স্বদেশ ডেস্ক:
ঢাকার ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট। এরই মধ্যে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত রোববার নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ। অভিবাসন পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যুবলীগ নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির খোঁজ মিলছে না কোথাও; কার্যালয়েও যাচ্ছেন না, বাড়িতেও পাওয়া যাচ্ছে না।
ধারণা করা হচ্ছে, সম্রাট ছয় দিন ধরে কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে রয়েছেন। অফিস ঘিরে সার্বক্ষণিক যুবলীগ নেতাকর্মীদের ভিড় চোখে পড়ে। সেখানে রান্নার ব্যবস্থা দেখা যায়। এ ছাড়া সম্রাটের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই অফিসে সম্রাট নেই বলেই দাবি করছেন অনেকে।
এদিকে সম্রাটের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। ব্যাংকে তার কী পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে, তার হিসাব পাঁচ দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে বলা হয়, অবৈধ লেনদেন ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয় অনুসন্ধান করতে সম্রাটের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।
গত বুধবার ঢাকার মতিঝিলের ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রে র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
ওইদিনই গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে, পরদিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর গ্রেপ্তার করা হয় ঠিকাদার জি এম শামীমকে, যিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাদের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অসন্তোষ প্রকাশ পাওয়ার পরপরই জুয়ার আখড়া বন্ধে এই অভিযান শুরু হয়। এই অভিযান চালিয়ে যেতে এবং অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অত্যন্ত কঠোর- এই বার্তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে আসার পর আত্মগোপনে গেছেন যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।
সম্রাট ছাড়া অন্যরা হলেন- যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল এবং ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মতিঝিলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদ।