সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মিরপুরে ১২শ ফ্ল্যাট…..!

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মিরপুরে ১২শ ফ্ল্যাট…..!

মামুন আব্দুল্লাহ: রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১২শ’ ফ্ল্যাট নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। এখন যেসব ৬ তলা ভবন আছে, সেগুলো ভেঙে নতুন করে ১৩ তলা ভবন তৈরি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৮১৬টি ও ১০০০ বর্গফুট আয়তনের ৩৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ হবে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় গণপূর্ত অধিদপ্তর।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় শুধু ১২শ’ ফ্ল্যাট নির্মাণই নয়, যারা এসব ফ্ল্যাটে থাকবেন তাদের জন্য ক্লাব, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, মন্দিরসহ নানা সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় বেজমেন্টসহ ১৭টি ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটবিশিষ্ট ১৩ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এগুলোতে ফ্ল্যাট থাকবে ৮১৬টি। একই সঙ্গে বেজমেন্টসহ আটটি ১০০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটবিশিষ্ট ১৩ তলার ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে ফ্ল্যাট থাকবে ৩৮৪টি। অন্যদিকে একটি ছয়তলা মসজিদ, একটি তিনতলা মন্দির, একটি চারতলা মাল্টিপারপাস ভবন, চারটি গভীর নলকূপ স্থাপন, ভূগর্ভস্থ জলাধার, বিদ্যমান দুটি জলাশয় উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ, ফুটপাত, রাস্তা, সীমানাপ্রাচীর ও লিফটসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

এছাড়া আবাসিক ভবনের বাইরে দুটি চারতলার সার্ভিস ভবন, একটি তিনতলার বোর্ড ক্লাব, একটি তিনতলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি ছয়তলার কমিউনিটি ব্লক নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান. প্রকল্পের আওতায় ব্যয় বিভাজনে ১২ জন কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণ বাবদ রাখা হয়েছে ১ কোটি টাকা। তারা আধুনিক ভবন ব্যবস্থাপনা ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিদেশে ভ্রমণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফ্ল্যাটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৫টি সিসিক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯১৫ জন। তাদের বসবাসের জন্য ফ্ল্যাট রয়েছে ১৩ হাজার ৫২টি, যা মোট চাহিদার আট ভাগ। ফলে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরকারি বাসা না পেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে বেসরকারি বাসায় থাকতে হচ্ছে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে আবাসন সুবিধা বর্তমানে ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করার অনুশাসন দিয়েছিলেন।

এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সব ধরনের আধুনিক সুবিধাসহ বহুতল ভবন নির্মাণেরও নির্দেশ দেন। এসব নির্দেশনা মেনে বিদ্যমান আবাসন সংকট নিরসনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতায় থাকা বিভিন্ন খালি জমিতে এবং আবাসন এলাকায় জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ প্রেক্ষাপটে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের দারুসসালাম রোডের পূর্বপাশে এ-টাইপ কলোনি, তালতলা কলোনি, ওয়ার্কআপ পূর্বপাশ কলোনি এবং ডি-টাইপ কলোনির ৬১টি পুরনো ও জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে ১৮ দশমিক ৩৬ একর জমিতে ২৫টি ভবন নির্মাণের জন্য এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এতদিন এসব ভবনে যারা বসবাস করতেন তারা নতুন ফ্ল্যাট বরাদ্দে অগ্রাধিকার পাবেন।

এতে বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শুধু যে আবাসন সংকট সমাধান হবে তাই নয়, সরকারি জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ও বাড়ানো যাবে। সেই সঙ্গে উপযুক্ত স্বাস্থ্যকর আবাসনের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে উত্তম সেবা আদায় নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা হ্রাস পাবে। এ বিবেচনায় এটি অনুমোদনযোগ্য। আগামী একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877