মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার আরো ৪

ফরিদপুরে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার আরো ৪

স্বদেশ ডেস্ক:

ফরিদপুরের মধুখালীতে শ্রেণিকক্ষে আটকে বাবা ও ছেলেকে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত আরো চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান সোমবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি গ্রামের আসাদুল মোল্যার ছেলে ফরমান মোল্যা (২১), একই গ্রামের শাজাহান মোল্যার ছেলে সজিব মোল্যা (২২), শিবরামপুর গ্রামের নবিয়াল শেখের ছেলে জুবায়ের শেখ (২০) ও নূর ইসলাম ভূইয়ার ছেলে হাসিব ভূইয়া (২০)।

এ সময় পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান বলেন, তাদের নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতোপূর্বে ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে দুজন জামিনে বেরিয়ে এসেছে। তবে মামলার প্রধান আসামি কুতুবউদ্দিন এখনো জেলে রয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই এ ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি।

পুলিশ সুপার বলেন, যে মেয়েটির কথা এখানে বলা হয়েছে সে ইয়ামিন মৃধার প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। মেয়েটি হওয়ার পরই তার মা মারা যায়। দুই মাস আগে মেয়েটিকে স্কুলে ক্লাস টুতে ভর্তি করে দেয় তার সৎ ভাই রাজন। তবে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যেতে চায় ওই স্কুলেরই একজন নিঃসন্তান শিক্ষক। মেয়েটিকে তিনি দুবার তার ফরিদপুরের বাড়িতেও নিয়ে যান। শেষবার তিনি কাউকে না জানিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গত ১৭ মার্চ তাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই তার বাবাকে স্কুলে ডেকে নেয়া হয়েছিল। এরপর তার ভাইকেও ডেকে নেয়া হয়। তারপর তাদের উপর নির্মম নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, বাবা ও ছেলেকে নির্যাতনের আগে মেয়েটির একটি ভিডিও করা হয় যেখানে সে তার বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে। আর ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের ভিডিওটিও আমরা প্রথমে পাইনি। এজন্য প্রথমেই যৌন নির্যাতনের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারিনি। তবে ঘটনার পরের দিন তার বাবা ও ছেলেকে ডেকে এনে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কথা বলে আমরা বুঝতে পারি যে বাবা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত। পরে মেয়েটিকে যখন মেডিক্যাল টেস্ট করার জন্য পাঠিয়েছি তখন সে সত্য কথা বলেছে। সে আদালতে জবানবন্দিতে বলেছে, ‘আমাকে যৌন নির্যাতন করা হয় নাই। আমি মেডিক্যাল টেস্ট করাতে চাই না। ওই মহিলা (রুমা) আমাকে প্রলোভন দেখিয়েছে। টাকা দিয়ে বলেছে যে তোর ভাই আর বাবার বিরুদ্ধে এসব কথা বলবি। আর ওই মহিলাকে একথা বলার জন্য ঠিক করেছেন ওই স্কুল শিক্ষিকা।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের কাছে এসব কথা বলে নাই বরং কোর্টে বলেছে। এজন্য তার আগেই রাজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এখন বুঝতে পারছি রাজন মৃধা নির্দোষ। আমরা এ মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিবো এবং রাজন সংশোধনাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধাকে (১৫) নির্মম নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে। ওই ভিডিওতে মাঝকান্দির নাজিমউদ্দিনের মেয়ে রুমার নেতৃত্বে পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহতা ফুটে উঠে। সোমবার পর্যন্ত রুমা গ্রেফতার হয়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877