স্বদেশ ডেস্ক: ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়’ কবিতা সত্যিই হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে, বাড়ছে ক্ষুধার রাজ্য। অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমেই উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকী এই নিরিখে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার থেকেও দুরুহ অবস্থা ভারতের। এবছর গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে (জিএইচআই) থাকা ১১৭টি দেশের মধ্যে ১০২ নম্বরে ভারত। যতদিন যাচ্ছে র্যাঙ্কিংয়ে অবনতি ঘটছে এদেশের। ২০১৪ সালে ক্ষুধার্ত মানুষের নিরিখে ৭৭টি দেশের ৫৫ নম্বরে ছিল ভারত। জিএইচআইয়ের এমন রিপোর্টে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে। ক্ষুধার্ত দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিচারের পদ্ধতির বদলের কারণে আগের মতো করে অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করা না গেলেও দেশের এমন পরিস্থিতির জন্য জিএইচআইয়ের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ভারত। তবে এ তালিকায় র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশে ও শ্রীলঙ্কা। তাদের বর্তমান র্যাঙ্কিং যথাক্রমে ৮৮ এবং ৬৬। এমনকী পাকিস্তান রয়েছে ৯৪ নম্বরে। অর্থাৎ সরকার মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও ক্ষুধা মোকাবিলায় যে তারা পিছিয়ে, তা স্পষ্ট।
ওয়েলথ হাঙ্গার লাইফ এ্যান্ড কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে বিশ্বে এমন ৪৫টি দেশ আছে, ক্ষুধা মোকাবিলা যাদের কাছে রীতিমতো চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মধ্যেই অন্যতম ভারত। রিপোর্ট অনুযায়ী, “ভারতে ছয় থেকে ২৩ মাসের শিশুদের মধ্যে শুধুমাত্র ৯.৬ শতাংশ ন্যূনতম পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার পায়। ২০১৫-১৬-য় ভারতের ৯০ শতাংশ বাড়িতে স্বাস্থ্যকর পানীয় জল পাওয়া যেত। কিন্তু ২০১৭-য় ৩৯ শতাংশ বাড়িই অস্বাস্থ্যকর।” এর আগে গত ২০১৬-য় ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সমীক্ষায় ক্ষুধা মোকাবিলার নিরিখে ভারতের স্থান ছিল ৯৭। পরের বছর আরও তিন ধাপ নেমে ১০০-য় পৌঁছায় দেশ। এবার জিএইচআইয়ের রিপোর্টেও ভারতের দুর্দশাই প্রকট হয়ে উঠল। আচ্ছে দিন কই? স্বাভাবিকভাবে এ প্রশ্নটা যেন উঠেই যায়।