বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১২:৫৯ অপরাহ্ন

খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা বেড়ে রেকর্ড

খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা বেড়ে রেকর্ড

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনা মহামারির পর যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলার সংকট। এতে নানা সংকটে কেটেছে দেশের শিল্প খাত। এ ছাড়া বিশ্বের মতো দেশের সার্বিক অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়েছে। এজন্য শিল্পের চাকা সচল রাখতে ও উৎপাদন ঠিক রাখতে সরকারের নানা ছাড়ের পাশাপাশি ঋণ পরিশোধেও দেয়া হয়েছে অনেক সুবিধা। ফলে বিদায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৮.১৬ শতাংশই খেলাপি। বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৮.১৬ শতাংশই খেলাপি। এক বছর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সে সময়ে এটি ছিল মোট ঋণের ৭.৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। জানা গেছে, বছরের শেষ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের হার ছিল নিম্নগামী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৪১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি কমেছে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৮.৬৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।
দেশের ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৬.৭৯ শতাংশই সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই কয়েকটি ব্যাংকের মোট ঋণের ২০.২৮ শতাংশ। অথচ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপির পরিমাণ ৩ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা নয়।
এদিকে আইএমএফের ঋণের সব অর্থ পেতে সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার শর্ত রয়েছে। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ শতাংশের নিচে হতে হবে। বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলো মোট ঋণের ৫.১৩ শতাংশ আর বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ১২.৮০ শতাংশ। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার  ৪.৯১ শতাংশ। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আইএমএফের ঋণের সব কিস্তি পেতে হলে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনায় আরও তৎপর হতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ২০২২ সালের শেষে দেশের ব্যাংক খাতের প্রভিশন সংরক্ষণের কথা ছিল ৮৪ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকগুলো সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে ৭৩ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। আর ঘাটতি রয়েছে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘাটতি ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রভিশন ঘাটতি ৮০ শতাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর বাকি ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা ঘাটতি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877