মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ০২:২১ অপরাহ্ন

চাকরির নামে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে

চাকরির নামে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে

স্বদেশ ডেস্ক: চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক নারীকে ঢাকায় এনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে। ওই নারীর অভিযোগ- শুধু ধর্ষণই নয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন ওসি মাহমুদুল। একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন ওসি।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নারী। আজ সোমবার সকালে তিনি তার অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের আইজিপি’র কাছে দায়ের করা অভিযোগে ওই নারী বলেন, কলেজে পড়ালেখা করা অবস্থায় ওসি মাহমুদুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে ফোনে কথা হতো। এরই সূত্র ধরে গত দুই বছর আগে ওসি মাহমুদুল তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় ডেকে আনেন। তার কথা মতো ওই নারী ঢাকায় আসলে ওসি মাহমুদুল তাকে পল্টনের একটি আবাসিক হোটেলের রুমে নিয়ে যান।

ওই নারীর অভিযোগ, হোটেলে নিয়ে তাকে খাবারের সঙ্গে ‘কিছু মিশিয়ে’ তা খাইয়ে অচেতন করে ফেলেন ওসি মাহমুদুল। এরপর অচেতন অবস্থায় তার সঙ্গে শারীরিকভাবে মিলিত হন তিনি। পরে তার জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি বুঝতে পেরে মাহমুদুল হকের কাছে জানতে চান কেন তিনি এমনটা করলেন।

জবাবে ওসি ওই নারীকে জানান, তিনি তাকে ভালোবাসেন, বিয়ে করতে চান। তবে যেহেতু তিনি বিবাহিত, তার স্ত্রী রয়েছে তাই তার প্রস্তাবে ওই নারী রাজি হবেন না বলেই তিনি পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেন বলে স্বীকার করেন। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় জানিয়ে কোরআন শরীফে হাত রেখে ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি ওসি মাহমুদুল।

ওই নারীর করা অভিযোগে আরও বলা হয়, ওইদিনের পর ওসি মাহমুদুল একাধিকবার তার সঙ্গে ওই হোটেলেই শারীরিক সম্পর্ক করেন।

গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি মাহমুদুলকে জানান। এ সময় তিনি তিনি ওই নারীকে আবারও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গর্ভপাত করতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। পরে ওই নারী বারবার বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে ওসি মাহমুদুল একপর্যায়ে তার সঙ্গে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরে কোনো উপায় না পেয়ে ওই নারী ওসির অফিসে যান, এমনকি মাহমুদুলের বাবার কাছে গিয়েও বিষয়টি জানান। মাহমুদুলের বাবা প্রথমে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি মেনে নেন। পরে তিনি তাকে এবং তার পরিবারকে হুমকি দেওয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।

এক পর্যায়ে গত ২০ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে এই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।

পরে গত মাসের ১ তারিখ আইজিপি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী। ওসির মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি)।

পরে ওসি মাহমুদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেন মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোনালিসা বেগম। তদন্ত শেষে তিনি একটি প্রতিবেদন ডিএমপি সদরদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোনালিসা বেগম বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে ওই নারীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্তটি আমি করেছি। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনটি ডিএমপির হেড কোয়ার্টারের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।’

প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান এডিসি মোনালিসা।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হকের মুঠোফোনে আমাদের সময় অনলাইনের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877