বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ফোর্বসের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা একসময় বিশ্বে রোল মডেল হবে চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখ কোরবানির পশু বেশি আছে : মন্ত্রী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিপির সর্বোচ্চ ৩৮৮০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে এলজিইডি বিদেশী সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দুবাইয়ে বিদেশীদের গোপন সম্পদের পাহাড়, তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশীও সেলিম প্রধানকে জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিলের নির্দেশ বহাল ফের আটকে গেলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থ ছাড় উপজেলা নির্বাচন জনগণের সাথে প্রতারণা করার নির্বাচন : রিজভী মালয়েশিয়ার হুমকি : হামাস নেতাদের সাথে আনোয়ারের ছবি ফেরাল ফেসবুক
ডিজিটাল ভূমি জরিপ যেভাবে হবে

ডিজিটাল ভূমি জরিপ যেভাবে হবে

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল জরিপ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সংসদে মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ডিজিটাল জরিপ কার্যকর হলে পুরনো জরিপ বাতিল হয়ে যাবে।

ডিজিটাল জরিপ কিভাবে হবে? তাছাড়া পুরনো জরিপ বাতিল হয়ে যাওয়ার অর্থ কী?

ভূমিমন্ত্রী দাবি করছেন, ডিজিটাল জরিপ কার্যকর হলে ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা কমে আসবে। ফলে ভূমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা ও হয়রানিও কমবে।

ডিজিটাল পদ্ধতি বা ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ভূমির জরিপ পরিচালনাকে ডিজিটাল সার্ভে বলা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল জরিপের মাধ্যমে খুব সহজেই জমি পরিমাপ করা যাবে এবং একই সাথে জমির মালিকানা ও মাপের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।

এই অঞ্চলে প্রথম ভূমি জরিপ শুরু হয়েছিল ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থেকে। ওই জরিপের নামকরণ করা হয় সিএস জরিপ। ওই জরিপ শেষ হয় ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায়।

এরপর ধাপে ধাপে আরএস, এসএ, পিএস এবং সবশেষ বিএস জরিপ সম্পন্ন হয়। পুরনো পদ্ধতির জরিপে ফিতা টেনে দিয়ে জমির মাপ নিয়ে ম্যাপ তৈরি করা হতো। বেশ কয়েকটি জরিপ পরিচালনার পরও ভূমির জটিলতা কাটেনি।

মঙ্গলবার সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল, ২০২৩’ পাশের আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভে পর্যায়ক্রমে হবে, এগুলো আসবে। আর ইতোমধ্যে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে সব বাতিল। এটা আমি সংসদে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত করতে চাই।’

ফলে চলমান বিএস জরিপ যে অবস্থায় রয়েছে ওই অবস্থাতেই বাতিল হবে কি-না তা মন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়নি।

তবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যখন কোনো জমির ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হবে, তখন আগের জরিপ বাতিল হয়ে যাবে। ডিজিটাল জরিপ হওয়ার আগ পর্যন্ত যে জরিপ চলেছে তা বহাল থাকবে।

ইতোমধ্যে পটুয়াখালী ও বরগুনাতে ডিজিটাল জরিপের পাইলট প্রোগ্রাম চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও ধামরাইয়ে এই ডিজিটাল জরিপের কাজ চলছে বলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

কর্মকর্তারা বলছেন, এটি সফল হলে এই জরিপের ওপর ভিত্তি করে সারাদেশে ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সারাদেশে ডিজিটাল জরিপের সক্ষমতা অর্জনে গত বছর এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিজিটাল সার্ভের উদ্যোগ নেয়া হয়।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত জমির মানচিত্র ও রেকর্ড সমন্বয় করা হবে। এতে ভূমি মালিক ওয়েবসাইটে গেলে ম্যাপ ও খতিয়ান দুটি এক সাথে পেয়ে যাবে। এর জন্য ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে। সকল ডাটা ক্লাউড বেইজ সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে।

জরিপ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড্রোন উড়িয়ে জমির পূর্ণ ছবি ধারণ করা হবে। স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমে জমির অবস্থান ও মাপ নিশ্চিত করা হবে।

স্যাটেলাইট ইমেজ কিনে তা মৌজা ম্যাপের সাথে সমন্বয় করে ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি করা হবে। এর ফলে কৃষিজমি, জলাভূমি, পাহাড় ও বনভূমি রক্ষাসহ জমির পরিকল্পিত ব্যবহার করাও সম্ভব হবে।

এছাড়া ইটিএসয়ের মাধ্যমে জমির নির্ভুল পরিমাপ করতে বা প্লট ভাগ করা হবে। প্লট টু প্লট জরিপ সম্পন্ন হলে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার তথ্যটি সহজেই জানা যাবে।

এ ধরনের জরিপে জমির পরিমাণ, জমির আইলের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, আকার ইত্যাদির পুঙ্খানুপুঙ্খ মাপ সম্পর্কে জানা যাবে এবং পরিমাপে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।

জরিপ অধিদফর বলছে, একবার ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হলে প্রাকৃতিক কারণে বড় ধরনের ভূমির বিচ্যুতি ছাড়া মাঠে গিয়ে বার বার জরিপ করার প্রয়োজন হবে না। একই সাথে অনলাইনে মৌজা ম্যাপ ও খতিয়ান এক সাথে পাওয়া যাবে।

ভূমি জরিপ অধিদফতর আশা করছে, এতে ভূমি ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন হবে, আদালতের মামলা কমবে, সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বর্তমানে ভূমি জরিপ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত কোনো এলাকায় ডিজিটাল জরিপ শুরু করার আগে সেখানকার পত্র পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে না হলে মাইকিং করে এ বিষয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো হয় এবং ব্যাপক জনসংযোগ করা হয়।

এর মাধ্যমে মূলত সেখানকার জমির মালিকদের জানানো হয়। তারা যে নিজ নিজ জমির সীমানা চিহ্নিত করে এবং জমির মালিকানার কাগজপত্র যেমন- দলিল, নামজারি ও খাজনা পরিশোধ কাগজপত্র হালনাগাদ অবস্থায় কাছে রাখেন।

এর মাধ্যমে ওই ব্যক্তির জমির তথ্য যাচাই বাছাই করা হবে। কোনো সমস্যা না থাকলে মালিকানার তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করা হবে।

পুরনো পদ্ধতির জরিপে দেখা যেত একটি খতিয়ানের একাধিক মালিক রয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওই সুযোগ আর থাকছে না।
সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877