শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন

রাজবাড়ীতে ঘন কুয়াশায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত, বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

রাজবাড়ীতে ঘন কুয়াশায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত, বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

স্বদেশ ডেস্ক:


রাজবাড়ীতে তীব্র শীত ও লাগাতার ঘন কুয়াশার কারণে বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বীজতলার চারা। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকেরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের কিছুই করার নেই। বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। শীত কমে আসলে কৃষকরা পুরোদমে বোরো আবাদ করতে পারবেন।

জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর, বরাট, রামকান্তপুর, দাদশী,পাচুরিয়া, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম, ছোটভাকলা, বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর, জামালপুর, নারুয়া ও কালুখালির উপজেলার রতনদিয়া, কালিকাপুরসহ বিভিন্ন স্থানে কুয়াশায় ও শৈত্যপ্রবাহে বোরো ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবুজ বীজতলা এখন ফ্যাকাশে, লালচে ও পচে নষ্ট হওয়ায় মারাত্মক লোকসানে পড়েছেন চাষিরা।

চাষিরা জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেতে বা খালবিলে বীজতলা শীতে বাড়তেই পারেনি। কোনো কোনো স্থানে ধানের বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার আগেই কুয়াশা ও শীতে পচে গেছে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ, বালিয়াকান্দি ও কালুখালীতে বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যে এ বছর ৫৩১ হেক্টর বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু টানা ১৮ দিন ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতায় এসব বীজতলার বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬ হেক্টর বেশি বীজতলা তৈরি হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭৫ হেক্টর, সেখানে আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩১ হেক্টর আবাদ হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চর তেনাপচা এলাকার বোরো ধান চাষি কোব্বাত মোল্লা বলেন, অতিরিক্ত কুয়াশা ও শীতের কারণে তাদের বেশির ভাগ বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আর সময় নেই আবার বীজতলা তৈরি করে ধান আবাদ করার। এখন বেশি দামে চারা কিনে ধান আবাদ করা ছাড়া কোনো পথ নেই। গত বছর দশ পাখি জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন তিনি। কিন্ত এবার একটা চারাও জমিতে রোপন করতে পারেননি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল করিম জানান, প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কৃষক মাঠে নামতে পারছেন না। চারা রোপণের জন্য কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ঘন কুয়াশায় বীজতলার চারা নষ্ট হতে বসেছে।

এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার একাধিক কৃষকরা বলছেন, ধানের বীজতলার অর্ধেক চারা শীত ও কুয়াশার কারণে মরে যাচ্ছে। কৃষকরা বীজতলা রক্ষার জন্য বিভিন্ন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন। কিন্তু তাতে তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এরকম চলতে থাকলে বোরো ধান চাষ হুমকির মুখে পড়বে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এস এম সহীদ নুর আকবর বলেন, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরোর বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। যদি এ রকম আবহাওয়া থাকে এবং বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যায়, তাহলে প্রতি শতক বীজতলায় ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার দিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এরপরও যদি সমস্যা না কাটে, তাহলে প্রতি শতকে ১০ গ্রাম হারে জিপসাম সার দিলে চারা বিবর্ণ হওয়ার সমস্যা কেটে যাবে।

তিনি বলেন, যেসব বীজতলায় দেরিতে বীজ বপন করা হয়েছে ওই সব চারা শীত ও কুয়াশায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা করে রোদ পেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877