স্বদেশ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে ট্রলার থেকে ছিটকে পড়া জেলে ইমরান হোসেন (১৪) পাঁচদিন গভীর সমুদ্রে ভেসে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বাঁচলেও অবশেষে তার ঠাঁই হয়েছে ভারতের রায়দিঘি থানায়।
বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অপরাধে তাকে উদ্ধার করে ওই দেশের জেলেরা রায়দিঘি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ইমরান হোসেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের মঠেরখাল গ্রামের ইসমাইলের ছেলে।
এর আগে উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের মঠেরখাল গ্রামের ইসমাইলের মালিকানাধীন এফবি ইমরান ট্রলারসহ ১২ জেলে সোমবার (২৬ আগস্ট) সমুদ্রে মাছ শিকার করে ফিরে আসার পথে পরদিন মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বলেশ্বর নদের মোহনায় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। মুহূর্তের মধ্যেই ইমরান ট্রলার থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে যায়। সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়, যার নম্বর- ১৩৪৪।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইমরান হোসেন লুঙ্গি ফুলিয়ে ভাসতে ভাসতে শনিবার (৩১ আগস্ট) দেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় জলসীমানায় পৌঁছে যায়। ভারতীয় ট্রলার ‘এফবি বাবা পঞ্চানন’ এর চালক মনোরঞ্জন দাস সমুদ্রে মাছ ধরার সময় তাকে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন।
উদ্ধারের পর ইমরান জানায়, তারা ১২ মৎস্যজীবী এফবি ইমরান নামের একটি ট্রলারে করে সমুদ্রে মাছ ধরছিল। হঠাৎ সে সমুদ্রে পড়ে যায়। আর উঠতে পারেনি। এরপর ঢেউ আর স্রোতে মধ্যে পরনের লুঙ্গি ফুলিয়ে ভাসতে থাকে। একপর্যায়ে ৪ দিনের মাথায়ই সে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
ইমরানকে উদ্ধারের পর ভারতীয় মৎস্যজীবীরা তাকে নিয়ে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার রায়দীঘি বন্দরে। সেখানে তাকে ভর্তি করানো হয় গ্রামীণ হাসপাতালে।
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা প্রশাসক সুকান্ত সাহা বলেছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধম্যে বাংলাদেশী মৎস্যজীবীকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয় বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই আমরা বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান করেছি। পরে জানতে পেরেছি ভারতীয় জেলেরা ইমরানকে উদ্ধার করে রায়দিঘি থানায় হস্তান্তর করেছে।
তিনি আরো বলেন, রায়দিঘি থানা পুলিশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।