শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা বাড়ছে

পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা বাড়ছে

স্বদেশ ডেস্ক:

অন্নদা রায়ের বয়স যখন মাত্র ১১ মাস, তখন তার মা-বাবা বাংলাদেশের রংপুরে তাদের পৈত্রিক আবাস ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নেন।

সে বছরটি ছিল ১৯৮১ সাল। পরিবারটি দাবি করে যে, “মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে সেসময় বসবাসে স্বাচ্ছন্দ্য-বোধ না করার কারণে বাঙালি হিন্দু হিসেবে ভারতে পাড়ি জমান তারা।”

পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে আসার পর ৩৮ বছর কেটে গেছে, অন্নদার মা-বাবা আর বড় ভাই তাদের ভাষায় “সেই অশুভ পদক্ষেপকে” এখন অভিসম্পাত করেন।

২০ সেপ্টেম্বর, বাড়ি থেকে কাছেই একটি রেল ক্রসিংয়ের পিলারে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় অন্নদার মরদেহ। ভারতে তিন দশক বসবাসের পরও নাগরিকত্ব প্রমাণের কোনো নথি যোগাড় করতে না পেরে, হতাশ এবং দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে, আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন এই হতভাগ্য মানুষটি।

“যখন থেকে আসামে অবৈধ নাগরিক সনাক্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তখন থেকে আমাদের পরিবার প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। যদিও আমাদের ভারতে ভোট দেয়ার অধিকার রয়েছে, আমাদের কখনোই কোনো জমি কিংবা কোন নথি ছিল না। এ নিয়ে অন্নদা বেশ চিন্তিত ছিল এবং বলতো যে আমাদের হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে,” বলেন বড় ভাই দক্ষদা রায়।

কিছুদিন পরে, অন্নদার গ্রাম থেকে প্রায় ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে, আরেকজন লোক রাতে খাবারের সময় তার স্ত্রীকে বলেন, “বাবার জমির মালিকানার দলিল পুনরুদ্ধার করতে পারিনি। আমাদেরকে হয়তো গ্রেফতার করে বন্দীশিবিরে রাখা হবে। শুধু ওই দলিলেই একমাত্র কোনো বানান ভুল ছাড়া পারিবারিক উপাধির উল্লেখ থাকার সম্ভাবনা আছে।”

৩৬ বছর বয়সী কামাল হোসাইন মণ্ডল পেশায় ইঁট ভাঁটার একজন শ্রমিক। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সোলাদানা গ্রামে বাস করতেন তিনি। ১৯৪৭ এবং ১৯৭১ সালে এই জেলাতে বাংলাদেশ থেকে বহু হিন্দু এবং মুসলিম অভিবাসী এসে আশ্রয় নিয়েছে। কামাল গর্বের সাথে নিজেকে একজন ইউটিউবের সংবাদ আসক্ত হিসেবে দাবি করতেন। নিজের সদ্য কেনা স্মার্ট ফোনে সংবাদ দেখতেন তিনি।

“এনআরসি’র সম্ভাব্যতা” নিয়ে একের পর এক সংবাদ তাকে এতো বেশি হতাশ করে তোলে যে পরের দিন সকালে আত্মহত্যা করেন তিনি, পুলিশের কাছে করা অভিযোগে এমনটা জানায় তার পরিবারের সদস্যরা।

কামালের পূর্ব-পুরুষরাও একই গ্রামে বাস করতো। তবে তার বাবা তাদের সর্বশেষ জমিটুকুও বিক্রি করে দেয়ার পর তিন ছেলের কাছে এই স্থানান্তর প্রমাণের আর কোনো নথি অবশিষ্ট থাকেনি। সরকারি দফতরের বার বার যাওয়া-আসা করার পরও সরকারি পরিচয়পত্রে পরিবারটির নামের মাঝের অংশটি সংশোধন করায় কোন সহায়তা মেলেনি।

“আমার স্বামী এদিক-সেদিক অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছে, কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি। আমি তাকে শান্ত হতে বলতাম। ভারতে আমরা সুরক্ষিত বলেও তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু সে কিছুই শুনতে চাইতো না। নিজের বাবাকে কবর দেয়ার পর আমার দুই ছেলে ভালোভাবে খায়ও না, ঘুমায়ও না,” ছোট ছেলের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে এসব বলছিলেন ২৭ বছর বয়সী কহিরুন নাহার।

রাজ্যকে “অবৈধ নাগরিক” মুক্ত করার লক্ষ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের ১৯ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব সম্প্রতি বাতিল করা হয়েছে।

বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে আত্মহত্যা করেছে, স্বজন এবং অধিকারকর্মীরা বলছেন।

আতঙ্ক এবং উদ্বেগ

পার্শ্ববর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে আতঙ্ক চোখে পড়ার মতো।

ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান অমিত শাহ-সহ এর শীর্ষ নেতারা এবছর নির্বাচনে জয়ের পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে দেশব্যাপী এনআরসি কার্যকরের পক্ষে জোরালো মত দিচ্ছেন।

অমিত শাহ, যিনি অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের “ঘুণ পোকার” সাথে তুলনা করেছেন তিনি পার্লামেন্টে এক ঘোষণায় বলেন, “দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের উৎখাত করা হবে।”

এনআরসি নিয়ে দলীয় নেতাদের এই অতি আবেগে কারণে, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এনআরসি’র জোয়ারে যোগ দেয়ার বিরোধিতা করেছেন।

আসামের বাইরেও এনআরসি বাস্তবায়ন ছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব বিলে সংশোধন আনার চেষ্টা করছে। নতুন এই আইনে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম অভিবাসীদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ করা হতে পারে।

প্রস্তাবিত আইনটি এখনো পার্লামেন্টে পাস হয়নি। কিন্তু মুসলিমদের বাদ দেয়ার কারণে এটিকে অনেকে “বিভক্তিমূলক” বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ, মুসলিমদের বাদ দেয়া হলেও হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে অভিবাসন করেছে কিংবা ভারতে থাকার সময় যাদের নথির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

বিলের পক্ষে সমর্থনকারীরা বলেন, নতুন আইন থেকে মুসলিমদের বাদ দেয়া হয়েছে কারণ প্রতিবেশী দেশে যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে হত্যার শিকার হওয়ায় হুমকি থেকে পালিয়ে এসেছে শুধুমাত্র তাদেরকেই ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় রয়েছে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) যা কিনা নয়া দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি’র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।

যেখানে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় অনুষঙ্গকে কাজে লাগিয়ে তুমুল প্রচারণার মুখে নির্বাচনে মোটামুটি অবস্থান তৈরি করেছে বিজেপি, তারা দাবি করেছে যে, “আসামে এনআরসি সফল হয়েছে” এবং তারা আরো উন্নয়নেরও আশ্বাস দিয়েছে। সেখানে এমন অবস্থাতেও রাজনৈতিক সেই ঝটিকা অভিযান সামলে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা ব্যানার্জি।

তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির মতো যেকোনো পদক্ষেপ রুখবে তার সরকার। “আসামে এনআরসি বাস্তবায়ন” নিয়ে আলোচনা করতে সম্প্রতি মমতা ব্যানার্জি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে দেখা করেছেন।

আসামের মতো এনআরসি কার্যকর নিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গে আধা ডজনের মতো আত্মহত্যার ঘটনার ঘটলে বাসিন্দাদের ভয় দূর করতে গত সপ্তাহে এক ভিডিও বার্তা প্রচার করেন মমতা ব্যানার্জি।

“গুজব ছড়িয়ে পড়েছে কারণ সব রাজ্যেই প্রতি ১০ বছরে এক বার করে জরিপ চালানো হয়, এবং এজন্য অনেক সময় রেশন কার্ড দরকার হয়। দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন যে জরিপ কি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগে কারণ এর মাধ্যমে রাজ্যের সব মানুষকে গণনা করা হয়,” সেই ভিডিওতে এসব কথা বলেন মমতা ব্যানার্জি।

মিস ব্যানার্জি আরো বিস্তারিত বলেন যে, “এটা এনআরসি সংশ্লিষ্ট নয়। এটা ধর্ম কিংবা বর্ণ সম্পর্কিতও নয়। এটা ভোটার তালিকা তৈরির জন্য করা হয়েছে, তাই অনেক সময় জিজ্ঞাসা করা হতে পারে যে, পরিবারের লোকের পেশা কি। জরিপের কর্মকর্তারা আপনার বাড়িতে গেলে, দয়া করে জেনে রাখবেন যে, এটা রাজ্যের রেকর্ড রাখার জন্য করা হচ্ছে, আর কিছু নয়।”

রাজ্যের ভোটার এবং নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয় যাতে তারা সরকারের কল্যাণ প্রকল্পের আওতাধীন হতে পারে তারাও পরোক্ষভাবে নাগরিক সনাক্তকরণের এই গুজব ছড়ানোতে সহায়তা করেছে।

পিতামাতার ও নিজের জন্মের বিস্তারিত তথ্য নতুনভাবে নিবন্ধিত কিংবা যাচাই করতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দা পশ্চিমবঙ্গের সরকারী দফতরের বাইরে প্রতিদিনই ভিড় করছেন।

অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরীর মতো রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, “এই সময়ে জরিপ চালানো এমনকি সেটা ভিন্ন উদ্দেশ্যে হলেও খুব খারাপ হয়েছে এবং এনআরসির নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য এক্ষেত্রে খুব একটা সহায়তা করতে পারেনি।”

“বাংলা- সেটা পূর্ব (এক সময়ের পূর্ব পাকিস্তান যা এখন বাংলাদেশ) কিংবা পশ্চিম বাংলায় (ভারতের বাংলা) অভিবাসনের একটা দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে আনুমানিক এক কোটি মানুষ ভারতে এসেছে এবং এর চেয়ে কিছু কম সংখ্যক মানুষ পূর্বাঞ্চলে গিয়েছে। ১৯৭১ সালের আন্দোলন এবং বাংলাদেশের জন্মের সময়, অভিবাসন শুরু হয়ে পরবর্তী কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। এখন এদের মধ্যে আপনি কাকে বৈধ আর কাকে অবৈধ বলবেন? এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কখন থেকে ভোটাধিকার পেলো সেটা সম্পর্কে জানারও কোনো সুনির্দিষ্ট উপায় নেই,” অধ্যাপক চৌধুরী বলেন।

নাগরিকত্বের প্রমাণ

পশ্চিমবঙ্গে, হিন্দু এবং মুসলিম উভয়ের মাঝেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

৬২ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষক প্রতাপ নাথ, বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে বশিরহাট শহরে একটি হিন্দু নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বাস করেন।

একমাত্র বড় বোন ছাড়া যিনি সীমান্তের ওপাশে খুলনায় থাকেন, প্রতাপ নাথের পুরো পরিবার ১৯৬৮ সালে শরণার্থী হিসেবে ভারতে আসে।

“মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, মালদা বা জলপাইগুড়ির মতো সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর ২৫% বাসিন্দা বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের মাধ্যমে এসেছে। এটা হিন্দু কিংবা মুসলিম বলে নয়, বৈধ নথিপত্রের দিক থেকে দেখলেও আমাদের কাছে সবকিছু আছে, তাহলে তারা কীভাবে আমাদের অবৈধ বলে তাড়াতে চায়। আমার প্রতিবেশীর থেকে আমার কাছে একটি কম আছে বলে?” রাগান্বিত হয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করেন।

নয় কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ বৃহৎ জনবহুল রাজ্য যার এক তৃতীয়াংশ জনগণ মুসলিম।

এরআগে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, অবৈধ মুসলিম অভিবাসীদের বিতাড়িত করা হবে, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রস্তাবিত নতুন আইনে অ-মুসলিমদের সুবিধা দেয়ার বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

চলতি বছরের আগস্টে, কিছু মুসলিম সংগঠন প্যামফলেটস বিতরণ, সেমিনার অনুষ্ঠান এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের আহ্বান জানায় যে তারা যাতে তাদের পরিচয়পত্র তৈরি রাখে, এই শঙ্কায় যে, ‘যদি এনআরসি হঠাৎ তাদের উপর চড়াও হয়'”।

“আমার মনে হচ্ছে যে আজ আমি আমার হজ যাত্রা পালন করেছি,” কার্ড পাওয়ার পর আমাকে একথা বলেন তিনি।

একটানা মৌসুমি বৃষ্টি উপেক্ষা করে, মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহ তার নতুন রেশন কার্ড নিতে বারাসতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। রেশন কার্ড সরকারের একটি জনকল্যাণ কর্মসূচী যাতে কম মূল্যে খাদ্য-পণ্য দেয়া হয়।

“আসামে অবৈধ নাগরিকদের জন্য বন্দী শিবির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে, চূড়ান্ত তালিকায় থাকা মুসলিমদের জীবন আর স্বাভাবিক নেই। আমাদের সব নথি অক্ষত রাখতে হবে, অনেকে ভাবতে পারে যে আমাদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ নাগরিক,” এক কাপ চা খেতে খেতে এ কথা বলেন মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহ।

“এনআরসি সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের অনেকের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি করেছে,” একথা স্বীকার করে নিলেও বিজেপির শরণার্থী সেলের প্রধান মোহিত রায় অস্বীকার করেন যে, “এনআরসি-এর আড়ালে তার দল পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় ধারায় রাজনৈতিক মেরুকরণের চেষ্টা করছে।”

“নিজেদের স্বার্থে কিছু সংবাদ মাধ্যম এবং রাজনীতিবিদরা পরিকল্পিতভাবে এই প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গ কিংবা অন্য কোন রাজ্যে আসামের মতো হবে না। যেখানে বহু বছর আন্দোলনের পর, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী সনাক্ত ও তাদের বিতারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

মোহিত রায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বহু বাংলাদেশী মুসলিম রয়েছে এবং তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা শুরু হয়েছে।”

যেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যটিতে যেকোনো ধরণের এনআরসি শুরুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন, সেখানে এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, রাজ্যের প্রত্যন্ত শহর ও গ্রামে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত পরিচয় সনাক্ত করার যে ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল, তা অব্যাহত রয়েছে।

অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী মনে করেন, “অবৈধ নাগরিক সনাক্তকরণের এই পুরো ধারণাটি অযৌক্তিক।”

তিনি নিশ্চিত যে, “বেশিরভাগ বাংলাদেশী অভিবাসীর কাছে আমরা যাকে উত্তরাধিকারের দলিল বলি যেমন- তাদের পিতামাতার জন্ম সনদ, তাদের পূর্বপুরুষের জমির রেকর্ড ইত্যাদি নেই। আর পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে এই ধরণের লাখ লাখ মানুষ রয়েছে।”

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877