স্বদেশ ডেস্ক:
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা কাসসম বিগ্রেড জানিয়েছে, তারা গাজায় ইসরাইলের স্থল হামলা মোকাবেলা করতে সক্ষম।
এক ভিডিও বার্তায় হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেন, ‘আল্লাহর সাহায্যে আমরা আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টি আবারো আশ্বস্ত করছি। আর স্থলভাগ দিয়ে শত্রুর আগ্রাসন বাড়ানোর বিষয়টির ফলে আমাদের নতুন বিকল্প গ্রহণের দিকে চালিত করেছে। আর তা শত্রুর ওপ ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হবে।’
তিনি আরো বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের সামরিক কাঠামোগত শক্তি একটি ‘কার্যকর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা’, যা ইসরাইল আগে কখনো দেখেনি।
ইসরাই এখন গাজা সীমান্তে সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করছে। এখন পর্যন্ত ইসরাইল গাজার ওপর বিরামহীনভাবে বোমা বর্ষণ করে যাচ্ছে।
অনেকেই আশঙ্কা করছে, ইসরাইল গাজায় স্থল হামলা চালাবে। ইতোমধ্যেই গাজায় জ্বালানি, খাদ্য, পানি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। উপত্যকাটিকে তারা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
ইসরাইলকে ইরানের হুঁশিয়ারি
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, ইসরাইল যদি গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত রাখে, তবে যুদ্ধ ‘অন্য ফ্রন্টগুলোতে’ শুরু হয়ে যেতে পারে। তিনি দৃশ্যত লেবাননের হিজবুল্লাহ গ্রুপের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান বৃহস্পতিবার বৈরুতে অবতরণ করেন। তাকে সেখানে হামাস, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ এবং লেবাননি কর্মকর্তারা শুভেচ্ছা জানান।
বৈরুতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘অব্যাহত আগ্রাসন, যুদ্ধাপরাধ এবং গাজা অবরোধের প্রেক্ষাপটে অন্য ফ্রন্টগুলোর শুরু হওয়া বাস্তবেই সম্ভব।’
হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান এর আগে ইরাক সফর করেন। আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসেবে তিনি এরপর সিরিয়া যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরাইলের সাথে হিজবুল্লাহর উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি লেবানন সফর করছেন। উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহ ঐতিহ্যগতভাবে ইরানের মিত্র।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের হামলার পর ইরানের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফিলিস্তিনের হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে ইসরাইলে হামাসের হামলার সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইরান।
শনিবারের হামলার পর ইরানের টেলিভিশনে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি বলেছেন, ‘এই বিপর্যয়ের জন্য ইহুদিবাদী শাসকদের নিজস্ব কর্মকাণ্ড দায়ী।’
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে তিনি বলেছেন : ‘যারা ইহুদিবাদী শাসকদের উপর হামলার পরিকল্পনা করেছে আমরা তাদের হাতে চুম্বন করি।’
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান সাম্প্রতিক এই সহিংসতাকে ‘বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা অপরাধ আর হত্যার সমুচিত প্রতিক্রিয়া’ বলে আখ্যা দিয়ে শনিবার তার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে এই ঘটনাকে ‘ফিলিস্তিনি সেনা ও সব ফিলিস্তিনি দলের বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এরপর ১১ অক্টোবর রাইসি ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে টেলিফোনে ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে আলোচনা হয়। তেহরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি এবং অন্যান্য