স্বদেশ ডেস্ক:
রাজধানীর পাশাপাশি ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এর পেছনে এডিস এলবোপিক্টাস মশার একটি প্রজাতি দায়ী। সম্প্রতি যশোর, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এই মশার কামড়ে ডেঙ্গু হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মারাত্মক আকার নেয় না।
সম্প্রতি কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামের বিপুল সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন হাসপাতালে। এরপরই ঘটনাস্থলে যায় আইইডিসিআর’র একটি প্রতিনিধিদল। বিজ্ঞানী ও গবেষক দল রোগ ও কীটতাত্ত্বিক জরিপ চালান বরিশাল, যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে।
এই জরিপের পর চিকিৎসকরা বলছেন, এলবোপিক্টাস প্রজাতির মশায় ডেঙ্গু হলেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মারাত্মক আকার নেয় না। তারপরও মশা নিধনে গ্রামভিত্তিক প্রকল্পের পরামর্শ দেন তারা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেঙ্গু চিকিৎসা সমন্বয়ক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ডা. এম সজীব উদ্দীন বলেন, ‘দুই প্রজাতির এডিস মশা রয়েছে। তার মধ্যে এডিস এলবোপিক্টাস মশা গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু ছড়াচ্ছে।’
মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে করে এর বৃদ্ধি না ঘটে। ’
তবে সচেতনতা বাড়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন অনেক চিকিৎসক।
এডিস এলবোপিক্টাসের বৈশিষ্ট্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশার এডিস এলবোপিক্টাস মশার কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের মশা ঘরের ভেতরে না, বাইরে থাকে। আর এ কারণেই ঘরের ভেতরে থাকলে এ মশা কামড়ায় না। বাইরে বের হলে কামড়ায়।
এটি যেকোনো জায়গায় স্বচ্ছ পানি পেলেই বংশবৃদ্ধি করে না। বরং এর জন্য বিশেষ ধরনের পরিবেশের দরকার হয়।
এডিস এলবোপিক্টাস যেখানে জন্মায় তার মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে গাছের কোটর। এ ছাড়া বাঁশ কাটার পর সেখানে থেকে যাওয়া গোঁড়ায় যে পানি জমে, সেখানে এলবোপিক্টাস মশা বেশি হয়।
কীটতত্ত্ববিদ বাশার বলেন, ‘কলাগাছের দুটো পাতার মাঝখানে যে পানি জমে, কচু গাছের দুটো পাতার মাঝখানে যে পানি জমে, এগুলোকে আমরা বলি ন্যাচারাল কন্টেইনার। এলবোপিক্টাস জন্মায় ন্যাচারাল কন্টেইনারে।’