শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভোজ-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের শিষ্টাচার

ভোজ-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের শিষ্টাচার

  • আবরার নাঈমমানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাসে করে। একাকী বসবাস করা মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য। আমাদের আশপাশে যারা বসবাস করে তারা আমাদের প্রতিবেশী। নানা সময়ে আমাদের জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় যারা অংশীদার হয়। কখনো কোনো অনুষ্ঠান বা প্রীতিভোজের আয়োজনে একে অন্যকে দাওয়াত দিলে প্রত্যাখ্যান না করে বরং সেখানে উপস্থিত হওয়া উচিত। এটিই প্রিয় নবী সা:-এর সুন্নত। যেমন এক হাদিসে হজরত ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত আছে- রাসূল সা: বলেন, ‘তোমাদের কেউ তার ভাইকে দাওয়াত দিলে সে যেন তা কবুল করে। তা বিয়ে অনুষ্ঠান বা প্রীতিভোজ যা-ই হোক না কেন।’ (সুনানে আবু দাউদ-৩৭৩৮)

    অন্য হাদিসে হজরত জাবির রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যাকে দাওয়াত দেয়া হয়, সে যেন তাতে সাড়া দেয়। অতঃপর ইচ্ছে হলে খাবে নতুবা বিরত থাকবে।’ (সুনানে আবু দাউদ- ৩৭৪০)

    আমাদের সমাজে একটি বিষয় খুব ব্যাপকভাবে চলে আসছে। তা হলো- কোনো অনুষ্ঠানে যদি কাউকে এককভাবে দাওয়াত করা হয়, সেখানে সে পুরো পরিবার নিয়ে উপস্থিত হয় এবং সেটিও মেজবানের অজান্তে। এ দিকে মেজবান পড়ে যায় বিপাকে। কখনো শিকার হন বিব্রতকর পরিস্থিতির। অনেকসময় খাদ্য স্বল্পতার দরুন লজ্জিতও হতে হয়। তাই এসব ভোজ-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাসূল সা: আমাদের শিখিয়েছেন সর্বোৎকৃষ্ট শিষ্টাচার। যদি কখনো এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, অর্থাৎ আহূত মেহমানের সাথে অতিরিক্ত কেউ মেজবানের বাড়িতে চলে আসে তাহলে কি তাকে তাড়িয়ে দেবে নাকি মেজবানের অনুমতি চাইবে সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে একটি শিক্ষণীয় ঘটনা। হজরত আবু মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত- আবু শুয়াইব নামক জনৈক আনসারি সাহাবি এসে তার কসাই গোলামকে বললেন, পাঁচজনের উপযোগী খাবার তৈরি করো। আমি আল্লাহর রাসূল সা:সহ পাঁচজনকে দাওয়াত করতে যাই। তাঁর চেহারায় আমি ক্ষুধার চিহ্ন দেখতে পেয়েছি।

    তারপর সে লোক এসে দাওয়াত দিলেন। তাদের সাথে আরেকজন অতিরিক্ত এলেন। নবী সা: বললেন, ‘এ আমাদের সাথে এসেছে, তুমি ইচ্ছা করলে অনুমতি দিতে পারো, আর তুমি যদি চাও সে ফিরে যাক, তবে সে ফিরে যাবে।’ সাহাবি বললেন, না, বরং আমি তাকে অনুমতি দিলাম। (সহিহ বুখারি-২০৮১)

    কোনো কোনো এলাকায় অবশ্য এর প্রচলন আছে। অর্থাৎ একজনকে দাওয়াত করা মানেই পুরো পরিবারকে দাওয়াত করা। সেখানে অবশ্য এই বিধান প্রযোজ্য নয়। তাই যেকোনো আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সময় এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখা আমাদের প্রত্যকের জন্য অত্যাবশ্যক। ইসলাম যে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা এসব সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম দিকগুলোই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। তাই আসুন ইসলামকে জানি। ইসলামকে মানি এবং দোজাহানে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:-এর ভালোবাসার পাত্র হয়ে যাই। আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

    লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877