শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:০৯ অপরাহ্ন

গণতন্ত্র মঞ্চের সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা ঘোষণা

গণতন্ত্র মঞ্চের সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা ঘোষণা

স্বদেশ ডেস্ক:

ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলন, সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সোমবার রাজধানীর শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ১৪ দফা ঘোষণা করা হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দফা পাঠ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই ১৪ দফার আলোকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলন ও সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলে ঐক্যে গড়ে তুলতে চাই।’ ১৪ দফা ঘোষণার মধ্যে রয়েছে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংশোধন করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখাসহ বেশকিছু দাবি।

গণতন্ত্র মঞ্চ ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন, সরকার ও শাসন ব্যবস্থা বদলের ১৪ দফা’ শিরোনামে তাদের দাবি পেশ করে। দাবিগুলো হচ্ছে বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা, সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা, অবাধ, নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা, নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে নির্বাচনে টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা, আরপিও সংশোধন করা, প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরিবর্তন করা, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করা।

এছাড়া সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, ন্যায়পাল ও সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংস্কার করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া সব বিলে স্বাধীন মতামত দেওয়ার সুযোগ করা।

প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ও দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।

এসবের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কারাবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি, সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে সভা-সমাবেশ-মিছিলসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা বেআইনি হিসাবে গণ্য করা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সহ মৌলিক নিবর্তনমূলক কালাকানুন বাতিল করার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশি ব্যবস্থার নামে শ্রমিক আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করা।

জরুরিভিত্তিতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, গরীব ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতসমূহে স্বেচ্ছাচারী মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করা ও রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দেয়া দায়মুক্তি আইন বাতিল করা।

গত ১৫ বছরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং, শেয়ার মার্কেটসহ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করা।

গুমের শিকার সব নাগরিকদের উদ্ধার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ছয় শতাংশ বরাদ্দ করা। কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল-চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু করা।

সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877