বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন

চাই সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা

চাই সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা

মো: গোলাম ফারুক :

গত ২২ অক্টোবর সারা দেশে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকাযান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনও দিবসটি পালন করে। যখন জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করছি তখন দেশে করোনা মহামারী ও ডেঙ্গুর প্রভাব চলছে। মহামারীতে প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে অনেক মানুষের জীবন জীবিকা মানবেতর অবস্থায় পড়েছে। বিশেষ করে পরিবহন শ্রমিকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। করোনার ফলে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করেছেন তারা।

দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিবহন শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। শ্রমিকরা নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ পেশায় সেবা দিয়ে আসছেন। গত ২২ অক্টোবর ছিলো জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। বেশ কিছু প্রাণের বিনিময়ে দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি লাভ করেছে। যাদের প্রাণের বিনিময়ে এ দিবসটি স্বীকৃতি লাভ করেছে আমরা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

সারা দেশের অটোরিকশা হালকা যানের সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ, চালকের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। অপরিকল্পিত মহাসড়ক ঘোষণার সময় অনেক মালিক-শ্রমিক অনেক প্রতিবাদ আন্দোলন করেছিলেন। তখন সরকারের বিভিন্ন মহল বলেছিল, যেখানে মহাসড়ক হবে সেখানে অটোরিকশা হালকা যান চলাচলের জন্য বাইলেন ও ডিভাইডার নির্মাণ করা হবে। সরকার অনুমোদিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ার ফলে এই শিল্পের সাথে জড়িত লাখ লাখ চালকের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে চালকদের পরিবার শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং খাদ্যের কারণে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। গাড়ির কাগজপত্র নবায়ন, রেজিস্ট্রেশন, নামজারি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং নবায়ন করতে হলে বিআরটিএ অফিসে যেতে হয়। বিআরটিএ অফিস যেতে হলে মহাসড়ক ব্যতীত যাওয়া যায় না। নিরাপদ সড়কের জন্য দেশের সব মানুষের দাবি, আমরাও নিরাপদ সড়ক চাই। নিরাপদ সড়ক হলে দুর্ঘটনা কমবে এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমে আসবে। এ বিষয়ে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছি। সড়ক দুর্ঘটনা নানা কারণে হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সড়ক ব্যবস্থাপনাই মূলত দায়ী। তাই দেশে নিরাপদ সড়ক করতে হলে সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। এর কারণগুলো চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে। মহাসড়কের পাশে তিন চাকার ছোট গাড়ির জন্য বাইলেনসহ ডিভাইডার তৈরি করার কথা সরকারের উচ্চমহল থেকে বিভিন্ন সময় বহুবার বলা হয়েছে। ২০১৫ সালে তৎকালীন বিমানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া তিন চাকার গাড়ি মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করা সঠিক হয়নি। এ ছাড়াও অনেক সংসদ সদস্য ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা শ্রমিকদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। কিন্তু নিছক আশার বাণী ছাড়া আমরা আর কিছুই পাইনি। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে ফেডারেশনের ১০ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি ৩২টি জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়াও একাধিকবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, আলোচনা সভা, গোলটেবিল বৈঠক, সংবাদ সম্মেলন, টকশোর মাধ্যমে এ দাবি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শ্রমিকরা এখনো অনেক আশায় বুক বেঁধে আছে।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকাযান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877