বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ০৩:০০ অপরাহ্ন

উত্তরের খোঁজে এসে নতুন প্রশ্নের মুখে সাকিব

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩

স্বদেশ ডেস্ক:

সাকিব আল হাসান মুম্বাই থেকে ঢাকা গেছেন। আর সেই খবরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া—অধিনায়ক আবার কোনো শোরুম উদ্বোধনে এলেন না তো! না, গতকাল পর্যন্ত খবর, ব্যাটিং সরগর করতে পুরনো গুরুর সাহচর্য পেতে দুই দিনের জন্য ঢাকায় গেছেন সাকিব। যদিও ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশ দল জানত ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়ে ঢাকায় গেছেন অধিনায়ক। গতকাল কলকাতায় দলের সঙ্গে অবস্থানরত টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ এমনটাই জানিয়েছেন।

ঢাকায় ফিরে মিরপুরে কোচ ও ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন সাকিব, বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছেন খালেদ মাহমুদ, ‘তাই নাকি? তাহলে এই বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। যেহেতু ভালো ব্যাটিং করছে না, তাই ফাহিম ভাইয়ের কাছে গিয়ে থাকতে পারে। আমাদের তা জানা নেই। আজ (গতকাল) ভ্রমণ ও বিশ্রামের দিন।

আগামীকালও ঐচ্ছিক অনুশীলন। তাই ওকে (সাকিবকে) দুই দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। কোচ (চন্দিকা হাতুরাসিংহে) ছুটি দিয়েছেন। ও বলেছে যে ব্যক্তিগত কারণে ওকে একটু ঢাকায় যেতে হবে।
আমরা ব্যক্তিগত কারণ বলেই জানি।’তো, ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরেই মিরপুরে ছুটে গেছেন সাকিব আল হাসান। সেই থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নাজমুল আবেদীন ফাহিমের ফোন। ক্রমাগত বেজে চললেও ধরতে পারছিলেন না। ওই সময় যে শিষ্য সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং-বোলিংয়ের ‘ফাইন টিউন’ করছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে তিন ঘণ্টার একটি সেশন শেষ করে তবেই ফোন ধরতে পারলেন বাংলাদেশ অধিনায়কের ক্রিকেট গুরু।

মুম্বাই থেকে আজ দুপুরে বাংলাদেশ দল কলকাতার ফ্লাইট ধরলেও সাকিব চড়ে বসেন ঢাকার উড়ানে। দেশে ফিরে সোজা চলে যান মিরপুরের ইনডোরে। সেখানে ছোটবেলার কোচের সঙ্গে একান্তে ছোটখাটো ত্রুটি সারাইয়ে মগ্ন হয়ে যান এই অলরাউন্ডার। সেই সেশন শেষ হওয়ার পর কলকাতা থেকে ফোনে পাওয়া যায় ফাহিমকে। তিনি জানান, দু-এক দিন আগে থেকেই সাকিবের সঙ্গে এমন নিবিড়ভাবে কাজ করার বিষয়ে যোগাযোগ চলছিল তাঁর। দুজনের আলাপেই ঠিক হয়ে যায় তাঁদের আগামী কয়েক দিনের সূচি।

প্রথম দিন তিন ঘণ্টার হলেও পরের দুই দিনে আরো লম্বা সময় ধরেই তাঁরা কাজ করবেন বলে জানিয়ে ফাহিম বললেন, ‘আজ তো তিন ঘণ্টার সেশন হলো। আগামী দুই দিন পুরো দিনই আমরা কাজ করব। এরপর সে নেদারল্যান্ডস ম্যাচ খেলতে কলকাতায় যাবে।’

ঠিক কোন সমস্যা নিয়ে কাজ হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে মুখ খুলতে চাইলেন না বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা ফাহিম। শুধু এটুকুই বললেন, ‘আজ তিন ঘণ্টা অনুশীলনের পর সাকিবকে অনেক ভালো দেখাচ্ছে। আশা করি, সামনে ওর কাছ থেকে ভালো কিছুই দেখবেন। এবং বাংলাদেশও ম্যাচ জিতবে।’ সেই আশায় আছে বাংলাদেশ দলের সমর্থকরাও।

কিন্তু বিশ্বকাপের মাঝপথে দল ছেড়ে সাকিব আল হাসানের দেশে আসার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদের কার্যকারিতা নিয়ে। দুঃসময়ে ক্রিকেটারদের পুরনো গুরুর কাছে ফিরে যাওয়া অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। তবে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি আসরের মাঝখানে সাকিবের এভাবে ঢাকায় ঝটিকা সফরে আসায় প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ কী কাজ করছেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদ বলেন, “এভাবে কেউ দেখতেই পারে। আমি অবশ্য জানি না যে সে ঢাকায় এলেও অনুশীলন করছে কি করছে না। ও অবশ্য আমাকে কয়েক দিন ধরেই বলছিল, ‘ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না। ব্যাটিংয়ের সময় মাথা নড়ছে। তা ছাড়া মানসিকভাবেও আপসেট আছি। ভালোও খেলছি না। দুই দিনের জন্য ঢাকায় গেলে ভালো হয়।’ আমি ওকে বলেছি, কোচ যদি ছুটি দেন, তাহলে যাও। তা ছাড়া সাকিব তো বাচ্চা ছেলে না। আমরাও অনূর্ধ্ব-১৯ দল চালাচ্ছি না। সাকিব সবচেয়ে পরিণত ছেলে। আর ও যদি ঢাকায় গিয়ে মনে করে, অনুশীলন করা দরকার, সেটা ভালোর জন্যই করেছে। ও ব্যর্থ হচ্ছে কেন, সেটা খোঁজার চেষ্টা করে থাকলে দলের তাতে কোনো সমস্যা নেই।”

যদিও খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিশ্বকাপের মতো আসর থেকে কোনো অধিনায়ক তো বটেই, কোনো খেলোয়াড়েরও ছুটি নেওয়ার ইতিহাস নেই। কিন্তু ছুটি পেয়েছেন সাকিব, যে ছুটির ঠিকঠাক কারণটাই জানে না টিম ম্যানেজমেন্ট!

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ