স্বদেশ ডেস্ক:
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার নেই, কারণ ওই এলাকায় তাদের অবস্থান দখলদার শক্তি হিসেবে বলে মন্তব্য করেছেন দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের জাতিসঙ্ঘের বিশেষ প্রতিবেদক।
জাতিসঙ্ঘের বিশেষ এই প্রতিবেদকের নাম ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ। যিনি ২০২২ সালের মে মাসে তিন বছরের মেয়াদে এই পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বলেন, আমার বিশ্বাস ৭ অক্টোবর হামাসের বহুমুখী আক্রমণে ইসরাইলের সামরিক প্রতিক্রিয়া কেবল নিজের এলাকা রক্ষার মধ্যে নেই, এটি নাগরিকদের রক্ষার বাইরে চলে গেছে।
‘ফ্র্যাঙ্কলি স্পিকিং’ নামে আরব নিউজের কারেন্ট-অ্যাফেয়ার্স শোতে তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে ইসরাইল যে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছে তা বেশ স্পষ্ট। এটি একটি রাষ্ট্রকে অন্য রাষ্ট্র থেকে আসা আক্রমণ প্রতিহত করার অধিকার দেয়।
তিনি আরো বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অবশ্যই এর তীব্রতা এবং সুযোগের উপর ভিত্তি করে হতে হবে। এবং এটি অবশ্যই সমানুপাতিক হতে হবে।
আলবেনিজ যোগ করেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আইনশাস্ত্র অনুসারে সামরিক দখলের প্রেক্ষাপটে কখনো আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যাবে না। যেখানে ইসরাইল অন্য রাষ্ট্র, অন্য জনগণকে দখল করে আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলছে।
তিনি আরো যোগ করেছেন, এর মানে এই নয় যে- হামাস আক্রমণ করার পর ইসরাইল নিষ্ক্রিয়ভাবে চলে যাবে। ইসরাইলকে অবশ্যয় এর নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং হামাসের সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে হবে। যা করা হয়েছে।
ইতালীয় শিক্ষাবিদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী আলবেনিজ বলেন, ইসরাইলি সামরিক অভিযানের তীব্রতা এবং দ্রুত ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা ২.৩ মিলিয়ন ফিলিস্তিনির ভাগ্য অনিশ্চিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এদিকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। এদের অর্ধেকই শিশু। শনিবার নিহতের সংখ্যা সাত হাজার ৭০৩ বলে জানানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল।
এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। এ সময় ইসরাইল গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করে।
বস্তুত, ১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে।
সূত্র : আরব নিউজ