বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার আহ্বান

বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার আহ্বান

স্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) রাজনীতিমুক্ত রাখার বিষয়ে আইনি উদ্যোগ নিতে উপাচার্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলমান ঘটনা প্রবাহের জেরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভিসি স্যারের ওপর আস্থা পোষণ করি। তার সদিচ্ছা সবসময় আমাদের পক্ষেই ছিল বলেই আমরা বিশ্বাস করি। গত তিন দিনব্যাপী আন্দোলনের মধ্যে তিনি আমাদের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেন, বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং আমাদের কথা শোনার চেষ্টা করেন। আমরা শিক্ষার্থীরা আমাদের ভিসি স্যারকে এই আর্জি জানাচ্ছি, তিনি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষককে নিয়ে আপামর বুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের যে আকাঙ্ক্ষা, তা সকল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাতে পূরণ করেন।’

বুয়েটের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তির স্থগিতে হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা বুয়েটের শিক্ষার্থীরা দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান ও আস্থা রাখি। বুয়েট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের আগমন এবং শোডাউনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালার লঙ্ঘন বলে মনে করে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদ ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের পর ৯ অক্টোবর বেলা সাড়ে ৩টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে, “অনেক প্রতিষ্ঠানেই তো সংগঠন করা নিষিদ্ধ আছে। বুয়েট যদি মনে করে তারা সেটা নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। এটা তাদের ওপর।” এরই ফলস্বরূপ, বুয়েটের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট প্রশাসন সকল প্রকার সাংগঠনিক রাজনীতি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করেন।’

সব শিক্ষার্থীর মতামত বিচার বিভাগে তুলে ধরতে বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না থাকার আমাদের যে দাবি তার যৌক্তিকতা নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং অটল। যেই ছাত্ররাজনীতি র‌্যাগিং কালচারকে প্রশ্রয় দেয়, ক্ষমতার অপব্যবহারের পথ খুলে দেয়, যার বলি হতে হয় নিরীহ ছাত্রদেরকে তা আমাদের জন্য ভালো কিছু কখনোই বয়ে আনেনি, আনবেও না। এর চরমতম মূল্য হিসেবে আমরা আমাদের কেমিকৌশল ৯৯-এর সাবেকুন্নাহার সনি আপু, যন্ত্রকৌশল ০৯-এর আরিফ রায়হান দ্বীপ ভাই এবং সর্বশেষ তড়িৎকৌশল ১৭-এর আবরার ফাহাদ ভাইকে হারিয়েছি। ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দিতে পারি।’

শিক্ষার্থীদের পাশে শিক্ষকদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আমরা বর্তমান শিক্ষার্থীরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ ভরসা এবং আস্থা রাখি। তাদের কাছ থেকেই আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি, তারাই আমাদের প্রতিটি ক্লাসরুম প্রতিটি ল্যাবের নায়ক। প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, লেকচারার—যারাই আমাদের ক্লাস নিয়েছেন, আমরা গত চার বছরে শিক্ষার্থীরা এমনটা কখনো অনুভব করিনি যে, তারাও চান পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রবেশ করে সেই অন্ধকার দিনগুলো ফিরে আসুক। তারা কখনোই আমাদের অকল্যাণ চাননি, এবং কখনোই চাইবেনও না। তারা সবসময়ই আমাদের সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষেই ছিলেন।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877