স্বদেশ ডেস্ক:

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘সাস্ট’ অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ঈদ পুর্নমিলনী ও সাধারণ সভা ১৪ মে রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিউইর্য়ক সিটির এস্টোরিয়ায় অবস্থিত জালালাবাদ ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নিউইর্য়ক ও নিউজার্সী স্টেটের বিভিন্ন পেশায় কর্মরত প্রায় অর্ধশতাধিক বাংলাদেশী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিচারণসহ সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র ও অতিথি শিক্ষকবৃন্দদের আলাপচারিতায় মুখর হয়ে উঠে পুরো অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল পরিচিতি পর্ব ও সাধারণ সভা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফরিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রসায়ন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী বেলায়েত চৌধুরী । সভাপতির বক্তব্যে ফরিদ আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সাস্টিয়ানদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাস্টিয়ানদের হৃদয়ে লালিত স্বপ্ন সাস্ট অ্যালামনাই অব ইউএসএ আজ বাস্তবায়িত হতে চলেছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র এবং জুনিয়র, ব্যাচমেটসহ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমাদের সাস্টিয়ান বন্ধনকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে যা পরবর্তীতে সবার কাছে একটি রোল মডেল হিসেবে গড়ে উঠুক এটা সবার প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এ.এইচ.এম বেলায়েত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকদের দ্বারা একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত শিক্ষাকে পেশাগত জীবনে শতভাগ কাজে লাগাতে সক্ষম। যার প্রতিফলন শিক্ষার্থীরা দেশের গন্ডি পেরিয়ে উন্নত বিশ্বে গড়ে তুলছেন তাদের কাংখিত ক্যারিয়ার’।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বর্তমানে এনওয়াইপিডির ক্রিমিনাল জাস্টিস ব্যুরোতে কর্মরত ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও পলিমার সায়েন্সের দ্বিতীয় ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী লেফট্যানেন্ট সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রোলিয়ার মত উন্নত দেশে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় সুযোগ লাভের পাশাপাশি নিউইর্য়ক পুলিশ বিভাগ, আই.বি.এম, গুগল, আমাজনের মত বিশ্বের নামকরা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি লাভের ক্ষেত্রে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা অন্যান্যদের তুলনায় বেশ এগিয়ে রয়েছে।

এছাড়া বিশেষ অতিথিবৃন্দগণ আমেরিকায় অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতি শাবিপ্রবিতে অধ্যয়নরত মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপ প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনুদানে এগিয়ে আসার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের মতামতের উপর ভিত্তি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সিলেকশন বোর্ড গঠিত হয়। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এই সিলেকশন বোর্ড ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কার্যনির্বাহী ও ৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্ঠা কমিটি গঠনে কাজ করবে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নৈশ ভোজনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাসুদ আলম, বেলায়েত চৌধুরী, মোঃ ফখরুল ইসলাম, সায়েদ জাবেদুর মুনির, আহমেদুর রহমান রণি, অসীম কুমার সরকার, আলমগীর হোসেন, মাহবুব আহমেদ মাসুম, আজহার আহমেদ, মো: মইনুল হোসেন বাবু, কাজী লিমন, মিসকাত জাহান, ফারহানা ইসলাম, দীপঙ্কর দাস দীপন, শাকির হোসেন, তাসফীক রহমান, মৌসুমী কাপালী, মোঃ জাবেদুল হক, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, রাজেশ শাহা, ওবাইদুর রহমান, রিয়াদুল ইসলাম, শোয়েব চৌধুরী, আতাউল গণি আসাদ, মোঃ সাদিকুর রহমান সুফিয়ান, টিপু, আহমেদ ফাহাদ ও প্রদীপ্তা রায় প্রমুখ।

সভা শেষে আহবায়ক মোহাম্মদ ফরিদ আলম অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এই ধরনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনে সাস্টিয়ানদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।