স্বদেশ ডেস্ক: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে ছয় জেলে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই ছয় জেলেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। আজ রোববার সকালে উপজেলার বুড়িদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার হওয়া ওই ছয় ব্যক্তি হলেন, নওগাঁ সদর উপজেলার খাগড়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৭), তসলিম হোসেন (২৩), সাইফুল ইসলাম (৩৮), আবদুল মজিদ আকন্দ (৩৭) ও আনিছুর রহমান (২৭) এবং সদর উপজেলার ফারতপুর গ্রামের রেজাউল করিম (২৭)।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৮টার দিকে ওই ছয় জেলে মান্দা উপজেলার বুড়িদহ গ্রামের রনজিত কুমার চৌধুরীর পুকুরে চুক্তিভিত্তিক মাছ ধরতে যান। জেলেদের সঙ্গে পুকুর মালিকের চুক্তি ছিল, তারা পুকুর থেকে কেবল ছোট মাছ ধরবেন। কিন্তু জেলেরা কয়েকটি বড় মাছও ধরে ফেলেন। এ নিয়ে জেলেদের সঙ্গে পুকুর মালিকের কথাকাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পুকুর মালিক ও গ্রামের লোকজন ওই জেলেদের মারধর শুরু করেন।
এক পর্যায়ে জেলেরা মার খাওয়া থেকে বাঁচতে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় গ্রামের লোকজন ছেলেধরা বলে চিৎকার করতে শুরু করলে আরও লোকজন ছুটে এসে প্রথমে বুড়িদহ গ্রামের কাছে সাদ্দাম হোসেন নামে এক জেলেকে আটক করে।
এরইমধ্যে ছেলেধরা পালিয়ে যাচ্ছে-এমন খবর রটে গেলে পালানোর সময় পাশের খুদিয়াডাঙ্গা গ্রামের লোকজন অন্য পাঁচ জেলেকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই ছয় জেলেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামবাসী ছেলেধরা গুজব রটিয়ে ছয় ব্যক্তিকে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তারা আপাতত থানা হেফাজতে রয়েছেন।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জনান, ‘ঘটনা তদন্তে তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মৎস্যজীবী বলে জানা গেছে। তারা মাছ ধরার জন্য নওগাঁ থেকে আজ সকালে মান্দা উপজেলায় আসে।’
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ একটা গুজব। এ ধরনের গুজবে কাউকে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করব।’