।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি ক্রান্তিকালে প্রবেশ করছে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং যেসব মৃত্যু ও সহিংসতা ঘটেছে তার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে।

এই ইইউ প্রতিনিধি বলেন,‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথ এবং দেশটির জনগণ, বিশেষ করে তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলিও।

এ বিষয়ে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে শেয়ার করা একটি বিবৃতিতে তিনি বলেন,‘এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে দেখা অত্যন্ত সম্মানের।’

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বাংলাদেশ।’

নিজের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করা এক বার্তায় মোদি বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য উভয় দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এছাড়া, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়ে চীন পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, বেইজিং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং দেশটির জনগণের দ্বারা স্বাধীনভাবে নির্বাচিত উন্নয়নের পথকে সম্মান করি।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ বলেছে, নতুন সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ আসে তা দেখা হবে।

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ যেভাবে প্রয়োজন মনে করবে, আমরা অবশ্যই সেভাবে তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত রয়েছি।’

সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877