স্বদেশ ডেস্ক:
ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ২৬ জনের বিরুদ্ধে বিয়ে করাসহ নানা অভিযোগ পেয়েছে যাচাই-বাছাই কমিটি। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে গঠিত এ সংক্রান্ত কমিটি নানা মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এসব অভিযোগ পান।
গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাচাই-বাছাই কমিটি প্রথম দিনে এসব অভিযোগ বিষয়ে কাজ শুরু করেন। চলবে আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে।
বিয়ের অভিযোগ ওঠা সভাপতি পদে আজিম উদ্দিন মেরাজ, আরজ আলী শান্ত, আরাফাত বিল্লাহ, মাইনুল ইসলাম, আল মেহেদী তালুকদার প্রমুখ। যদিও মেহেদী নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত।’
সাধারণ সম্পাদক পদে অভিযোগ ওঠাদের মধ্যে নাদিয়া পাঠান, মাহমুদুল আলম শাহিন, সাজেদুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, বাবুল আক্তার শান্ত, সিরাজুল ইসলাম, আবদুল মান্নান, তবিবুর রহমান সাগর, জুলহাস উদ্দিন উল্লেখযোগ্য।
এর বাইরে এসএসসি-২০০০ ও নিবন্ধন ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষ সংক্রান্ত জটিলতায় আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
এই কার্যক্রম শুরু করার আগের দিন গত বুধবার রাতে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলে নির্দেশনা নেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। সেখানে থাকা নেতারা জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াদের মধ্যে তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্তভাবে গণ্য হবে-যাদের এসএসসি-২০০০ সালের মধ্যে, নিবন্ধন ১৯৯৯-৯৮ শিক্ষাবর্ষ, অবিবাহিত ও দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তির প্রমাণপত্র থাকতে হবে। এর ব্যতয় ঘটলে কোনোভাবেই প্রার্থিতা টিকবে না বলে তারেক রহমান তাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তারেকের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করছেন।
কাউন্সিল প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছাত্রদলের সাবেক একজন নেতা আমাদের সময়কে জানান, বহিষ্কৃত ১২ ছাত্রদল নেতাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তারেক রহমান, বহিষ্কার আদেশও তিনি তুলে নেবেন। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্তও দেবেন তিনি। যেহেতু বহিষ্কৃতরা ছাত্রদল করবে না, সে কারণে অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোতে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তাদের নিয়ে সে ভাবনাও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভাবছেন বলে তা সাবেক ছাত্রদল নেতাদের জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলকে উৎসব মূখর করতে আগামী সব কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান ছাত্রদলের বহিষ্কৃতসহ বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। তার আগে ১২ ছত্রদল নেতাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার চান তারা। বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহীনও রয়েছেন। প্রতিটি জেলা-মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সুপার ফাইভ কাউন্সিলর হিসেবে ভোট দেবেন। কিন্তু বাশার ও তুহীনের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না হলে তারা কাউন্সিলর হিসেবে ভোট দিতে পারবেন না। এই নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও কী করবে তা নিয়ে বেকাদায় পড়েছে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ইখতিয়ার রহমান কবির আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমরাও এই কাউন্সিলকে উৎসব মূখর করতে কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হতে চাই। সম্প্রতি আমাদের নেতা তারেক রহমানের সাথে আমাদের গুলশান কার্যালয়ে স্কাইপেতে কথা বলেছেন, আমরা তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি, তিনি আমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব নিয়েছেন, সময় নিয়েছেন। তার ওপর আস্থা রেখেই আবেদন করছি, কাউন্সিলদের মধ্যে দুইজন বহিষ্কৃত নেতাও রয়েছেন। তাদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক।’