স্বদেশ ডেস্ক:
নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও ৩ লাখ সাত হাজার ৪৩৫ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন এক বৃদ্ধ বাবা। মামলাটি গ্রহণ করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন চট্টগ্রাম আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারজানা ইয়াসমিনের আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়।
বৃদ্ধ ওই বাবা হলেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চরম্বা মাইজভিলা এলাকার হাফেজ আবুল মোজাফফর (৭৮)। তিনি নগরীর চকবাজার গণি বেকারি মোড় হযরত মোল্লা মিসকিন শাহ (রাহ.) মসজিদে দীর্ঘদিন ধরে মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত আছেন।
মামলার একমাত্র আসামি আবুল মোজাফফরের বড় ছেলে মো. ইয়াছিন (৪৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সাল থেকে হাফেজ আবুল মোজাফফরের জমি ও ঘর দখলে নিয়ে বসবাস করছেন ছেলে মো. ইয়াছিন। সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দিয়েও না পেরে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়া বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসা এবং পরিবারের বিভিন্ন প্রয়োজনে ৩ লাখ ৭ হাজার ৪৩৫ টাকা ধার নেয় ইয়াছিন। সেই টাকাও ফেরৎ দেয়নি। ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা আবুল মোজাফফর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকাকালে লোহাগাড়ার আধুনগর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে হেবা দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে নেয় ইয়াছিন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রামের বাড়িতে ছেলে সব সম্পত্তি নিজের দাবি করে বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর ১৬ মার্চ পুনরায় বাড়িতে গিয়ে ধার নেওয়া টাকা ফেরৎ চাইলে উত্তেজিত হয়ে ছেলে আরও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘হাফেজ আবুল মোজাফফর বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ। তার বড় ছেলে মো. ইয়াসিন তার কাছ থেকে জোর করে বিভিন্ন সময়ে হেবাকৃত জমি ও টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন হেবাকৃত জমি হাফেজ মোজাফফর ফিরিয়ে নিতে চাইলে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আদালত আমাদের আরজি গ্রহণ করেছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য লোহাগাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়ে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করার জন্য পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন-২০১৩ প্রবর্তন করে। আইন অনুযায়ী, পিতা-মাতা বা দাদা-দাদি বা নানা-নানিকে ভরণ-পোষণ না দিলে তা অপরাধ হিসেব গণ্য হবে। এই অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং জরিমানার টাকা না দিলে সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
Like this:
Like Loading...
Related