বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে রোববার ঢাকায় আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

স্বদেশ ডেস্ক:

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দ্বিপক্ষীয় সফরে রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছালে তাকে লাল গালিচায় স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।

নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঢাকায় আসছেন।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে জি-২০ সফর শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় দেশে ফেরার কথা রয়েছে এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

১৯৯০ সালের ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিত্রান্দের বাংলাদেশ সফরের পর ম্যাক্রোঁই প্রথম নেতা যিনি বাংলাদেশ সফর করছেন।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সাথে একটি শীর্ষ বৈঠক করবেন। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় অতিথির সম্মানে প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন তিনি।

উভয় নেতা কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই এবং একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ম্যাক্রোঁ।

ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস বলেছে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা সম্প্রসারণে উভয় পক্ষের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ দেখে আমরা রোমাঞ্চিত।’

ফ্রান্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর এই সফর দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ হবে।

১৯৯০ সালের শুরু থেকে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে।

বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে এবং ফ্রান্স রপ্তানির ক্ষেত্রে পঞ্চম দেশ।

ফরাসি কোম্পানিগুলো এখন প্রকৌশল, জ্বালানি, মহাকাশ ও পানি খাতসহ বিভিন্ন খাতের সঙ্গে জড়িত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার আন্তরিকভাবে আশা করছে- ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর দু’দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের সাথে থাকবেন ইউরোপ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন শেখ হাসিনা।

ফ্রান্স এই সফরকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গভীর করার সুযোগ হিসেবে দেখছে।

ফরাসি সরকার সোমবার এই সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একই সাথে তারা বলে, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেটি ‘দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং অংশীদারিত্বে বৈচিত্র্য আনতে চায়’।

তারা আরো বলেছে, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দারুণ একতা দেখিয়ে থাকে, বিশেষ করে প্যারিস এজেন্ডা ফর পিপলস অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটের কাঠামোয়। যা বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে।’

যেহেতু বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে, তাই প্রেসিডেন্ট মানবিক দিক বিবেচনায়, বিশেষত নিয়মিত বন্যার সম্মুখীন হওয়ায় দেশটির পাশে দাঁড়াতে ফ্রান্সের দৃঢ় সংকল্পের কথা বলবেন।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংহতি কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী দেশ।

চলতি গ্রীষ্মে প্যারিসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানানো এবং পাপুয়া নিউ গিনি, ভানুয়াতু ও শ্রীলঙ্গা সফরের পর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফরাসি কৌশলের প্রয়োগ বাংলাদেশে অব্যাহত রাখবেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।

বাংলাদেশ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উত্থাপন করবে এবং প্রাসঙ্গিক তহবিলকে ব্যাপকভাবে কার্যকর করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন- এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় সমস্যা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েছেন।’

ফরাসি প্রেসিডেন্টের সোমবার দুপুর ২টায় ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন।

সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ