স্বদেশ ডেস্ক:
আগামীকাল রোববার তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তুর্কি ভোটাররা তাদের দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট দিতে যাচ্ছেন। এটি দেশটির ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হবে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পান। অন্যদিকে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীদলীয় নেতা কেমাল কুলুচদারোলু পান মোট ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। এর মাধ্যমে দেশটির ভোটাররা যে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার ব্যাপারে বিভক্ত ছিলেন তা স্পষ্ট।
বিরোধী দু’পক্ষের মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোটের। প্রথম ধাপের নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা উগ্র-জাতীয়তাবাদী প্রার্থী সিনান ওগান অপ্রত্যাশিতভাবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের কেউ ৫০ শতাংশ না পেলে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এরই মধ্যে সিনান ওগান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতি তার সমর্থন জানান। গত ২২ মে সাংবাদিক বৈঠকে সিনান জানান, এমন পরিস্থিতিতে তিনি এরদোয়ানকে সমর্থন করবেন।
এর পরেই বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সিনানের এই বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট, এরদোয়ানের জয় এখন সমযের অপেক্ষা। এতে করে এরদোয়ানের দল আরও শক্তিশালী হবে।
এ ছাড়া ১৪ তারিখের ভোটে এরদোয়ানের একে পার্টি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এ নিয়ে সিনান বলেন, পার্লামেন্টে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে প্রেসিডেন্টও সেই দল থেকেই হওয়া উচিত বলে আমার দল মনে করে। সে কারণেই তিনি এরদোয়ানকে সমর্থন করবেন বলে স্থির করেছেন।
তবে এখন প্রশ্ন উঠেছে তুরস্কের অর্থনীতিতে এক বড় সঙ্কট থাকার পরও কেন বেশিরভাগ ভোটার এরদোয়ানকেই বেছে নিলেন?
গত ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। তাতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে, সেইসময় ভূমিকম্প মোকাবেলায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন এরদোয়ান। তবে এরপরও ভোটাররা এরদোয়ানকে প্রত্যাখ্যান করলেন না।
ইস্তাম্বুলের কাদির হ্যাস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক বলেন, আমি মনে করি তিনি একজন চূড়ান্ত ‘টেফলন রাজনীতিবিদ’ (কোন অভিযোগ যার গায়ে বসতে পারে না)। তার যে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রয়েছে, এটা আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। তার শরীর থেকে ক্ষমতার আভা বের হয়। এটা এমন এক জিনিস যা কুলুচদারোলুর নেই।
তবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কেমাল কুলুচদারোলুর প্রতি সমর্থন রয়েছে ছয়-দলীয় বিরোধী জোটের। তুর্কি জনগণকে তিনি আশার বাণী শুনিয়েছেন, এবং স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।