স্বদেশ ডেস্ক:
নেদারল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে, সেখানে বসবাসরত প্রায় ৪০০ আশ্রয় প্রত্যাশীকে সরিয়ে নিয়েছে। সেখানে রয়েছে উপচে পড়া ভিড় এবং এই ক্যাম্পে শত শত মানুষ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘুমাচ্ছে। এমন একটি বিরূপ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নেয়।
সরকারি আশ্রয় সংস্থার মুখপাত্র লেওন ভেলডট শনিবার জানান, অভিবাসন প্রত্যাসীদের রাতারাতি অন্য স্থানে, একটি বিকল্প আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়।
স্বাস্থ্য পরিষেবা ও যুব পরিদর্শন বিভাগের একটি দল টের আপেল গ্রামের কাছাকাছি অবস্থিত এই অস্থায়ী, অপরিচ্ছন্ন ক্যাম্প পরিদর্শনের পর, আশ্রয় প্রত্যাসীদের সরিয়ে নেয়া হয়। পরিদর্শক দলটি বলেছে, এখানে পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। এ কারণে সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।
এক দিন আগে, নগরকেন্দ্রে অবস্থিত দুটি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে ১৫০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়। এ সপ্তাহে দেখা গেছে, উল্লেখিত অভিবাসী কেন্দ্রের বাইরে প্রায় ৭০০ মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত যাপনে বাধ্য হয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ওই ১৫০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
শরণার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এ রকম ব্যক্তিদের মতে, এই জনবহুল ক্যাম্পগুলো গ্রীস ও ইতালির পরিস্থিতির সাথে তুলনীয়। সাধারণত ওই দুটি দেশেই ইউরোপগামী অভিবাসন-প্রত্যাশীদের প্রথম গন্তব্য।
এ সপ্তাহে টের আপেল কেন্দ্রের একটি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া ৩ মাস বয়সী একটি শিশু মারা গেছে। কর্তৃপক্ষ এই মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছে। এছাড়াও, একজন ডায়াবেটিস রোগী ও হার্ট অ্যাটাকের শিকার ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে বিনা চিকিৎসায় ছিলেন।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে ত্রাণ সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের নেদারল্যান্ডস শাখা বৃহস্পতিবার সেখানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে।
ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট শুক্রবার জানান, তিনি টের আপেলের ঘটনার জন্য লজ্জিত। শুক্রবার রাতে রুট সরকার তার দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের আবাসন সঙ্কট নিরসনের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
নেদারল্যান্ডের বিভিন্ন শহর, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের থাকার জায়গা দিচ্ছেন। তবে, অন্যান্য দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের উদারতা দেখা যায় না। টের আপেলের বেশিরভাগ অভিবাসন প্রত্যাশী, চলমান গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য সিরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছেন।