স্বদেশ ডেস্ক:
ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহের আঁচলে ঠাঁই চাইলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। আজ সোমবার নিজের ফেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে নিজের ভুলত্রুটির জন্য অনুতপ্ত বলে জানান তিনি। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছেও ক্ষমা চান রাব্বানী।
ছাত্রলীগের পদ হারানোর পর এই প্রথম স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাব্বানী। ফেসবুকে দেওয়া তার স্ট্যাটাসটি দৈনিক আমাদের সময়ের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘মমতাময়ী নেত্রী, আপনার মনে কষ্ট দিয়েছি, আমি অনুতপ্ত, ক্ষমাপ্রার্থী। প্রিয় অগ্রজ ও অনুজ, আপনাদের প্রত্যাশা-প্রাপ্তির পুরো মেলবন্ধন ঘটাতে পারিনি বলে আপনাদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী।
মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমিও ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নই। তবে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে আবেগ-ভালোবাসার এই প্রাণের সংগঠনের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী ‘গর্হিত কোনো অপরাধ’ করিনি। আনিত অভিযোগের কতটা ষড়যন্ত্রমূলক আর অতিরঞ্জিত, সময় ঠিক বলে দেবে।
প্রাণপ্রিয় আপা, আপনি আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবের সুযোগ্য তনয়া, ১৮ কোটি মানুষের আশার বাঁতিঘর। আপনার দিগন্ত বিস্তৃত স্নেহের আঁচল, এক কোণে যেন ঠাঁই পাই। আপনার ক্ষমা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বাকিটা জীবন চলতে চাই।’
রাব্বানীর এই স্ট্যাটাসটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। স্ট্যাটাসটিতে দুই ঘণ্টায় ১৩ হাজারের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী লাইক দিয়েছেন। শেয়ার দিয়েছেন ৭৮৬ জন। আর স্ট্যাটাসের নিচে মন্তব্য করেছেন ২ হাজার ৬০০ জন।
কমেন্টে রাব্বানীর প্রতি সহমর্মিতাও প্রকাশ করতে দেখা গেছে অনেককে। কামাল রোহানী নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে কমেন্ট করা হয়েছে, ‘বন্ধু টেনশন করিস না। জীবন চলার পথে এ রকম ঝড় আসে। সব কিছু সতর্কতার সহিত মোকাবেলা কর। তোমার প্রতি ভালোবাসা সবসময় ছিল এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রী নাহিদা চৌধুরী রাকা কমেন্ট করেছেন, ‘আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো ভাই।’
মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘আপনার মা বোন বৌ মেয়েরও মনে হয় একই অবস্থা।’
আতিক রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘আপা বলেছিল, এই দলে আমি ছাড়া সবাই বিক্রি হয়, এখন বুঝি কথাটা আপা কেন বলেছিল। আমি নিশ্চিত আপা নিজে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। কোনো চিন্তা করবেন না ভাই যুগে যুগে দেখেছি একজনকে সেভ করতে গিয়ে অন্যজনকে বলি দিতে হয়, আর আপনাদের বেলায়ও তাই হয়েছে ভাই।’
আল-আমিন রহমান নামে এক ছাত্রলীগ নেতা কমেন্ট করেছেন, ‘আপনার জন্য করুণা হয়, তবুও বলবো ভালো থাকবেন। সদ্য পদত্যাগ করা সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাই। শেখ হাসিনার পালস যারা বোঝে না তাদের আওয়ামী রাজনীতি করার দরকার নাই।’
প্রসঙ্গত, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে শোভন-রাব্বানীকে। তাদের পরিবর্তে সিনিয়র সহসভাপতি আল নাহিয়ান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। গত শনিবার আওয়ামী লীগের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।