স্বদেশ ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিবৃতি দিয়েছেন দলটির আমির মকবুল আহমাদ। ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সোমবার এক বিবৃতিতে জামায়াত আমির মকবুল আহমদ মীর কাসেম আলীকে বিশিষ্ট ইসলামী অর্থনীতিবিদ, সমাজসেবক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে তাকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত করা হয়েছে বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, ‘শহীদ মীর কাসেম আলী ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ। এ দেশে ইসলামী সমাজ গড়ার আন্দোলনে তার অবদানের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘শহীদ মীর কাসেম আলী ছাত্র জীবন থেকেই এ দেশে কল্যাণধর্মী একটি ইসলামী সমাজ কায়েমের জন্য সংগ্রাম করে গিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। ইসলামী ব্যাংক-বীমাসহ বহু মসজিদ, মাদ্রাসা, বিভিন্ন ইসলামী ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এ দেশের দরিদ্র জনগণ তার কথা আজীবন স্মরণ করবে। শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কারণেই সরকার তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে।’
মকবুল আহমাদ বলেন, ‘শহীদ মীর কাসেম আলীকে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সরকার পক্ষ তার বিরুদ্ধে আনীত কোন অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে সেগুলোর সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা ছিল না। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শহীদ মীর কাসেম আলীকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার অত্যন্ত নির্মম ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় ফাঁসি দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তারই অংশ হিসেবে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুঁলিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘তার প্রতি ফোঁটা রক্তের বদৌলতে এ দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ধাপে ধাপে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। অতীব দুঃখের সাথে উল্লেখ করছি যে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী এক দল লোক ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট রাতে শহীদ মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিষ্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমানকে জোর পূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তাকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। ব্যারিস্টার আরমান তার পিতার আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। তারা সরকারের নিষ্ঠুর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।’
‘মীর কাসেম আলীর স্বপ্নের ইসলামী সমাজ কায়েমের সংগ্রাম জোরদার করার মাধ্যমেই তার প্রতি যথার্থ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে।’ তার অসমাপ্ত কাজ যাতে সমাপ্ত করতে মহান আল্লাহর তাওফীক কামনা করেন জামায়াতে ইসলামীর এই শীর্ষনেতা।