স্বদেশ ডেস্ক:
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জামিন পাওয়া স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি এখন অবস্থান করছেন হবিগঞ্জে মাধবপুর উপজেলায়। মানসিক অবসাদ কাটাতে উপজেলার শাহজিবাজার গ্যাস ফিল্ডে বেড়াতে গেছেন তিনি।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য গতকাল বুধবার ঢাকা থেকে সরাসরি চলে আসেন গ্যাস ফিল্ডে কর্মরত মিন্নির খালাতো বোন জামাইয়ের বাড়িতে।
গতকাল রাতে গ্যাস ফিল্ডের স্টাফ কোয়ার্টারের বাসায় গিয়ে মিন্নির বোন জামাই ও বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে মিন্নির মানসিক অবসাদ কাটাতে তাকে ঘুরতে নিয়ে আসা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্যাস ফিল্ডসংলগ্ন আক্কাছ মিয়ার মালিকানাধীন টিহান কফি হাউজে বেড়াতে যান মিন্নি। সেখানে থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে গ্যাস ফিল্ডের ৬ এবং ৭ নম্বর কূপ এলাকার চা বাগানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। এ সময় মিন্নিকে দেখতে কৌতুহলী এলাকাবাসীর ভিড় জমে যায়।
মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘গতানুগতিক পরিবেশের বাইরে ভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে মানসিক প্রশান্তির জন্য এই ঘুরতে আসা।’
মিন্নি বাবা আরও জানান, আগামী ৩ অক্টোবর বরগুনা আদালতে রিফাত হত্যাকাণ্ডের মামলার চার্জ গঠন করা হবে। এর আগেই তারা এলাকায় ফিরে যাবেন।
তবে জামিনের শর্তে গণমাধ্যমে কথা বলা নিষেধ থাকায় মিন্নির সঙ্গে কোনো কথা বলা যায়নি।
এর আগে গত মঙ্গলবার মিন্নিকে নিয়ে রাজধানীর গুলিস্তানে কেনাকাটা করেন বাবা কিশোর। সেখানে মিন্নিকে দেখতে এবং তার সঙ্গে ছবি তুলতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদেরকে বাধা দিয়েও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় পরে গ্রেপ্তার করা হয় স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে। গ্রেপ্তারের পরই মিন্নি প্রধান সাক্ষী থেকে হন আসামি। পাঁচ দিনের রিমান্ডের মধ্যে দুদিন শেষ হতেই রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
পরে গত ৫ আগস্ট মিন্নির বাবা হাইকোর্টে মিন্নির জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ২০ আগস্ট মিন্নির জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে ২৮ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সিডিসহ হাজির হতে বলেন। সে অনুযায়ী ২৮ আগস্ট শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৯ আগস্ট দুটি শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন।
শর্ত দুটি হচ্ছে, মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলেও মিন্নির জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।