স্বদেশ ডেস্ক:
নিজেদের ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বুধবার রাতে এ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ইউনাইটেডের হয়ে গোল দুটি করেন ফ্রেড ও ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
নিজেদেরে মাঠে আক্রমণের পসরা সাজিয়ে শুরু থেকেই উজ্জীবিত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। স্বাগতিকদের বিপক্ষে যেন একাই লড়াই করার পণ করেন টটেনহামের গোলরক্ষক হুগো লরিস। প্রথম ২৫ মিনিটেই ইউনাইটেডের পাঁচ পাঁচটি আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন এই ফরাসি গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে একের পর এক সেভ করে স্বাগতিকদের হতাশ করলেও শেষ পর্যন্ত গোল হজম করা থেকে অবশ্য দলকে রক্ষা করতে পারেননি তিনি। বিরতির পর ভেঙে যায় তার দেয়াল।
এক ম্যাচ পর লিগে জয়ের স্বাদ পেল ইউনাইটেড। গত রাউন্ডে ঘরের মাঠেই নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সাথে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা।
গত মার্চে লিগে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ফিরতি দেখায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে এই ম্যাচে বেঞ্চে রাখেন টেন হাগ। পর্তুগিজ তারকাকে শেষ পর্যন্ত বদলি হিসেবেও মাঠে নামাননি তিনি। ৮৯ মিনিটে টানেলে ঢুকতে দেখা যায় পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারকে।
একের পর এক আক্রমণে শুরু থেকে টটেনহ্যামকে চেপে ধরে স্বাগতিকরা। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে ৩০ গজ দূর থেকে আন্তোনির নেয়া শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন টটেনহাম গোলরক্ষক। পরের মিনিটে দূর থেকে ফ্রেডের শটে লাফিয়ে বল এক হাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে টটেনহামকে গোল হজম করা থেকে আবারো রক্ষা করেন এই ফরাসি গোলরক্ষক।
ম্যাচের ২১ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পান মার্কাস র্যাশফোর্ড। ফ্রেডের দারুণ থ্রু বলে ইংলিশ ফরোয়ার্ডের নেয়া শট এবারো ঠেকিয়ে দেন লরিস। এক মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেজের ফ্রি-কিকও ফিরিয়ে দেন এই ফরাসি গোলরক্ষক।
একটু পর লুক শর জোরাল ভলি দুর্দান্ত সেভে ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন তিনি। ২৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কাসেমিরোর বুলেট গতির শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। প্রথম আধা ঘণ্টায় গোলের জন্য ইউনাইটেড শট নেয় মোট ১৪টি, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে আর সবগুলোই সেভ করেন লরিস।
প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে এসে স্বাগতিকদের গোলপোস্টে লক্ষ্য করে প্রথম শট নিতে পারে টটেনহ্যাম। দুরূহ কোণ থেকে হ্যারি কেইনের শট ফিরিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া। বিরতির আগে ইউনাইটেড যেখানে গোলের জন্য ১৯টি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে, সেখানে টটেনহ্যামের পাঁচ শটের একটি লক্ষ্যে ছিল। লরিসের কল্যাণে গোল শূন্য সমতায় প্রথমার্ধ শেষে বিরতিতে যায় সফরকারী দল।
আক্রমণের ধারা ধরে রেখে দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। জ্যাডন সাঞ্চো বক্সের ভেতর থেকে বাইরে পাস দেন ফ্রেডকে। এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের শটে বল টটেনহ্যামের ডিফেন্ডার বেন ডেভিসের পায়ে লেগে দিক পাল্টে বল টটেনহামের জালে জড়ায়। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না লরিসের।
৪৯ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পেয়ে যান র্যাশফোর্ড। বক্সের ভেতর থেকে তার বাঁ পায়ের শট হাত বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন লরিস।
পাল্টা আক্রমণে ৬৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। বক্সে ফ্রেডের শট টটেনহ্যামের এরিক ডায়ারের পায়ে লেগে ব্যর্থ হওয়ার পর চমৎকার শটে সফরকারীদের জালে বল পাঠান এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার।
৭৪ মিনিটে আবারো সুযোগ হারান র্যাশফোর্ড। আরেকটি দুর্দান্ত সেভ করেন লরিস। ৮১ মিনিটে ফার্নান্দেজ আবার জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে বাতির হয়ে যায়। ব্যবধানও তাই আর বাড়েনি। ২-০ গোলের দারুন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টেন হাগের শিষ্যরা।
ম্যাচে ইউনাইটেডের দাপুটে পারফরম্যান্সের চিত্র পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গোলের জন্য তাদের ২৮ শটের ১০টি ছিল লক্ষ্যে। আর টটেনহ্যামের ৯ শটের দু’টি লক্ষ্যে ছিল।
১০ ম্যাচে ছয় জয় ও এক ড্রয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে ইউনাইটেড। এক ম্যাচ বেশি খেলে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে টটেনহ্যাম।
আরেক ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডের সাথে গোলশূন্য ড্র করা চেলসি ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে।
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা লিভারপুল ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে।
১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি দ্বিতীয়, ২৭ পয়েন্ট নিয়ে আর্সেনাল শীর্ষে আছে।