সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন

রংপুর দমদমা সেতুতে আবারো ফাটল : ধ্বস রোধে বালুর বস্তা

রংপুর দমদমা সেতুতে আবারো ফাটল : ধ্বস রোধে বালুর বস্তা

স্বদেশ ডেস্ক:

রংপুর মহানগরীর উপকণ্ঠে দমদমায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের ঘাঘট নদের ওপর নির্মিত দমদমা সেতু মেরামত করার পরেও আবারও ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ার আশংকায় বালুর বস্তা দিয়ে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেতুটি ধসে পড়ার সাথে সাথেই সারাদেশের সাথে ৭ জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই দমদমা সেতুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভেঙে দেয়া হয়েছিল। এরপর ১৯৭২ সালে সেটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়। এ সেতুটি ৬০ মিটার দীর্ঘ ও ২০ মিটার প্রশস্ত। সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে আড়াই বছর আগে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।

সওজ বিভাগ জানিয়েছে, সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচলে ঝুঁকি কমাতে ও যেকোন সময় ধ্বসে পড়ার আশঙ্কায় গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়। এদিকে গত ঈদুল আজহার রাতে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে আবারও সংস্কার করা হয় সেতুটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর নিচে উত্তর প্রান্তে চারটি গার্ডারের মধ্যে একটি গার্ডারে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ধ্বস ঠেকাতে মাটি থেকে সেতুর তল পর্যন্ত পুরোটাই বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়া হয়েছে। মাটির মধ্যে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাইও দেয়া হয়, যাতে ভিতটা শক্ত হয়। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও শিগগিরই ধ্বসে পড়বে না বলে সওজ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এতকিছুর পরও যানবাহন চলাচলের সময় সেতুটি কেঁপে ওঠে। তারপরেও এই সেতুটি দিয়েই রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারী এই সাত জেলা এবং চারটি স্থলবন্দর বুড়িমারী, মোগলঘাট, সোনাহাট ও বাংলাবান্ধার সঙ্গে সারাদেশের সড়কপথে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

সূত্র জানায়, এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্য পরিবহনের ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। সেতুটির উত্তর প্রান্ত রংপুর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ প্রান্ত মিঠাপুকুর উপজেলার অন্তর্গত। এই সেতুর ওপর ট্রাক ওঠামাত্র তা দুলতে শুরু করে। এ সময় গাড়ি খুব ধীরগতিতে চালাতে হয়। দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক দিন ধরেই গাড়ি উঠার সাথে সাথেই সেতুটি দোলাদুলি করে। এখন সেতুটির নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়া হয়েছে। তারপরও গাড়ি ধীরে ও সাবধানে চালাতে হয়। সেতুটি ধ্বসে পড়লে সাত জেলার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের মার্চ মাসে দরপত্রের মাধ্যমে সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়ার কাজটি করা হয়। সেসময় প্রায় আড়াই হাজার বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়া হয়।

রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম শফিকুজ্জামান বলেন, সেতুটি অনেক পুরোনো। অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করে বলে সেতুটি চাপ নিতে পারছে না। ফলে একটি গার্ডারে ক্র্যাক (ফাটল) দেখা দিয়েছে। সেতু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেয়া হচ্ছে। এতে করে সেতুটি ভেঙে পড়লেও বালুর বস্তায় আটকে যাবে। ঈদের রাতেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সেতুটির সংস্কারকাজ করা হয়েছে।

শফিকুজ্জামান আরো বলেন, ইতোমধ্যে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে সময় এখানে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877