ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস: শিশু-কিশোরদের মধ্যে অ্যাজমার প্রকোপ অন্য যে কোনো রোগের চেয়ে বেশি। আমেরিকায় প্রতি বছর প্রায় ৫ মিলিয়ন শিশু-কিশোর অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ৫ বছরের নিচের শিশুর সংখ্যা ১.৩ বিলিয়ন। ৫ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগে প্রায় অর্ধেক শিশুর মধ্যেই অ্যাজমার লক্ষণ দেখা যায়। অ্যাজমা চিহ্নিত করতে অনেক সময়ই ভুল হতে পারে। ভুলের কারণ একাধিক। যেমন শ্বাসতন্ত্রের আরও বেশ কিছু অসুখের উপসর্গগুলো অ্যাজমার সঙ্গে মিলে যায়। আবার অনেক শিশু কিছুদিন অসুখে ভোগার পরে মধ্যবর্তী কিছুদিন সুস্থ থাকে, ফলে তার কোনো রোগ নেই বলে মনে হয়। শিশুর অ্যালার্জিক অ্যাজমা আছে কথাটির অর্থ হচ্ছে অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলে তার অ্যাজমার উপসর্গগুলো বেড়ে যায়। এ শিশুরা ধুলোর জীবাণু, ছত্রাক, প্রাণীর লোম, আরশোলা প্রভৃতির সংস্পর্শে এলে তাদের অ্যাজমা আরও বেড়ে যায়। বেশি বেশি শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয় এবং বায়ুনালির চারপাশের মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে চেপে বসে নিচের উপসর্গগুলো আছে কিনা লক্ষ্য করুন। যদি থাকে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। লক্ষণগুলোর ধরণ জেনে নিন:Ñ
**একনাগাড়ে কিংবা বিরতি দিয়ে কাশি হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, প্রতিদিন এই উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে।
**আপনার সন্তানের শ্বাস ফেলার সময় শন শন শব্দ বা হুইসেলের মতো শব্দ হচ্ছে কিনা।
**ছোট ছোট এবং দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস। এটি পরিশ্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত নাও হতে পারে।
**বুক চেপে ধরার অনুভূতি।
এছাড়া আরও কিছু উপসর্গ থাকতে পারে, যেমনÑ
**ক্লান্তিজনিত কারণে আপনার সন্তান খেলাধুলা ছেড়ে দিতে পারে। খিটখিটে মেজাজি হয়ে ওঠে।
**বলতে পারে তার বুকের মধ্যে ‘কেমন যেন’ করছে।
**দুগ্ধপোষ্য শিশুদের নিপল চুষতে গিয়ে শ্বাস রোধ হয়, ফলে তারা নিপল চোষে না।
**একটু বড় ছেলেমেয়েরা খেলা ছেড়ে দেয়।
কাদের অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা বেশি?
**যদিও প্রত্যক্ষ কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবু সমীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যাজমা আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের আগে নিচের উপসর্গগুলো দেখা যায়।
**ভাইরাসজনিত সংক্রমণ হলে শ্বাস-প্রশ্বাসে শন শন শব্দ শোনা যায়।
**অ্যালার্জি থাকলে। অ্যাজমা ও অ্যালার্জির মধ্যে খুব গভীর সম্পর্ক।
**পরিবারে যদি অ্যাজমা ও অ্যালার্জির পূর্ব ইতিহাস থাকে।
**শিশু যদি তামাকের ধোঁয়া ও অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসে।
দুইজন অ্যাজমার রোগী কখনোই হুবহু একই উপসর্গ নিয়ে আসে না। অ্যাজমা খুবই ব্যক্তিকেন্দ্রিক রোগ। কাজেই আপনার শিশুর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।