স্বদেশ ডেস্ক:
জরুরি অক্সিজেন সাপোর্টের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে ফের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। পরে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল তার সিটি স্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজিসহ ফের কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের প্যারামিটার বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাই বারবারই তাকে নেয়া হচ্ছে সিসিইউতে।
তিনি বলেন, এখন লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া কোনো চিকিৎসা নেই। আর তা দেশে সম্ভব নয়। এই চিকিৎসক বলেন, সিসিইউতে পানি বের করা হয়েছে। লিভার সিরোসিসের কারণেই খালেদা জিয়ার পেটে পানি জমে যাচ্ছে। শরীরে জ্বরও আছে। স্যুপ ও তরল জাতীয় কিছু ছাড়া তিনি তেমন কিছু খেতে পারছেন না। হাসপাতালের বিছানায় সারাক্ষণ থাকছে হচ্ছে ইনজেকশন ও স্যালাইনের ওপর। বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে গত রোববার রাতে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সোমবার বেলা ১১টায় তাকে সিসিইউ থেকে আবার কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ ও লিভার জটিলতায় ভুগছেন। গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ম্যাডামের লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেজন্য তাকে দ্রুত বিদেশে উন্নত মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে পাঠানো দরকার।
দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবি ফখরুলের : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘সঙ্কটজনক’ জানিয়ে দ্রুত তাকে আবার বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে এক সমাবেশে এই দাবি জানান তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া জীবন-মরণ সমস্যা, তখন তাকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। বন্দী রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়ার যদি সুচিকিৎসা না হয়, তাকে যদি বিদেশে পাঠানো না হয় চিকিৎসার জন্য, তাহলে তার শারীরিক অবস্থা আরো অবনতির দিকে যেতে পারে। কারাবন্দীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নজির আছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সব বন্দীকে চিকিৎসা দিতে হবে এবং চিকিৎসার জন্য যদি প্রয়োজন হয় তাকে বিদেশেও পাঠাতে হবে।
রোগমুক্তি কামনায় দোয়া : বিএনপি চেয়ারপারসনের আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমা নয়াপল্টনে জামে মসজিদে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিল হয়। মসজিদ প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিলে অংশ নেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ডা: আবদুল আউয়াল, যুবদল নেতা জাকির হোসেন প্রমুখ। এ দিকে গাজীপুরে জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে পৃথক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।