বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন

বু‌য়েট ভ‌র্তি পরীক্ষা : অভিভাবক‌দের মু‌খে মু‌খে আবরার হত্যা

বু‌য়েট ভ‌র্তি পরীক্ষা : অভিভাবক‌দের মু‌খে মু‌খে আবরার হত্যা

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ২০১৯-২০২০ সেশ‌নে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাথে আসা অভিভাবকদের মুখে মুখে আলোচনার প্রধান বিষয় আবরার হত্যাকাণ্ড।

অভিভাবকদের অনেকে শেরে বাংলা হল সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ফিরে দেখছেন এবং জানার চেষ্টা করছেন আবরার কীভাবে কোথায় হত্যার শিকার হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থী‌কে পি‌টি‌য়ে মে‌রে ফেলা হ‌লো অথচ তা‌কে কেউ বাঁচা‌তে এগি‌য়ে এলো না কেন- এ‌মন অভিযোগও কর‌ছেন তারা।

পঞ্চগড় থে‌কে আসা সা‌নজিত না‌মের একজন অভিভাবক জানান, আবরার হত্যার বিষয়‌টি শক খাওয়ার ম‌তো। প্রতিটা মেধাবী‌ শিক্ষার্থীর পছ‌ন্দের শী‌র্ষে থা‌কে বুয়েট। সেখা‌নে এমন এক‌টি ঘটনা হ‌বে তা চিন্তাও কর‌তে পার‌ছি না। আবরার হত্যার পর থে‌কে বু‌য়ে‌টের আঙ্ক্ষাটা অনেকাংশে ক‌মে গে‌ছে। ব‌ুয়ে‌টের প্রতি আগে যেমন একটা আস্থা ও আবেদন ছিল সে‌টি এখন আর নেই।

চাপাইনবাবগঞ্জ থে‌কে আসা আব্দুল হক জানান, আবরার হত্যার ঘটনা দুঃখজনক। দে‌শের প্রত্যন্ত এলাকার এক‌টি পরিবারের আশা ছিল, ছে‌লে‌টি আবার মা-বাবার কা‌ছে ফির‌বে। এলাকার লেখাপডা শেষ ক‌রে সে ভাল এক‌টি জায়গায় অবস্থান কর‌তে পারতো। কিন্তু বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান‌টি‌তে যে স্বপ্ন ও আশা নি‌য়ে আবরার এসে‌ছিল সেখা‌নে পৌঁছা‌তে পা‌রে‌নি।

‌তি‌নি বলেন, আমা‌দে‌র বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগু‌লো‌ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী বের হ‌চ্ছে ঠিকই কিন্তু ত‌তো‌দি‌নে তারা ম‌ূল্যবোধ হা‌রি‌য়ে ফেল‌ছে। যারা ভ‌র্তি হন তারা ভালো ও আদর্শবান হ‌য়ে উঠার কথা। কিন্তু তার ভিতরে ভিতরে ছারপোকা থাকায় একটা কালিমা প‌ড়ে যা‌চ্ছে। এক্ষেত্রে ইচ্ছে করলে কেবল সরকারই নজির সৃষ্টি করতে পারবেন। প্রতিটি ক্যাম্পাস‌কে নিরাপদ কর‌তে পার‌বেন।

অপর একজন অভিভাবক সুমন মল্লিক বলেন, আমরা জানতাম বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাসটি ছিল বুয়েট। সেখানে এমন একটি হত্যাকাণ্ড হবে সেটা আমরা ভাবতেও পারিনি। এখন সব সময় আশঙ্কা কাজ করছে, কোন সময় কী হবে আমাদের ছেলে সন্তান নিরাপদ থাকবে কী না!

তিনি আরো বলেন, দেখা যাবে এসব ঘটনার পিছনে পরোক্ষভাবে অনেকাংশে শিক্ষকরাই দা‌য়ি। শিক্ষকরা যদি ছোট-ছোট ঘটনাগুলোর বিচার করতেন, তাহলে পরবর্তীতে আবরার হত্যার মতো ঘটনা ঘটতো না।

মিরপুর থেকে আসা অপর একজন অভিভাবক সালমা আক্তার জানান, আমার ছেলেকে ক্যাম্পাসে দেই নিরাপদে আবার ফিরে পাবো বলে। আমার ছেলেকে পিটিয়ে মারার, পিটিয়ে হত্যা করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? আমরা সন্তানদের পেছনে যে শ্রম দিয়ে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নিয়ে আসি সেখানে আবরা‌রের মতো একজন শিক্ষার্থী অকালে ঝরে যাবে সেটা কোনোদিনই একজন মায়ের পক্ষে, একজন বাবার পক্ষে মেনে নেয়ার মত নয়।

এর আগে ২০১৯-২০২০ সেশ‌নে ভর্তির জন্য ১৬ হাজার ২৮৮টি আবেদন পড়ে। তার মধ্যে থেকে ১২ হাজার ১৬১ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। যার ম‌ধ্যে আট হাজার ৮৯৬ জন ছাত্র ও তিন হাজার ২৬৫ জন ছাত্রী। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের মাধ্যমে মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন এক হাজার ৬০ জন। এর মধ্যে এক হাজার পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ও ৫৫ জন আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন।

ফলাফল প্রকা‌শিত হ‌বে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877