স্বদেশ ডেস্ক:
শুক্রবার ভোরে মস্কোর বাণিজ্যিক এলাকায় একটি ড্রোন হামলা হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনকে হামলার জন্য দায়ী করছে। চলতি বছর এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাবার আশা ছেড়ে দিচ্ছে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার আঁচ আবার খোদ মস্কোয় টের পাওয়া গেলো। শুক্রবার ভোর ৪টা নাগাদ শহরের কেন্দ্রস্থলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা ঘটেছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ বাণিজ্যিক এলাকায় শোনা গেছে। রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ড্রোনটিকে ধ্বংস করার পর ক্রেমলিন থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে এক্সপো সেন্টার নামের মেলা প্রাঙ্গনের এক বহুতলের কাছে ধ্বংসাবশেষ পড়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যে বিস্ফোরণ বেশ শক্তিশালী ছিল। রুশ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে বহুতল ভবনের কাছে কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। ইউক্রেন অবশ্য বিষয়টি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
মস্কো শহরের মেয়র সের্গেই সবিয়ানিন জানিয়েছেন, জরুরি পরিষেবা কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বার্তায় তিনি আরো দাবি করেন, ভবনটিরও তেমন ক্ষতি হয়নি।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা টাস জানিয়েছে, যে এক্সপো সেন্টারের মেলা প্রাঙ্গনে একটি প্যাভিলিয়নের প্রাচীর আংশিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এই ঘটনার জের ধরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়াল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
গত কয়েক মাসে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ও সংলগ্ন এলাকার উপর একাধিক ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স প্রণালী বেশিরভাগ হামলা বানচাল করতে পারলেও মানুষের মনে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে মস্কোর বাণিজ্যিক এলাকার ওপর দুটি হামলা ঘটেছে। ইউক্রেন সরাসরি এমন হামলার দায় স্বীকার না করলেও সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি গত ২০ জুলাই সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, যুদ্ধ রাশিয়ায় প্রবেশ করছে। সে দেশের প্রতীকী কেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটিগুলি লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে।
গত প্রায় ১৭ মাস ধরে রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেন পশ্চিমা বিশ্ব থেকে বিপুল অর্থ ও সামরিক সহায়তা পেলেও ঠিক সময়ে যথেষ্ট শক্তিশালী অস্ত্র ও সরঞ্জামের অভাব নিয়ে জেলেনস্কির সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করছে। যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা এড়াতে ন্যাটো দেশগুলো একাধিক পদক্ষেপ খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যেমন অ্যামেরিকা ও সহযোগী দেশগুলোর কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চাইলেও চলতি বছর সেই বিমান হাতে পাবার আশা ত্যাগ করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মোকাবিলা করতে এই বিমান যথেষ্ট কার্যকর হতে পারে বলে ইউক্রেন দাবি করছে।
বিমান হাতে না পেলেও ইউক্রেনের পাইলট ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরা অদূর ভবিষ্যতে সেই যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ পেতে পারে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের নেতৃত্বে ১১টি ন্যাটো দেশের জোট ইউক্রেনীয় পাইলটদের পশ্চিমা যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ দেবার উদ্যোগ নিচ্ছে। গত মে মাসে জাপানে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে এই উদ্যোগ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ সত্ত্বেও ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। তবে বর্তমানে মার্কিন প্রশাসন ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে