শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাঞ্ছারামপুরে ট্রিপল মার্ডার রহস্য উন্মোচন, ভাগ্নিজামাই আটক

বাঞ্ছারামপুরে ট্রিপল মার্ডার রহস্য উন্মোচন, ভাগ্নিজামাই আটক

স্বদেশ ডেস্ক:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বসতঘরে ঢুকে এক গৃহবধু ও তার দুই শিশুসন্তানকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় ভাগ্নিজামাই জহিরুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহত গৃহবধু জেকির বাবা আবুল হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন এবং ওই দিন রাতেই তাকে আটক করে।

হত্যাকারী জহিরুল ইসলাম নরসিংদীর মাধবদীর আলগী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

সূত্রে জানা যায়, জেকি আক্তার ও তার দুই সন্তান খুন হওয়ার রাতে তার বাসায় আসেন বড় বোনের মেয়ের জামাই জহিরুল ইসলাম। এই খবর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জেকি তার বোন শিল্পী বেগম ও ভাগনী আনিকাকে জানালে তারা ফোনে পাল্টা জেকিকে বলেন, তাকে (জহিরুল) এখনই তোমার বাড়ি থেকে বের করে দাও। তাদের কথা মতো তাকে (জহিরুল) তার বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলার পরও তিনি বাসা থেকে বের না হওয়াতে জেকি তাকে গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে জহিরুল রান্না ঘর থেকে বটি এনে কুপিয়ে হত্যা করে তাকে (জেকি)। পরে এই দৃশ্য দেখে ফেলায় একে একে তার দুই সন্তান মাহিন (১৪) ও মহিনকে (৭) হত্যা করে। পরে দালানের বাহিরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান জহিরুল। ওই সময় পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকায় প্রানে বেঁচে যায় জেকির সাত মাসের এক কন্যা সন্তান ওজিহা।

সূত্রে আরো জানা যায়, খুন করে ভোরে কড়ইকান্দি ফেরিঘাট পার হয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আনিকা কৌশলে তাকে (জহিরুল) খবর দিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে রুমের বাহিরে তালা লাগিয়ে দেয়। হত্যার আগে জেকি তার মোবাইল ফোন দিয়ে বড় বোন ও ভাগনির (হত্যাকারীর স্ত্রী আনিকার) সাথে কথা বলেছিল, ওই কথার সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে এবং জহিরুল তার শ্বশুর বাড়িতে আটক রয়েছে এই খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ তাকে (জহিরুল) গ্রেফতার করে।

নিহতের ভাই শামীম আহমেদ বলেন, জহিরুল আমার বড় বোন শিল্পীর মেয়ে আনিকা আক্তারের স্বামী। আমার ভাগ্নীর বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে সমস্যা হওয়ার কারণে আনিকা প্রায়ই চর ছয়ানী গ্রামে আমার বোনের বাড়িতে থাকত। জহিরুল এ বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করত। সোমবার সকালে আমার বোন জেকির গ্রামের বাড়িতে আসে এবং নাস্তা খেয়ে চলে যায়। আবার সে রাত ৮টার দিকে আসে। সে এসেছে এ বিষয়টি তার শাশুড়ি ও বউকে জানাতে বারণ করে।

তিনি আরো বলেন, জেকি বিষয়টি আমার বড় বোন ও ভাগ্নীকে জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। স্ত্রী ও দুই সন্তানের হত্যার খবরে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলম।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাতে চর ছয়আনী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার ও তার দুই সন্তানকে ঘরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানাজানি হয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম জানান, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জহিরুল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং আমাদের তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। বুধবার সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877