শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন

আনুশকার জরায়ুতে ১৩টি টিউমার

আনুশকার জরায়ুতে ১৩টি টিউমার

স্বদেশ ডেস্ক: পেটে ছিল ১৩টিরও বেশি টিউমার। আর একারণে অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে দু-দুবার। টিউমার অপসারণ করতে গিয়ে জরায়ুটাও শেষ পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে। জীবনের ভয়ানক এই সত্যিটা শেষমেষ জনসম্মুখে তুলে ধরলেন ভারতের খ্যতনামা সেতারশিল্পী, মিউজিক কম্পোজার আনুশকা শংকর।

গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জীবনের সংকটময় সময়গুলো পাড়ি দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। আনুশকার বাবাও ভারতের বিখ্যাত সেতারবাদক পণ্ডিত রবি শংকর।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে আনুশকা দেওয়া এই পোস্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজ।

সেখানে আনুশকা লিখেছেন, মাত্র ২৬ বছর বয়সেই আমি প্রথম বুঝতে পারি, আমার জরায়ুতে একটা ফাইব্রয়েডের (ক্যানসার বিহীন টিউমার) মত কিছু একটা রয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফাইব্রয়েডটা জরায়ু থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়। সেবারের মতো জরায়ুটা সুরক্ষিত করা হয়। এর পরবর্তী সময়ে আমি অবশ্য দুই সন্তানের মাও হয়েছি।

এখানেই শেষ নয়, পরবর্তী সময়ে দুবার মা হওয়া তার জীবনে বদলে দিয়েছিল বলে জানান আনুশকা। তার কাছে এই বিষয়টা অন্ধকারের মধ্যেও আলোর মতোই ছিল। আনুশকার কথায়, ঠিক যেমনটা চাঁদের গায়েও কলঙ্কের দাগ থাকে তেমন।

আনুশকা শংকর লিখেছেন, জরায়ুর এই অস্ত্রোপচার নিয়ে কেন বেশি কথা হয় না। এ বিষয়ে আমি একজন মহিলাকে জিজ্ঞেস করেও ছিলাম, তার জবাবে তিনি বলেছিলেন, আজকাল কমবেশি বেশিরভাগ মহিলারাই এই সমস্যার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে।

রবি শংকর কন্যা আরও লিখেছেন, গত মাসের পর থেকে আমার জরায়ুটা আর নেই। আমার দুটি অস্ত্রপচার হয়েছে। একটা স্ত্রীরোগের ও অন্যটি ক্যানসারের জন্য। কারণ আমার জরায়ুর টিউমারগুলো ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছিল। টিউমারের কারণে জরায়ুর আকারটা প্রায় ৬ মাসের গর্ভবতীর মতো দেখাচ্ছিল চিকিৎসকরা ১৩টি টিউমারই অস্ত্রপচারের মাধ্যমে বের করে দেন। একটা টিউমার এতটাই বড় হয়েছিল, যে ওটি আমার পেশীর সঙ্গে জোড়া লেগে গিয়েছিল।

আনুশকা লিখেছেন, কিছুদিন আগে যখন আমি জানতে পারলাম, যে আমার জরায়ুটা কেটে বাদ দিতে হবে, তখন আমি কিছুদিনের জন্য অবসাদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, এবার হয়ত আমার নারীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। ভবিষ্যতে আর কোনোদিন আমি সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ভাবতেও পারবো না। ভেবেছিলাম জরায়ু বাদ যাওয়ার ফলে হয়তবা আমার সন্তানরা তাদের মাকে হারাবে। আমার যৌনজীবনেও হয়ত প্রভাব পড়বে। এসব অনেক কথাই মাথায় এসেছিল। তবে যখন আমি এই বিষয়টা নিয়ে আমার বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদের মধ্যে কথা বললাম তখন জানতে পারলাম যে কত নারীই এই ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যেই দিয়ে যায়।

খ্যাতনামা এই সেতার বাদক লিখেছেন, অনেক মেয়ের সঙ্গেই যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন আমার মনে প্রশ্ন ছিল তাহলে আমার বিষয়টা নিয়েই কেন এত বেশি আলোচনা হচ্ছে। আমি দুঃখের সঙ্গে আমার তরুণ প্রজন্মকে প্রশ্ন করছি, আমরা কতটা নিরাবতার সঙ্গে এই বিষয়গুলোকে মোকাবিলা করার প্রত্যাশা করি। আমি সবসময়ই নিজেকে সেই দলেই ফেলেছি, যে আমি আমার চিন্তাভাবনাগুলো নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলতে দ্বিতা বোধ করি না। এই ঘটনার পর আমি বুঝতে পারছি, আমি আমার যৌনস্বাস্থ্য, ঋতুচক্র নিয়ে কথা বলতে কতটা লজ্জিত বোধ করছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877