রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন

অক্টোবরে হতে পারে আ’লীগের কাউন্সিল

অক্টোবরে হতে পারে আ’লীগের কাউন্সিল

স্বদেশ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী অক্টোবরের শেষ নাগাদ দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে। তবে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং বর্তমানে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় সম্মেলন দুয়েক মাস পেছানো হতে পারে বলে দলের অন্য একটি সূত্র থেকে এমনটি আভাস পাওয়া গেছে। কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী বৈঠকে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শীর্ষপর্যায়ের একাধিক নেতা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, আগামী অক্টোবরে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে এখনো দলের সিদ্ধান্ত আছে। পেছানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য ও দলের গত জাতীয় কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন নয়া দিগন্তকে এ প্রসঙ্গে বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত আছে আগামী অক্টোবরে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। পেছানো হবে কি না এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোটামুটি সবকিছুইতো প্রস্তুত আছে। আগস্ট শোকের মাস। মাসজুড়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি থাকে। নেতাকর্মীরা সেসব কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। যার কারণে এ মাসে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। আগামী মাস থেকে কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, দেশের বেশ কয়েকটি জেলা ব্যাপকহারে বন্যায় প্লাবিত হয়ে সেখানকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করার জন্য শীর্ষপর্যায়ের নেতারা কাজ করছেন। বন্যার প্রভাব এখনো কাটেনি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর নেতাকর্মীরা কাউন্সিলের জন্যও প্রস্তুত আছে কি না, তারা যোগ দিতে পারবে কি না বা কবে নাগাদ যোগ দিতে পারবে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই সব জেলা-উপজেলার নেতারাও কাউন্সিলে অংশ নিয়ে তাদের মতামত ও ভোট দেবেন। এ ছাড়া দেশের মানুষ এখন ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে। ডেঙ্গুর প্রভাব কবে নাগাদ শেষ হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধকে আওয়ামী লীগ সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। সরকার ও দলের বড় একটি অংশ এটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। ফলে দুটি বিষয়ই জাতীয়ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে নির্ভর করছে এই দুটি বিষয় কাটিয়ে উঠতে কত সময় লাগবে। আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে নতুন করে সিদ্ধান্ত এলে সর্বোচ্চ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেছানো হতে পারে।

আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলন হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন। রাজধানী ঢাকার কে এম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনের ওই সম্মেলনে সভাপতি হন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালের ৩-৫ জুলাই রাজধানীর মুকুল সিনেমা হলে। ওই সম্মেলনে সভাপতি পদে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক পদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ গত ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিন কাউন্সিল অধিবেশনে অষ্টমবারের মতো শেখ হাসিনা সভাপতি নির্বাচিত হন ও প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের নির্বাচিত হন। ওই দিনই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ১৪ জন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, চারজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরে ২৫ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় ২২ জন সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। আর ২৮ অক্টোবর নতুন পুরোনো মিশেলে ৭৪ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৭৩ সদস্য থেকে ৮১ সদস্যের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877