মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিগব্যাং তত্ত্ব ও আল কুরআন

বিগব্যাং তত্ত্ব ও আল কুরআন

আল-কুরআনে আল্লাহতায়ালা বৈজ্ঞানিক তথ্যের উল্লেখ করেছেন। মানুষেরা যেন এসব চিন্তাভাবনা ও গবেষণার মধ্য দিয়ে আল্লাহর অসীম জ্ঞানের কথা উপলব্ধি করার সাথে সাথে সত্যের সন্ধান লাভ করতে পারে সেজন্য তিনি তাগিদও দিয়েছেন। এতে বিবেকবান মানুষেরা এক আল্লাহর কাছে মাথানত করবে এবং তাঁর মহত্ত্ব ও করুণার কথা স্মরণ করবে। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে যেসব তথ্য সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছিল, জ্ঞান সাধনার ফলে তার অনেকটাই আজ সত্যের আলোতে উদ্ভাসিত হয়েছে। তবে এখনো এমন কিছু তথ্য রয়েছে, যার অর্থ অনুধাবনের জন্য আরো উন্নততর চিন্তাভাবনা ও গবেষণার যথেষ্ট প্রয়োজন।

বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হলো অজানাকে জানা আর জানা বিষয়ের প্রমাণসহ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দান করা। কুরআনের বিষয়বস্তু হলো ‘মানুষ’ যাতে বলা হয়েছে কিসে মানুষের অধিকতর কল্যাণ আর কিসে অকল্যাণ। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্ব বুঝানোর জন্য কুরআনের অনেক জায়গায় বৈজ্ঞানিক নির্দেশনা উপস্থাপন করা হয়েছে। বিজ্ঞানের কোন বিষয় যদি কুরআনের বক্তব্যের বিপরীতধর্মী হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে বিজ্ঞানের বর্তমান বক্তব্য সঠিক নয়। আজকে বিজ্ঞান যেটাকে সত্য বলছে, কালকে এই বিজ্ঞানই মিথ্যা বলছে। কুরআনের বক্তব্য অপরিবর্তনীয়। প্রতিটা ক্ষেত্রেই শেষ পর্যন্ত কুরআন যা বলেছে, বিজ্ঞানের চূড়ান্ত প্রমাণে তার সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে। তার অনেক উদাহরণ মহাকাশ বিজ্ঞানেও আছে।

কুরআন ইতিহাসগ্রন্থ নয়, তবে ইতিহাসের সত্য বিষয় এতে আলোচিত হয়েছে। কুরআন আক্ষরিক অর্থে আইনের কোন গ্রন্থ নয়, তবে এতে মানুষের চলার জন্য যুগোপযোগী আইন বিবৃত হয়েছে যা কেয়ামত পর্যন্ত সব মানুষেরই বাস্তবে পালন করার যোগ্য। এমন একটি আইন মানুষের পক্ষে রচনা করা সম্ভব নয়।

কুরআন সাহিত্য বা কবিতার গ্রন্থ নয়। তবে উচ্চমাত্রার সাহিত্য এবং কাব্যের যে ছোঁয়া কুরআনে আছে তা পৃথিবীর কোন সাহিত্যিক কিংবা কবি এর তুল্য কিছু রচনা করতে পারেনি। কুরআনের শব্দ চয়ন, ভাষার ভাবগাম্ভীর্য এতটাই স্বতন্ত্র এবং উচ্চমানের যে, একটি আয়াতও যদি কারো সামনে তিলাওয়াত করা হয়, তাহলেও মানুষ শুনেই বুঝে নিতে পারে যে কথাটি কুরআনের।

মহাবিশ্বের শুরু, এরপর শেষ, তারপর আবার শুরুর কথা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। ‘সেদিন আমি আসমানসমূহকে গুটিয়ে নেবো, যেভাবে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত দলিল-পত্রাদি। যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবেই পুনরায় সৃষ্টি করব। ওয়াদা পালন করা আমার কর্তব্য। আমি তা পালন করবই’ (সূরা আম্বিয়া-১০৪)।

এই আয়াতে একই সাথে তিন তিনবার সৃষ্টি বা ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে। এখানে আল্লাহ বলেছেন যে, সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব যে অবস্থায় এখন আছে তা এক সময়ে প্রসারিত না হয়ে বরং মহাআকর্ষণে সঙ্কুচিত হয়ে বিন্দুবৎ হয়ে যাবে। তারপর আবার প্রথমবার বিন্দুবৎ থেকে যে ভাবে সৃষ্ট হয়েছিল সেই ভাবে আবার সৃষ্টি করবে। হয়তো এভাবেই সৃষ্টি-ধ্বংসের ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে।

বিগব্যাং থিওরি আবিষ্কারের পর হাবলের স¤প্রসারণশীল মহাবিশ্ব তত্ত্ব, কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন আবিষ্কার এবং আলোকরশ্মির প্রাচুর্যতা প্রমাণের মাধ্যমে মহান সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকা একটা চূড়ান্ত সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে আরনো পেনজিয়াস ও রবার্ট উইলসন বিজ্ঞানীদ্বয় মহাবিস্ফোরণের অর্থাৎ বিগব্যাং থিওরি অনুসারে বিগব্যাং থেকে বিকরিত হয়ে আসা তেজস্ক্রিয় অবশেষ চিহ্নিত করেন। নব্বইয়ের দশকে বিজ্ঞানী কুবে স্যাটালাইট দ্বারা ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন পর্যবেক্ষণ করেন। এই আবিষ্কারের ফলেই ১৯৭৩ সালে আরনা পেজিয়াস এবং রবার্ট উইলসন বিজ্ঞানীদ্বয়কে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।

১৯২৯ সালে হাবল আবিষ্কৃত সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা নতুন কোন ধারণা নয়, বরং পবিত্র কুরআনের বর্ণিত বক্তব্যের প্রতিফলন মাত্র। আল্লাহ বলেন, ‘আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই এর স¤প্রসারণকারী।’ (সূরা যারিয়াত-৪৭)

এখানে যাকে আকাশমণ্ডলী বলা হয়েছে তা আরবি ‘সামাআ’ শব্দের অনুবাদ। এর দ্বারা সন্দেহাতীতভাবেই পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্য জগতের কথাই বুঝানো হয়েছে। ‘আমরা একে সম্প্রসারিত করেছি’ এই বাক্যটি হচ্ছে বর্তমান কাল-বাচক ও বহুবচনসূচক আরবি শব্দ ‘মুসিউনা’র অনুবাদ। এর মূল ক্রিয়াবাচক শব্দ হচ্ছে ‘আউসাআ’। এর অর্থ সম্প্রসারিত করা, আরো বেশি প্রশস্ত করা, বৃদ্ধি করা, বিস্তৃত করা। বর্তমান কালসূচক শব্দ ব্যবহারের ফলে এটা বুঝা যায় যে এই সম্প্রসারণ এখনো পর্যন্ত চলছে। অথচ ১৯২০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে মহাবিশ্বের আকৃতি নির্দিষ্ট। অর্থাৎ মহাবিশ্ব অসম্প্রসারণশীল।

বিগব্যাংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হলো ‘সিংগুলারিটি’। বলতে গেলে স্টিফেন হকিংস তার বই ‘এ ব্রিফ হিস্টরি অব টাইম’এ এই কথাটাই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, পরম চাপে ও তাপে অতীব ঘন একটি মাত্র ক্ষুদ্র বিন্দুর হঠাৎ মহাবিস্ফোরণের ফলে মহাবিশ্বের সূচনা।

এডউইন হাবল ১৯২৯ সালে লক্ষ করেন যে, গ্যালাক্সিগুলো পরস্পর থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে। তিনি আবিষ্কার করেন বিশ্বজগৎ সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন,এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হয়েছে সময়ের একটি পয়েন্ট থেকে। কথাটাই কুরআনে স্পষ্ট করে বিবৃত হয়েছে।

‘যারা কুফরি করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আসমানসমূহ ও জমিন ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম, আর আমি সব প্রাণবান জিনিসকে পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। তবুও কি তারা ঈমান আনবে না?’ (সূরা আম্বিয়া-৩০)

যারা প্রচার চালাচ্ছে কুরআন হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নিজস্ব বক্তব্য তাদের দাবি নাকচ করার জন্য এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। দেড় হাজার বছর আগে ইসলামের নবীর পক্ষে কিভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে কথা বলা সম্ভব। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও তো এ কথাই বলছেন যে, আদিতে আকাশ, সূর্য, নক্ষত্র ও পৃথিবী ইত্যাদির পৃথক কোন সত্তা ছিল না। বরং সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। পরবর্তীকালে মহাবিস্ফোরণের মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পর্যায়ক্রমে নক্ষত্র, সূর্য, পৃথিবী ও গ্রহসমূহ সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞানীরা মহাবিস্ফোরণ পরবর্তী ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলছেন যে মৌলিক বলকণা বা বস্তুকণা তৈরি হবার পর দীর্ঘকাল এই মহাবিশ্ব ধোঁয়াময় ও ধূলিময় ছিল। এমনকি পরমাণুর অস্তিত্বও এসেছে তিন লাখ ৮০ হাজার আলোকবর্ষ পর। এক পর্যায়ে বস্তুর অস্তিত্ব লাভের পর যখন মহাকর্ষণ বল তীব্র থেকে তীব্র হতে থাকল, তখনই মূলত ধোঁয়াময় বিশ্ব জায়গায় জায়গায় ঘনীভূত হয়ে এক বিলিয়ন বছর পরে গ্যালাক্সি, নক্ষত্র ইত্যাদি সৃষ্টি হতে থাকল। আল্লাহ বলছেন,‘অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধূম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।’ (সূরা ফুসসিলাত-১১)। আয়াত থেকে এ কথা পরিষ্কার যে, ধূম্রকুঞ্জময় মহাবিশ্ব হবার অনেক পরে ঘনীভূত হয়ে বা একত্রিত হয়ে গ্রহ নক্ষত্রের সৃষ্টি হয়েছে।

‘তারপর তিনি দু’দিনে আসমানসমূহকে সাত আসমানে পরিণত করলেন। আর প্রত্যেক আসমানে তার কার্যাবলি অহির মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন। আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালার দ্বারা সুসজ্জিত করেছি আর সুরক্ষিত করেছি। এ হলো মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।’ (ফুসসিলাত-১২)

এখানে দু’দিন বলতে আমাদের গণনার দু’দিন নয় বরং এটাকে আল্লাহর নির্ধারিত সেই সময়কার পিরিয়ডকে বুঝতে হবে। ‘কার্যাবলি অহির মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন’- বক্তব্যে আল্লাহ দুই রকম আদেশের কথা ইঙ্গিত করে থাকতে পারেন। এই মহাবিশ্বে আল্লাহর আদেশ বা বিধিবিধান দুইভাবে জারি হয়। একটা হলো এমন প্রাকৃতিক বিধান যা তার সৃষ্টির ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক তা মানতেই হবে। যেমন, মহাবিশ্ব পরিচালনায় দেয়া প্রাকৃতিক আইন। এসব বিধিবিধান এলোমেলোভাবে সাজানো কোন বিধান নয়। প্রায় সব প্রাকৃতিক বিধানই গণিতের সূত্র মেনে চলে। এসব বিধানের বাস্তব কার্যকারিতা আছে বলেই বিজ্ঞানীরা নতুন কিছু আবিষ্কার করতে গিয়ে গণিতের সূত্র দ্বারাই তা প্রমাণ করে থাকে।

প্রকৃতপক্ষে বিজ্ঞানীরা কোন কিছুই নতুন করে আবিষ্কার করেন না বা বানান না, বরং তাঁরা পূর্ব থেকেই বিদ্যমান আল্লাহর দেয়া সুপরিকল্পত যে বিধান যা প্রকৃতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার কিছু কিছু জানতে পারে মাত্র। গভীরভাবে চিন্তার বিষয় হলো, একজন স্রষ্টাই যদি না থাকবে, তাহলে কী করে এ রকম সুপরিকল্পিত গাণিতিক সূত্রের বিধিবদ্ধ বিধানে প্রকৃতিটা পরিচালিত হচ্ছে। আর প্রকৃতির এই বিধিবদ্ধ বিধান যে একজন স্রষ্টা ছাড়া এমনি এমনি পরিচালিত হতে পারে না তা বুঝতে বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হবার দরকার নেই। সৃষ্টিজগৎ নিয়ে চিন্তা করার মতো জ্ঞান থাকলেই হলো।

আল্লাহর দেয়া বিধানের দ্বিতীয় ধরন হলো, এসব বিধান এমন তা যে সব প্রাণীর ওপর জারি হয়, যার কিছু মানা বা না মানা ইচ্ছাধীন। যেমন মানুষ এবং জিন জাতির ওপর জারিকৃত শরয়ি বিধান। মানলে পুরস্কার, না মানলে শাস্তির কথা আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন। মানুষ ছাড়া অন্যান্য গ্রহে চিন্তাশীল প্রাণের অস্তিত্ব থাকলে সেখানেও যে এই দুই ধরনের বিধান আল্লাহ পাঠিয়ে থাকতে পারেন। নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপমালা দিয়ে সুসজ্জিত করা বলতে সূর্য এবং প্রথম আসমানের নক্ষত্রগুলোকে বুঝানো হয়েছে। কারণ প্রথম আসমানেই কোটি কোটি আলো ও তাপ দানকারী নক্ষত্র রয়েছে। তবে সূর্যই পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র। বলা হয়েছে যে এর দ্বারা তিনি সুসজ্জিত এবং সুরক্ষিত করেছেন। আমরা জানি, সব শক্তির উৎস হলো সূর্যালোক।

কিন্তু এর থেকে বিচ্ছুরিত হওয়া দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্যমান আলোকরশ্মি যেমন আলট্রাভায়োলেট রে, গামা রে, ইনফ্রারেড রে ইত্যাদি মানুষের জন্য ক্ষতিকর বিধায় আমাদের পৃথিবীর চার দিকে সুরক্ষাবলয় তৈরি করে রাখা ওজোন স্তর ও অন্যান্য স্তর এসব ক্ষতিকর আলোকরশ্মি শুষে নেয়। ফলে আমরা মানুষেরা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাই। এই জন্যই ‘সুরক্ষিত রেখেছি’ কথাটি বলা হয়েছে।

আল্লাহ বলেন, ‘তিনি নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়টি খণ্ডিত সময়ে, অতঃপর আরশের ওপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাকো। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা দেখেন।’ (সূরা হাদিদ-৪) এখানে ছয় দিন বলতে আমাদের গণনায় ছয় দিন না হয়ে ছয়টি পিরিয়ড বুঝতে হবে। কুরআনে প্রদত্ত মহাবিশ্ব সৃষ্টির বিষয়ে অন্য আয়াতগুলো পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ আদিতে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা একসাথে ও একইরূপে শুরু করলেও পরে কেবল মাত্র পৃথিবী সৃষ্টির ভিত্তি রচিত হয় দুই পর্যায়ে। বিগব্যাংয়ের পর সৃষ্ট মৌলিক বলবাহী কণা ০, ১ ও চক্রণবিশিষ্ট এবং ভরবাহী মৌল কণা অর্ধেক চক্রণবিশিষ্ট।

বিজ্ঞানীরা বলেন, পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অর্ধেক চক্রণবিশিষ্ট ভরবাহী মৌল কণিকা যেমন কোয়ার্ক, নিউট্রিনো ইত্যাদি সৃষ্টির ক্ষণ থেকেই পৃথিবী সৃষ্টির ভিত্তি বা সূচনা ঘটে। অতঃপর চার পর্যায়ের মধ্যে অর্থাৎ (১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের মাধ্যমে) আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর বিভিন্ন স্তর সৃষ্টির জন্য ও জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মৌলিক উপকরণগুলো অর্থাৎ স্বয়ংসম্পূর্ণ মৌলিক কণিকা বা পরমাণুসমূহ গঠন করা হয়। অতঃপর পরবর্তীতে দুই পর্যায়ে (৫ম ও ৬ষ্ঠ পর্যায়ে) আকাশমণ্ডলীকে পৃথিবী থেকে পৃথক করে দিয়ে সপ্ত-আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীরূপে সুসংগঠিত করে সৃষ্টি করা হয়। এর পর থেকে স্রষ্টার বেঁধে দেয়া ছকে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সবকিছু আপন আপন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নব নবরূপে পরিগঠিত ও রূপান্তরিত হচ্ছে মাত্র।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব হিস্টোপ্যাথলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877