স্বদেশ ডেস্ক:
চীনে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার চলছে। জিনজিয়াং প্রদেশে গুরুতরভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। চীনের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘের বিদায়ী মানবাধিকার কমিশনার মিচেল ব্যাচেলেট। যদিও জাতিসঙ্ঘের এই রিপোর্টের তুমুল বিরোধিতা করেছে চীন।
৩১ আগস্ট জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনার হিসেবে শেষদিন ছিল মিচেল ব্যাচেলেটের। মেয়াদ শেষের মাত্র ১৩ মিনিট আগে বিস্ফোরক রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আনেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এএফপিকে ই-মেইল মারফত মিচেল জানিয়েছেন, ‘জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনার হিসেবে মেয়াদ ফুরনোর আগে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনব বলে কথা দিয়েছিলাম। সেটাই করলাম।’ একইসাথে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি গুরুতর। তাই জাতীয় এবং আঞ্চলিক স্তরের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলাম।’
কী রয়েছে মানবাধিকা কমিশনারের রিপোর্টে? বলা হয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশে চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসদমনের নামে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। ধর্ষণ, পুরুষদের জোর করে নির্বীজকরণের মতো ঘটনা ঘটেছে সেখানে। এমনকি, হঠাৎই নিজের বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে অনেকে। পরে যাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি। ইউঘুর এবং অন্য মুসলিম গোষ্ঠীর সদস্যদের সাধারণ নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। জোর করে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে তাদের। জাতিসঙ্ঘ অবশ্য বলেছে যে চীনের সরকার কত লোককে আটকে রেখেছে তা নিশ্চিত করা যায়নি। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অনুমান করে যে উত্তর-পূর্ব চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের শিবিরে ১০ লাখের বেশি লোককে আটক রাখা হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ বলেছে, এতে অমুসলিমরাও থাকতে পারে। এসব তথ্য বিস্তারিতভাবে জাতিসঙ্ঘের ৪৯ পাতার রিপোর্টে উঠে এসেছে। এ বিষয়ে চীনের সরকার, জাতিসঙ্ঘ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে নজর দেয়ার আরজি জানিয়েছেন মিচেল। তবে জিনজিয়াং উইঘুর অটোনমাস রিজিওনে গণহত্যার কোনো উল্লেখ নেই ওই রিপোর্টে।
এদিকে রিপোর্ট প্রকাশের পরই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন। জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত চীনের প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন বলেন, জিনজিয়াং ইস্যুটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। যাতে চীনের স্থিরতা, স্থায়িত্ব এবং উন্নয়নে বাধা তৈরি করা যায়।
সূত্র : বিবিসি ও সংবাদ প্রতিদিন