শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন

ভিক্ষুক থেকে সেলিব্রিটি রানু মন্ডল……!!!

ভিক্ষুক থেকে সেলিব্রিটি রানু মন্ডল……!!!

পরাগ মাঝি: লতা মুঙ্গেশকরের গান গেয়ে পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটের রানু মন্ডল এখন রীতিমতো সেলিব্রিটি। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা এই মানুষটি মনে করেন, গান তার জীবনে জলের মতোই বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। রাতারাতি জীবন বদলে যাওয়া রানু
রানাঘাটের লতা মুঙ্গেশকর: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিয়ালদহ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে নদীয়ার রানাঘাট স্টেশনে ভিক্ষা করেন কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে রানু মন্ডল। দু-তিনটে ডালপুরি, চা-বিস্কুটের জন্য প্রতিদিন অন্তত একবেলা তাকে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঘুরে ঘুরে যাত্রীদের কাছে হাত পাততে হয়। ভিক্ষাবৃত্তিতে তার প্রধান হাতিয়ার গান। মাঝে মাঝেই সুরেলা কণ্ঠে তিনি গান গেয়ে ওঠেন। সেই গানের সুর বেশিরভাগ সময়ই পথচলতি মানুষদের মনোযোগ এড়িয়ে যায়। কেউ কেউ ক্ষণিক দাঁড়িয়ে রানুর কণ্ঠে পুরনো দিনের দু-একটা গান শুনে আবারও চলতি পথে পা মেলায়। তাদের কেউ আবার রানুর দিকে ছুড়ে দেয় খুচরো পয়সা, ভাংতি টাকা। এসব পথচলতি মানুষদের একজন ছিলেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী। তিনি পেশায় ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার। রানাঘাট স্টেশন দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন।
২০ জুলাই, ২০১৮। সেদিনটাও ছিল আর পাঁচটা দিনের মতো। যাতায়াতের পথে স্টেশন চত্বরেই রানুর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তা রেকর্ড করেন অতীন্দ্র। রানু গান কিংবদন্তি লতা মুঙ্গেশকরের গাওয়া বিখ্যাত ‘পেয়ার কি এক নাগমা’ গানটি। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে স্বভাবতই খেয়ালের বশে নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিওটি শেয়ার করেন অতীন্দ্র। একজন ভিক্ষুকের এমন সুরেলা কণ্ঠ সাড়া ফেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় গানটি। আর এই ভাইরাল গানেই রাতারাতি জীবন বদলে গেছে রানু ম-লের।
রানুর ঘরে ভক্তের ভীড়: মানুষের ভিক্ষায় যার জীবন চলত এক সপ্তাহের ব্যবধানেই তার বাড়িতে বড় বড় মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে ছুটে এলো ভক্তরা। কেউ নিয়ে এলো ফুলের মালা, কেউ নতুন শাড়িও। এক যুবক রানুর পা ছুঁয়ে নতুন এক জোড়া চটিও পরিয়ে দিলেন। যার ফেইসবুক পোস্টে ভাইরাল হয়েছিলেন রানু, সেই অতীন্দ্র চক্রবর্তীও মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন রানুর কাছে। রানুকে এখন তিনি ‘পিসি’ সম্বোধন করেন। রানাঘাটের বেগোপাড়ায় জরাজীর্ণ একটি ঘরে থাকেন রানু। যে প্রতিবেশীরা রানুকে প্রতিদিন ভিক্ষার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে দেখতেন তারাও এখন চরম কৌতূহল নিয়ে বদলে যাওয়া রানুকে দেখছেন। স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের ভাষ্যমতে, ২০০০ সালের পর থেকে বেগোপাড়ার বাড়িতে রানুকে সব সময় একাই থাকতে দেখেছেন। সেই বাড়িতে এখন এত মানুষের ভিড় যে, অনেকেই দূর থেকে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকা রানুর একটি ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করে। অসংখ্য মানুষ তার সঙ্গে একটি সেলফি তোলার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। রানুর গান ভাইরাল হওয়ার দুই সপ্তাহ পর রানাঘাটের বেগোপাড়ায় বড় গির্জার সামনে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা অনেক বুঝিয়ে ডেকে এনেছিলেন রানুকে। তারা সবাই রানুর গান শুনতে চায়, তার গান মোবাইল ফোনে রেকর্ড করতে চায়। চারদিকে ঘিরে থাকা শ্রোতাদের পেয়ে আপ্লুত রানু একে একে গাইলেন অমর হয়ে থাকা লতার আরও কিছু গান। বেগোপাড়া চার্চ থেকে হাঁটাপথে সামান্য দূরে গাছগাছালি ঘেরা একটা পুরনো বাড়িতে একা থাকেন পঞ্চাশোর্ধ্ব রানু। তিনি জানান, বাড়িটা তার এক আত্মীয়র। তারা সপরিবারে কলকাতায় চলে যাওয়ার সময় দেখাশোনার জন্য সেখানে রানুকে রেখে যান।
রানুর ঘর-সংসার: ১৯৬৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর জেলায় একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রানু। মাত্র ৯ বছর বয়সে রানাঘাটে আসেন তিনি। পরে তার বিয়ে হয় মুম্বাইয়ে বসবাস করা বাবুল মল্ডলের সঙ্গে। মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে রাঁধুনির কাজ করতেন বাবুল। স্বামী-সংসার নিয়ে একসময় মুম্বাই শহরে থাকতেন রানু। তার এক ছেলে আর এক মেয়ে। মুম্বাইয়ে থাকার সময় প্রতিবেশী এক মহিলার কণ্ঠে লতা মুঙ্গেশকরের গান শুনতেন প্রায়ই। সেই গান শুনে শুনে তিনি নিজেও গাইতেন আপনমনে। রেডিওতেও গান শুনতেন। আর এভাবেই সুরের ভুবনে ডুবে থাকতেন তিনি। তাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কখনো গান শেখা না হলেও গাইতে গাইতেই সুরেলা হয়ে ওঠে তার কণ্ঠ। মুম্বাইয়ের সেই দিনগুলো এখন আর নেই। নেই স্বামী, সংসার। স্বামীর মৃত্যুর পর তার সন্তানরাও তাকে ছেড়ে যায়। তার মেয়ের নাম স্বাতী রায়। মা ভিক্ষাবৃত্তি করতেন বলে বেশ কয়েক বছর তার কাছে আসেনি মেয়ে। এই দীর্ঘ বছর অনেক কষ্টে কেটেছে রানুর। রানাঘাট স্টেশনে শুয়ে-বসে থাকতে থাকতে ভাবতেন, একদিন সত্যি সত্যি ফিরে আসবে তার মেয়ে।
মূলধারার গণমাধ্যমে: রানুর গান ভাইরাল হতেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তার কণ্ঠের প্রশংসার বন্যা বয়ে যায়। তার সুরেলা কণ্ঠ নজর কাড়ে বলিউড, টলিউডের বড় বড় সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং গায়কদের। দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে শুরু করে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন টেলিভিশন প্রোডাকশন হাউজ থেকেও কাজের জন্য ডাক পেতে শুরু করেন রানু। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘সুপারস্টার সিংগার’-এর মঞ্চে রানুর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান ভারতের গায়ক, অভিনেতা ও সংগীত পরিচালক হিমেশ রেশামিয়াও। এদিকে, জনপ্রিয় শো ‘বিগ বস’-এও প্রবেশ করতে চলেছেন রানু। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘বিগ বস সিজন-১৩’। শোনা যাচ্ছে, এবার বিগ বসের সিজন ১৩-তে যোগ দেওয়ার জন্য খোদ সালমানের কাছ থেকে ডাক পেয়েছেন রানাঘাটের রানু ম-ল।
তেরি মেরি কাহানি:‘সুপারস্টার সিংগার’ রিয়েলিটি শোতে রানুর গান শুনে বিচারকের আসনে থাকা হিমেশ শুধু মুগ্ধই হননি তিনি মঞ্চেই রানুকে তার সিনেমায় প্লেব্যাক করার অনুরোধ করেন। হিমেশের আমন্ত্রণে সম্প্রতি তিনি মুম্বাই গিয়েছিলেন। হিমেশ রেশমিয়ার সুরে প্রায় বছরখানেক আগে একটি গান প্রকাশ পেয়েছিল। গানটির শিরোনাম হলোÑ ‘তেরি মেরি কাহানি’। এবার এই গানে নারীকণ্ঠে সুর দিলেন রানু। পুরো গানটি মুক্তির আগেই রানুর কণ্ঠে গাওয়া অন্তরাটুকু নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করেন হিমেশ। কিন্তু এই অংশটুকুও রাতারাতি ভাইরাল। গানটি হয়তো হিমেশের গড়পড়তা অন্যান্য গানের মতোই হতো। কিন্তু রানুর কণ্ঠে গানটির অন্তরাটুকুই মাতিয়ে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এখন পর্যন্ত এই অংশটির ভিউ সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে। পুরো গানটি যখন মুক্তি পাবে তখন এর ফলাফল সহজেই অনুমান করা যায়। হিমেশের পরবর্তী সিনেমা ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’-এ ব্যবহৃত হবে গানটি। রানুকে দিয়ে গান রেকর্ড করানোর পর হিমেশ বলেন, ‘সালমান খানের বাবা সেলিম খান আমাকে একবার বলেছিলেন, জীবনে যখনই কখনো প্রতিভাবানের খোঁজ পাবে তার প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করবে।’ ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ ছবিটি মুক্তি পাবে আর মাত্র কয়েক মাস পরই। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন অভিনেতা সালমান খান। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন হিমেশ রেশমিয়া নিজেও। ‘তেরি মেরি কাহানি’ গানের ভিডিও ক্লিপটি শেয়ার করে হিমেশ লিখেছিলেন, ‘আপনার সমস্ত স্বপ্ন সত্য হতে পারে যদি সেগুলো অনুধাবন করার সাহস থাকে। একটি ইতিবাচক মনোভাব সত্যি সত্যিই স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে পারে।’ তার মতে, প্রতিভাই আজ রানুকে তার স্বপ্নের মুখোমুখি করেছে। হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে ‘আদত’ শিরোনামে আরও একটি গান গেয়েছেন রানু। এই গানটিও ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ সিনেমায় ব্যবহৃত হবে বলে জানা গেছে। প্লেব্যাক করার জন্য এখন কলকাতা থেকে নিয়মিত মুম্বাই আনাগোনা করতে হচ্ছে রানুকে। ব্যস্ত তারকা হয়ে উঠেছেন তিনি। প্রচুর শোয়ের ডাকও পাচ্ছেন এই ‘লতাকণ্ঠী’।
বদলে যাচ্ছে জীবন: ভবঘুরে ভিক্ষুকের জীবনে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন রানু। তার অতীত জীবনের অনেক কিছুই এখন আর মনে করতে পারেন না। তবে, গান ভোলেননি কখনো। কিংবদন্তি গায়িকা লতা মুঙ্গেশকরের গলার সঙ্গে রানুর গলার যথেষ্ট মিল রয়েছে। এমন প্রতিভা নিয়েও নোংরা গায়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বহুদিন গোসল করেননি। চুলে নেই শ্যাম্পু, নেই তেল। দীর্ঘদিনের অযতেœর ছাপ শরীরে সুস্পষ্ট। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন বদলে গেছে তার জীবন। তিনি এখন তারকায় পরিণত হয়েছেন। পাগলের বেশ তাকে আর মানায় না। তাই তাকে নিয়ে যাওয়া হলো বিউটি পার্লারে। সেখানে গিয়ে পায়ের নখ থেকে মাথার চুল সব করে ফেলা হলো ঝকঝকে। রানু এমন দিন আগে কখনো দেখেননি। এত আদর আর যতœ পেয়ে রানু এখন মহাখুশি। মায়ের ভাইরাল ভিডিও দেখেছেন রানুর মেয়ে স্বাতীও। সামাজিক মাধ্যম আর মানুষের মুখে মুখে নিজের মায়ের কীর্তি দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি। তাই ছুটে এসেছেন মায়ের কাছে। মা-মেয়ের সেই মিলনদৃশ্য এমনই আবেগপূর্ণ যে সিনেমাকেও হার মানায়। গলা জড়িয়ে ধরে দুজনের চোখেই তখন জল। একসঙ্গে গানও গাইলেন তারা। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের সিউড়িতে থাকেন স্বাতী রায়। তিনি বলেন, ‘মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় ঘুরতেন। আর এখানে আসার সময়-সুযোগ আমারও কম ছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমিও কিছু সমস্যা নিয়ে থাকি। তাই বছর দশেক মাকে দেখতে পারিনি। বাচ্চাকে মানুষ করতে আমাকে একটা ছোট দোকান চালাতে হয়। আর দাদা কলকাতায় থাকলেও যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন। অনেক দিন পর মায়ের কাছে এসেছি। এবার ক’দিন এখানে একসঙ্গে কাটাব।’ যোগাযোগ করতে না পারলেও মাঝে মাঝেই ৫০০ টাকা করে পাঠাতেন স্বাতী। সেলিব্রিটি হয়ে ওঠার পর মেয়ের সঙ্গে বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে রানু ম-লকে। গানের প্রতি অনুরাগ রয়েছে স্বাতীরও। তার গলাও সুরেলা। সামাজিক মাধ্যমে তিনিও ইতিপূর্বে নিজের গাওয়া গান পোস্ট করেছেন। মা বিখ্যাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গানও ভাইরাল হতে শুরু করেছে। কারও কারও মতে, মায়ের হাত ধরে স্বাতীও এবার গানের ভুবনে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন।
বিতর্ক: বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষ থেকে গণমাধ্যম দলে দলে দেখা করতে যাচ্ছে রানুর সঙ্গে। রানুর কাছে তাদের হাজারো প্রশ্ন। রানু যথাসম্ভব সেসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। আর এসব উত্তর দিতে গিয়েই ঘটছে বিপত্তি। কারণ, হিমেশের সঙ্গে প্লেব্যাক করার পরে মুম্বাই থেকে কলকাতায় ফিরলে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেনÑ ‘অতীন্দ্রের মতো মানুষের দৌলতে আপনি এত জায়গায় যাচ্ছেন, এ নিয়ে তিনি কী বলবেন?’ এর জবাবে, রানু বলে ওঠেন, ‘কারও সাহায্য নয়, আমি ভগবানের দৌলতে এসব করছিÑ ওরা ভগবানের চাকর।’ রানুর তারকাখ্যাতির নেপথ্যে ছিলেন সেই ভাইরাল ভিডিওর জনক অতীন্দ্র। তাই তার সঙ্গে ‘চাকর’ শব্দটি যোগ করায় সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই রানুর সমালোচনায় মুখর হয়েছে। তাদের বক্তব্য, ‘যে মানুষটি তাকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিল, তাকেই কি-না ‘চাকর’ বললেন রানু? খ্যাতি পেয়ে কি এভাবেই বদলে যেতে হয়?’ তবে, এ ঘটনায় অনেকেই রানুকে সমর্থন করছেন। কারণ তার জীবনের ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটছে যে, একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সামলানো সত্যিই কঠিন। তাদের মতে, না বুঝেই এমন কথা বলে ফেলেছেন রানু।
এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন অতীন্দ্র নিজেও। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষই ভগবানের চাকর। তাই তিনি ভুল কিছু বলেননি। বরং আমরা বুঝতে ভুল করছি। তাছাড়া তিনি এখনো মানসিক ভারসাম্যহীন।’ এদিকে, বিভিন্ন মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হিমেশ ‘তেরি মেরি কাহানি’ গানের জন্য রানুকে ৬-৭ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছেন। রানু এই টাকা নিতে না চাইলেও হিমেশ তাকে জোর করেই টাকাটা দেন। আরও শোনা যাচ্ছে, বলিউড ভাইজান সালমান খান তার পরবর্তী সিনেমা ‘দাবাং-৩’-এর একটি গান গাওয়াবেন রানুকে দিয়ে। তার বিপরীতে রানুকে তিনি একটি বাড়ি উপহার দিয়েছেন, যার দাম ৫৫ লাখ রুপি। তবে, এসব খবর ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অতীন্দ্র। অতীন্দ্র দাবি করেন, ‘গান গাওয়ানোর জন্য হিমেশ স্যার রানু দিদিকে টাকা দিয়েছেন এ খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এত বড়মাপের একজন সংগীত পরিচালক রানু দিদিকে বলিউডে প্লেব্যাক করার সুযোগ দিয়েছেন এটাই সব থেকে বড় কথা। টাকাপয়সার প্রসঙ্গ এখানে আসেই না।’
সিনেমা হবে রানুকে নিয়ে!: ভিক্ষুক থেকে তারকা বনে যাওয়া রানুর জীবন সিনেমার মতোই। তার জীবন সেলুলয়েডে তুলে ধরা উচিত বলে অনেকেই দাবি তুলেছেন। এদিকে, সেই দাবি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নবাগত পরিচালক হৃষিকেশ ম-ল। তবে এর পেছনে অন্য একজন বাঙালিও রয়েছেন। তিনি ক্যাকটাস-ব্যান্ডের সিধু। জানা গেছে, রানুর গান শোনার পরই তাকে নিয়ে ছবি করার ভাবনাচিন্তা করেন তিনি। ছবিতে যেমন রানুর কথা থাকবে, তেমনি থাকবে অতীন্দ্রর কথা। এই অতীন্দ্রই রানুর গান রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। ছবিটি নিয়ে নাকি সিধু আর অতীন্দ্রর কথাও হয়েছে।
সিনেমা তৈরির প্রসঙ্গে অতীন্দ্র জানান, বিষয়টি নিয়ে এখনো বিস্তারিত কথাবার্তা হয়নি। কিন্তু প্রজেক্টটি নিয়ে আশাবাদী তিনি। ছবিতে যে গানগুলো থাকবে, সেগুলো রানু নিজেই গাইবেন। তবে রানুর চরিত্রে কে অভিনয় করবেন, তা এখনো স্থির হয়নি। জানা গেছে, ছবির নাম হতে পারে ‘প্ল্যাটফর্ম সিংগার রানু ম-ল’।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877