স্বদেশ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ‘অ্যাকশনে’ যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় এ কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইশতেহার পড়ে কজন? সেটা খেয়াল রেখে করতে হবে। বুলেট পয়েন্ট দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আনতে হবে। ঢাউস কিতাব বা বিশাল বই পড়ার সময় কারও নেই। সময়ের সঙ্গে বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতে হবে। সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ঢাউস বা মোটা ইশতেহারের দরকার নেই। মোটা পুস্তক প্রণয়নের দরকার নেই। কারণ বেশি কথা পড়ার সময় কম। অল্প কথার মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরও অ্যাকশনে যেতে হবে। এমন ইশতেহার করতে হবে, যাতে নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিষয় ভাবতে হবে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ভাবতে হবে। ২০২৬ সাল, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ- সর্বোপরি ২০৪০ সাল আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নাকি আমাদের তাড়িয়ে দেবে কয়েকদিনের মধ্যে। আমরা অক্টোবরে আছি, আগামী অক্টোবরেও থাকব। কী কারণে ক্ষমতা ছেড়ে দেব?কী কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার পুনর্জীবিত করব? কেন শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হবে? জনগণ তাকে চায়, বিকল্প ভাবে না। সংকটে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো তার সমকক্ষ কেউ নেই। বিশ্ব বিবেকের কাছে প্রশ্ন- তার চেয়ে যোগ্য বিকল্প প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে কেউ আছে?’
নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার আকার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেটা ঠিক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। নির্বাচনকালীন সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক হবে। মেজর পলিসি গ্রহণ করবে না। এটা নতুন কিছু নয়, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। মেজর পলিসি থাকবে না।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিয়মে চলব। আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। সামনের নির্বাচন আমরা ফ্রি, ফেয়ার করব। এর বাইরে আমাদের কোনো চিন্তা নেই। যা করব সংবিধান অনুযায়ী। কে নির্বাচনে এল কে এল না, এটা আমাদের বিষয় নয়। কে কারে নিষেধাজ্ঞা দিল এটা আমাদের বিষয় নয়। আমরা তো নির্বাচন করতে চাই। যারা বাধা দেবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, হুমকি দিন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছেন? দুষ্টুছেলে ইজরায়েলকে থামাতে পারেন না, হাইতির গান ভায়োলেন্স থামাতে পারেন না?’
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিগত সময়ের ইশতেহার মূল্যায়ন করে আগামী নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরি করার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী আওয়ামী লীগমনা সুশীলদের প্রয়োজনে ডাকা হবে। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে, কথা হবে, তাদের মতামত ও সুপারিশ নেওয়া হবে। এছাড়া মিডিয়ার ব্যক্তিদের কাছ থেকেও ইশতেহার করতে বিভিন্ন সুপারিশ নেওয়া হবে ‘
ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্যসচিব ড. সেলিম মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. সাত্তার মন্ডল, ড. বজলুল হক খন্দকার, ড. শামসুল আলম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাকসুদ কামাল প্রমুখ।