বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

রক্তাক্ত রিফাতকে হাসপাতালে এনেছিলেন মিন্নি, নতুন ভিডিও প্রকাশ

রক্তাক্ত রিফাতকে হাসপাতালে এনেছিলেন মিন্নি, নতুন ভিডিও প্রকাশ

স্বদেশ ডেস্ক: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের আরেকটি নতুন ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের একটি সিসিটিভিতে ধারণ ১৫ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রক্তাক্ত স্বামীকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে একাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি নিজেই।

ভিডিওটি গত ২৬ জুন সকাল ১০টা ২১ মিনিটে হাসপাতালে স্থাপিত কোনো একটি সিসিটিভিতে ধারণ হয়েছিল।

স্বামীকে নিয়ে মিন্নি যখন হাসপাতালে পৌঁছান, তখন রিফাতকে অচেতন অবস্থায় দেখা গেছে। জরুরি বিভাগের সামনে রিকশাটি থামলে সাদা টি-শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তিকে দৌঁড়ে এসে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে যেতে দেখা যায়। অল্পকিছুক্ষণের মধ্যে একটি স্ট্রেচার নিয়ে আসেন তিনি।

ভিডিওতে মিন্নিকে ভীত অবস্থায় দেখা গেছে। এ সময় আশেপাশে থাকা লোকজন এগিয়ে আসেন। স্ট্রেচার আনার পর রক্তাক্ত-অচেতন রিফাতকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এ সময় মিন্নি হাসপাতালের সামনে থাকা এক ব্যক্তির মোবাইল দিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তিনি হাসপাতালের ভেতরে যান। এর কিছু সময় পর আয়শার বাবা মোজাম্মেল হোসেন ও চাচা আবু সালেহ হাসপাতালে যান।

সিসিটিভি ফুটেজে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের চিত্রে দেখা গেছে, হাসপাতালের সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়ায়। তখন রিফাত শরীফের বন্ধু মঞ্জুরুল আলমসহ কয়েকজন সেখানে আসেন। সে সময় মঞ্জুরুল কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলেন।

সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটের ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, অক্সিজেন ও দুটি স্যালাইন লাগানো অবস্থায় রিফাতকে স্ট্রেচারে করে ওই অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে সেটি বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ত্যাগ করে।

নতুন সিসিটিভির এই ফুটেজটি নিয়ে কথা বলতে গেলে আজ সোমবার রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এটি পুরোনো ঘটনা। আহত রিফাত ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে গিয়ে রিকশায় ওঠেন। পরে মিন্নিও ওই রিকশায় চড়ে তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এতে মিন্নি নির্দোষ এটা প্রমাণিত হয় না।’

এই সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়টি চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন কী না জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ যা কিছু দরকার চার্জশিটে উল্লেখ করেছি। এ ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নেই।’

এ ব্যাপারে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজই নয়, বিষয়টি মিন্নি প্রথম থেকেই আমাদের বলেছেন। তিনি আদালতেও এটি বলেছেন। ভিডিওটি এখনও দেখিনি। এমনকি চার্জশিটের কপিও দেখিনি। তবে তদন্ত কর্মকর্তা যদি চার্জশিটে বিষয়টি উল্লেখ না করে থাকেন, সেটি হবে চরম ভুল।’

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সামনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ও বরগুনা জেলা পুলিশের পৃথক দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। তবে এই ভিডিও কোন ক্যামেরায় ধারণ করা, তা নিশ্চিত নয় ওই সূত্র।

ভিডিওটির ব্যাপারে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের সামনের ভিডিওটি পেয়েছি। আমার মেয়ে যে তার স্বামীকে বাঁচাতে সম্পূর্ণ চেষ্টা করেছে তা ভিডিওতে স্পষ্ট। আমি শুরু থেকেই বলে এসেছি, আমার মেয়ে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। আমার মেয়েকে ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877