শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ অপরাহ্ন

দেশান্তরিত সন্ত্রাসীদের ফেরার চেষ্টা

দেশান্তরিত সন্ত্রাসীদের ফেরার চেষ্টা

স্বদেশ ডেস্ক:

পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকেই দেশে ফেরার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে গোপনে দু-একজন ফিরেছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্যে দেশান্তরিত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফেরার বিষয়টি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে খুনসহ মারাত্মক অপরাধ কর্মকাণ্ডে যাদের বিরুদ্ধে অগণিত অভিযোগ রয়েছে তাদের ফিরে আসার গুঞ্জন চরম ভাবনার বিষয় বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের আমলে পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসীও রয়েছেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে ক্যাসিনো, জুয়াসহ অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে ইতোমধ্যে সারা দেশের ক্যাসিনো ও জুয়া আপাতত বন্ধ। ঢাকাসহ বড় বড় শহরের কিছু বার এবং ক্লাবে মদ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে। এর বাইরেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। ওই ক্লাবটির সভাপতি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। ক্লাব থেকে ১৪২ জন নারী-পুরুষকে জুয়া খেলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ওই রাতে ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীস্থ গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব সদস্যরা। ২০ সেপ্টেম্বর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের মোহামেডান, আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালানো হয়।

২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আরামবাগ ক্লাব, মোহামেডান ক্লাব, ভিক্টোরিয়া ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব ও বাড্ডার ইস্টওয়েস্ট ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ওই দিন গুলশানের একটি স্পা সেন্টারেও অভিযান চালানো হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর ফু-ওয়াং ক্লাবে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরা। এর বাইরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীমকে। তার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।

ক্যাসিনোর কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের লোকমান হোসেনকে। ২৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়। যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের আরো বেশ কয়েকজনকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ দিকে দেশে যখন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে ঠিক সে সময়ে দেশান্তরিত কিছু সন্ত্রাসী দেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এরা বিভিন্ন সময়ে দেশ থেকে পালায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর মধ্যে যুবলীগ নেতা মিলকী হত্যার আসামি, মিরপুরের শাহাদাতের সহযোগী সন্ত্রাসী রয়েছে। এ ছাড়া মগবাজার কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী, তেজগাঁও ও কাওরানবাজার কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী ও ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক কিছু সন্ত্রাসী আছে। ক্যাসিনো ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পরই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। অনেকে দেশ ছেড়েছেন। এরই মধ্যে কিছু সন্ত্রাসী আবারো দেশে ফেরার বিষয়টি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। এসব সন্ত্রাসী দেশান্তরিত থাকলেও ঢাকায় তাদের সহযোগী রয়েছে। দেশের বাইরে বসেই তারা ঢাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।

এ দিকে কিছু সন্ত্রাসী দেশে ফিরে এসেছে বা আসার চেষ্টা করছে এমন খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রয়েছে কি না সে সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেলের ডিসি মাসুদুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877