বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন

হানিয়া হত্যা : প্রতিশোধের ঘোষণা খামেনির

হানিয়া হত্যা : প্রতিশোধের ঘোষণা খামেনির

স্বদেশ ডেস্ক:

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বুধবার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করায় ইসরাইলকে কঠোর শাস্তি প্রদান ও প্রতিশোধ নেয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। হানিয়া ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে ছিলেন।

ইসরাইল যদিও এই হত্যা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি , তবুও ওয়াশিংটনের নিউ লাইনস ইনস্টিটিউটের নিকোলাস হেরাস ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে এই যে এ রকম এক উচ্চ পর্যায়ের সফরের সময়ে ‘তেহরানের বুকে’ এই হত্যা ইরানের প্রতি ‘সংঘাত কমিয়ে আনার’ জন্য ইসরাইলের তরফে স্পষ্ট ইঙ্গিত।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইলিরা এখনো কৃতিত্ব দাবি করেনি, তবে সেটা তারা করতে পারে। ইসরাইলিরা ইরান ও তার মিত্রদের উপর যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময়ে আঘাত হানতে পারে।’

হেরাস বলেন, হানিয়াকে হত্যা এবং মঙ্গলবার লেবাননের বৈরুতে একজন পদস্থ হিজবুল্লাহ নেতা ফুয়াদ শুকরের হত্যা প্রমাণ করে যে ‘ইসরাইলিরা এই আভাসই দিচ্ছে যে ইসরাইলের উন্নত গোয়েন্দা, নজরদারি, পর্যবেক্ষণ এবং কার্যকারিতার ক্ষমতা আছে’ এবং ‘ইসরাইলিরা এগিয়ে রয়েছে।’

লন্ডনের কিংস কলেজে মধ্য প্রাচ্যের নিরাপত্তাবিষয়ক অধ্যাপক আহরন ব্রেগম্যান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, যদিও এটা বলা কঠিন যে ইরান কী করবে, তবুও এই ইসলামি প্রজাতন্ত্র ‘প্রত্যক্ষভাবে ইসরাইলকে আক্রমণ করবে না।’

বার্গম্যান বলেন, ‘ইরানের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে তার অধীনে আণবিক বোমা তৈরি। এখন অবশ্য এর জন্য যথার্থ সময় নয়। সুতরাং তারা প্রক্সির মাধ্যমে কাজ করাটা পছন্দ করবে। তবে ইসরাইল যখন কাউকে তার ( ইরানের) মাটিতেই হত্যা করে তখন দেশটি ইসরাইলের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় এবং ইসরাইলের মাধ্যমে অপমানিত হয়।’

অস্ত্র বিরতি আলোচনায় এই ঘটনার প্রভাব

এ দিকে গাজা যুদ্ধের বিষয়ে অস্ত্র বিরতি ও পণবন্দি সম্পর্কে আলোচনায় সক্রিয় রাষ্ট্র কাতার হানিয়াকে হত্যার ‘কঠোর ভাষায় নিন্দা’ জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের এই ছোট্ট দেশটি এই হত্যাকে ‘একটি বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ এবং আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইনের ‘নির্লজ্জ লংঘন’ বলেও অভিহিত করেছে।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, “ এই হত্যাকান্ড এবং গাজায় অসামরিক লোকজনকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ইসরায়েলের বেপরোয়া আচরণের কারণে এই অঞ্চলটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতে পড়বে এবং শান্তির সুযোগকে খর্ব করবে”।

ব্রেগম্যান বলেন, এই আলোচনা ‘এখন আমাদের কোথাও নিয়ে যাচ্ছে না।’ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতেনিয়াহু কিংবা গাজায় হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার কেউ সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করতে চান না।’

ব্রেগম্যান বলেন, ‘নেতানিয়াহু রাজনৈতিক কারণে পণবন্দি চুক্তি করতে চাইছেন না। কারণ তার জোটের সদস্যরা এতে আগ্রহী নন, সিনওয়ার হয়তো সেটাই পেতে যাচ্ছেন, যা তিনি বরাবর চেয়েছেন : আঞ্চলিক যুদ্ধ।’

বিশ্লেষক হেরাস বলেন, হানিয়ার হত্যা অস্ত্রবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার প্রচেষ্টায় ‘যুক্তরাষ্ট্রের আরব সহযোগী কাতার ও মিসরের জন্য বড় রকমের আঘাত।’

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পণবন্দি চুক্তি করানোর প্রচেষ্টায় মিসর ও কাতার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একই অবস্থানে রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বার বার বলেছেন যে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে গাজায় একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি সম্পাদন।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877