স্বদেশ ডেস্ক:
দেশের স্বাধীনতা অর্জনে মুক্তিযোদ্ধাদের মহান আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের সবসময় সবার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়া উচিত, যাতে করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তারা গর্ববোধ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সবসময় সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে। তাদের সম্মানটা সর্বোচ্চ থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকালে তার কার্যালয়ের (পিএমও) হলে ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০২৪’-এর নির্বাচিত ফেলোদের এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করা জাতি তাই বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করেই চলবো। সেইভাবেই আমাদের গড়ে উঠতে হবে।
তিনি বলেন, সব থেকে বড় কথা যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদের কথাটা মাথায় রাখতে হবে। জাতির পিতা যে আহবান করেছিলেন ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্রুর মোকাবিলা করতে হবে’, সেই আহবানে সাড়া দিয়ে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরিবার-সংসার সব কিছু ছেড়ে দিয়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে। তাদের সেই আত্মত্যাগের মধ্যদিয়েই আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা অনেকেই জীবন দিয়েছেন,পঙ্গুত্ববরণ করে শত্রুকে পরাজিত করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন। কাজেই তাদের সবসময় সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে। তাদের সম্মানটা সর্বোচ্চ থাকবে।
তিনি বলেন, একটা সময় এই মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত ছিল এবং তিনি সরকারে আসার পর থেকেই তাদের সবরকম সহযোগিতা করেছেন ও করে যাচ্ছেন।
দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযোদ্ধারা যেন সম্মানিত হন সে কথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গর্ব করে যেন তারা বলতে পারেন আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমার মতামতের সঙ্গে নাও থাকতে পারে,আমার দলে নাও থাকতে পারে। কিন্তু তারপরেও সে মুক্তিযোদ্ধা। কাজেই আমার কাছে সবাই সম্মানিত। আর সেই সম্মানটা যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ তাদেরকে দেবে, সেটাই আমরা চাই।’
প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ অর্জনকারিদের অভিনন্দন জানিয়ে ভবিষ্যতে এটি যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য ট্রাস্ট ফান্ড করে এরজন্য স্থায়ী বন্দোবস্তো করারও ঘোষণা দেন অনুষ্ঠানে। কেননা ’৯৬ পরবর্তী তার সরকারের দেয়া ফেলোশিপ পরবর্তী বিএনপি জামায়াত সরকার বন্ধ করে দিলে বিদেশে তাদের অনেক দুরাবস্থায় পড়তে হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট (জিআইইউ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যায়ে ৩৯ জন ও পিএইচডি পর্যায়ে ১১ জনকে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৭ জন মাস্টার্স ডিগ্রি ও ১১ জন পিএইডি ফেলোকে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।
এ পর্যন্ত বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য প্রায় ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০৮ জন মাস্টার্স ফেলো এবং ১১৬ জন পিএইচডি ফেলোকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২১৫ জন মাস্টার্স ফেলো এবং ২৬ জন পিএইচডি ফেলো তাদের ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ স্বাগত বক্তৃতা করেন। ফেলোশিপ লাভকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীও অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
সূত্র : বাসস