স্বদেশ ডেস্ক:
লোহিত সাগরে একাধিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। প্রথমে ইসরায়েল অভিমুখী কোনো জাহাজ দেখলেই ড্রোন কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করছিল তারা। সর্বশেষ হামলার শিকার হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান অভিমুখী জাহাজও। এমন অবস্থায় এই রুট এড়িয়ে চলতে চাইছে জাহাজগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায় এই পথ দিয়েই জাহাজ চলাচল করুক। তারা সুরক্ষা দেওয়ারও চেষ্টা করছে। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার হুথিদের নিক্ষেপ করা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে তারা।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ হাজার। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও। অভিযান শুরুর পর থেকে একাধিকবার ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরাও।এরপর থেকে নিয়মিত লোহিত সাগরে ইসরায়েলমুখী জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠী।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র বিমান বাহিনী লেফটেন্যান্ট কর্নেল ব্রায়ান ম্যাকগেরি বলেন, `জাহাজ শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে পেন্টাগন। তাদের আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে।‘
তবে এতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না জাহাজ মালিকারা। বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে যাদের সংযোগ আছে তারা বেশি আতঙ্কে রয়েছেন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এর জ্যেষ্ঠ পরামর্শক মার্ক কানসিয়ান বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতি পুরোপুরি বুঝে উঠতে সময় লাগবে। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে তবে হয়তো জাহাজ আবার চলাচল করতে পারে। কিন্তু তাতে সময় লাগবে।‘
গতকাল বৃহস্পতিবার হুথিদের নিক্ষেপ করা একটি ড্রোন ও জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। দেশটির সামরিক বাহিনী থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সামরিক বিশ্লেষক জিন মোরান বলেন `তারা চারটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তার দাবি, জাহাজ কোম্পানিগুলো মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট থেকে আরও বেশি নিরাপত্তা চায়।
ভৌগলিকভাবে, লোহিত সাগর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। এটি সুয়েজ খালের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরকে ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযুক্ত করে। এই কৌশলগত অবস্থান এটিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে পরিণত করেছে, যা এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে পণ্য ও সম্পদের চলাচল সহজতর করেছে।