শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্যালাইন শেষ হওয়ার আগেই বাজবে অ্যালার্ম

স্যালাইন শেষ হওয়ার আগেই বাজবে অ্যালার্ম

স্বদেশ ডেস্ক: স্যালাইন অ্যালার্ম সিস্টেম উদ্ভাবন করেছেন বগুড়ার ছেলে মাহমুদুন নবী বিপ্লব। স্যালাইন শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে সিস্টেমটি সেন্সরের মাধ্যমে কর্তব্যরত নার্স ও রোগীর স্বজনদের সতর্কতা বার্তা জানাবে। একই সঙ্গে তিনি উদ্ভাবন করেছেন ‘বেবি ইউরিন অ্যালার্ম বেড’ নামে একটি বিছানা। শিশু প্রসাব করলেই এটি বার্তা দিবে।

বিপ্লব পেশায় একজন যন্ত্র প্রকৌশলী। বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক এই শিক্ষার্থী এর আগে ইনটেলিজেন্ট ডিসি ভেন্টিলেশন সিস্টেম এবং বন্যা সতর্কীকরণ যন্ত্র উদ্ভাবন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তার এই উদ্ভাবন সরকারের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) বিভাগে উপস্থাপন করা হয়।

আড়াই বছর আগে নিজের সন্তান জন্মের পর পরই এমন একটি বিছানার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন বিপ্লব। তিনি বলেন, আমার সন্তান বিছানায় প্রস্রাব করে ৩-৪ ঘণ্টা সেভাবেই থাকত। ভেজা বিছানায় থেকে ঠা-াজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয় শিশু। তখনই ভাবি, ছোট শিশুরা তো কথা বলতে জানে না। তাই তাদের জন্য এমন একটি বিছানা যদি তৈরি করা যায়, যে বিছানায় শিশু প্রস্রাব করার সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম বেজে উঠবে, তাহলে তাৎক্ষণিক মা-বা বা পরিবারের অন্য কেউ এসে শিশুর বিছানাটি বদলে দিতে পারবেন। এর পর প্রায় দুই বছর গবেষণা করে ‘বেবি ইউরিন অ্যালার্ম বেড’ তৈরি করতে সক্ষম হই।

অন্যদিকে বিপ্লবের স্যালাইন অ্যালার্ম একটি ডিজিটাল সিস্টেম, যা রোগীকে স্যালাইন দেওয়ার পর যখন শেষ হবে, তার আগ মুহূর্তে সেন্সরের মাধ্যমে ডিউটিরত নার্সকে অবহিত করবে যে আপনার রোগীর স্যালাইন শেষ হয়েছে। একটি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সাধারণত অনেক কেবিন বা ওয়ার্ড থাকে। প্রতিটি কেবিন বা ওয়ার্ডের সিরিয়াল নাম্বার থাকে এবং ওই ক্লিনিক বা হাসপাতালে নার্স থাকে রোগীর সর্বক্ষণিক তদারকি করার জন্য।

কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা দিতে বিপ্লব বলেন, মনে করুন হাসপাতালে ১০টি কেবিন এবং একটি ওয়ার্ড আছে। ওয়ার্ডে ১০টি বেড আছে। সর্বমোট বেড হলো ২০টি। কিন্তু সেখানে নার্স থাকেন ৩-৪ জন। ২০টি বেডের জন্য চার জন নার্সের পক্ষে অনেক সময় সব রোগীর খোঁজখবর নেওয়া সম্ভব হয় না। তাই অনেক সময় দেখা যায় রোগীর স্যালাইন শেষ হওয়ার পর রক্ত স্যালাইনের মধ্যে উঠে যায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমার উদ্ভাবন ‘স্যলাইন অ্যালার্ম’।

বিপ্লব বলেন, দেখা গেছে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের একটি ডিউটি রুম থাকে, যেখানে নার্সরা অবস্থান করেন। এই ডিভাইসটি দুটি অংশে বিভক্ত। এর একটি হলো সেন্সর ও অপরটি হলো কলিং বেল। তাই ২০টি বেডের জন্য ২০টি সেন্সর থাকবে প্রতিটি স্যালাইনের সঙ্গে। সেই সঙ্গে ২০টি কলিং বেল থাকবে নার্স ডিউটি রুমে। বেডের সিরিয়াল নাম্বার অনুযায়ী যে বেডের রোগীর স্যালাইন শেষ হবে সঙ্গে সঙ্গে ওই বেডের বেলটি (ডিউটি রুমে অবস্থিত) বেজে উঠবে। তখন সঙ্গে সঙ্গে ডিউটিরত নার্স গিয়ে স্যালাইনটি রোগীর শরীর থেকে খুলে দেবেন। ফলে রোগী বিপদ থেকে রক্ষা পাবেন।

যন্ত্র প্রকৌশলী বিপ্লব বলেন, স্যালাইন অ্যালার্ম হলো একটি ডিজিটাল সিস্টেম। স্যালাইন শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে সিস্টেমটি সেন্সরের মাধ্যমে ডিউটিরত নার্স ও রোগীর স্বজনদের জানাবে। এটি করতে প্রতিটি স্যালাইনের সঙ্গে একটি করে সেন্সরের লাগাতে হবে। সব মিলিয়ে এই ডিভাইসের দাম প্রতিটি ৬ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে হবে। পরিমাণে বেশি তৈরি করলে খরচ আরও কমে যাবে।

অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) বগুড়ার বোর্ড সদস্য বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শাহাদৎ হোসেন বলেন, বিল্পবের উদ্ভাবন আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। এটি সুন্দরভাবে কাজ করে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতার জন্য সুপারিশ করেছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877