বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপি নেতা ইশরাকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রী আজিজ-বেনজীরকে প্রটেকশন দেবে না সরকার : সালমান এফ রহমান হামাসের বুবি-ট্র্যাপ : গাজায় ৩ ইসরাইলি সৈন্য নিহত দিল্লিতে রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯.৯ সেলসিয়াস জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে জোর আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়া বন্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ সবাইকে শেষ করো : ইসরাইলি গোলায় নিকি হ্যালি পানির দাম ১০ শতাংশ বাড়াচ্ছে ঢাকা ওয়াসা শাহজালাল বিমানবন্দরে ২ কেজি স্বর্ণসহ নারী কেবিন ক্রু গ্রেফতার
বিশ্বকাপে কে হবে নতুন চ্যাম্পিয়ন

বিশ্বকাপে কে হবে নতুন চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডস আজ কাকে হাসাবে? চার দিকে কান পাতলে এক আলোচনা, ‘কে জিতবে আজ বিশ্বকাপ’। কে হাসবে, কে কাঁদবে? লন্ডনের, সেন্ট জনস উডের এ মাঠ বহু ইতিহাসের সাক্ষী। আজো লেখা হবে এর ইতিহাসে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়নের নাম। শুধু লর্ডস কেন, ক্রিকেট ইতিহাসও পাচ্ছে নতুন চ্যাম্পিয়ন দল।

পেছনে তাকালে ১৯৭৫ সালে প্রথম আসরে ফাইনালপূর্ব ছিল এ আলোচনা। তাহলে কে হচ্ছে আজ নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন? এর অপেক্ষায় আজ বাংলাদেশসহ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। অনিশ্চয়তার খেলা ‘ক্রিকেট’ বিধায় দীর্ঘক্ষণ মাঠে বসে বসে খেলা দেখেও ক্লান্ত হয় না দর্শক। প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ্য বিধায় বহু কষ্ট স্বীকার করে ক্রিকেটের বন্দনা। আজও এমন আবেগঘন মুহূর্ত উপভোগের অপেক্ষা।

যে হেরে যাবে তার জন্য যেমন সমবেদনা, নতুনদের জন্যও শুভেচ্ছা। কারণ ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড দু’টি দলেই রয়েছে ফাইনাল খেলে শিরোপা না জেতার আক্ষেপ। এটা তুলনামূলক অনেক বেশি ইংল্যান্ডের। এ লর্ডসে হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পঞ্চম ফাইনাল। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছে এখানে ইংল্যান্ড। নিজ দেশের বাইরেও খেলেছে ২ ফাইনাল (ইডেন গার্ডেন ১৯৮৭ ও মেলবোর্ন ১৯৯২। কিন্তু শিরোপ অধরা। ক্রিকেটে অনেক অবদান থাকা সত্ত্বেও ইংরেজদের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন না হওয়ার আক্ষেপ যাতে ঘুচে যাক এ প্রত্যাশা অনেকেরই।

যেমন সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর পরই ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ইংলিশ তারকা মাইকেল আথারটন বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের ফাইনালে ওঠা ও চ্যাম্পিয়ন হলে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। যেটা তারা ও তার পুর্বপুরুষরাও পারেনি, সেটা এওন মর্গান অ্যান্ড গং করুক এ প্রার্থনায় পড়ে থাকবে আজ গোটা ইংরেজ জাতি।

এটা স্বাভাবিক। ক্রিকেট যাদের হাত ধরে সূচনা, তারা বার বার বঞ্চিত হবেন এটি লজ্জার বিষয়ও। ইংল্যান্ড এ আসরে অনেক ব্যালান্সড। কোন ডিপার্টমেন্ট দুর্বল? খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল গড়েছে এবার। প্রতিবার থাকে এমন, কিন্তু এবার কেনই যেন মনে হচ্ছে ইংলিশরা অন্যরকম প্রস্তুত বিশ্বকাপ ছোঁয়ার জন্য! অনেক আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করা গেছে দলটির মাঝে।

নিউজিল্যান্ড আজ কতটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে তা বলা মুশকিল। ব্যাটিংয়ে জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, এরপর ইয়ন মর্গান, জস বাটলার, জো রুট, বেন স্টোকসসহ দীর্ঘ ব্যাটিং লাইন। বোলিংয়েও দুর্দান্ত তারা। বিশেষ করে ইংলিশ কন্ডিশনে যা দরকার তাতে পরিপূর্ণতা। ওপেনিংয়ে জোফরা আর্চার, মার্ক উড, ক্রিস ওয়েকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, বেন স্টোকসদের সাথে আদিল রশিদ ও মঈন আলীদের সমন্বয় অসাধারণ। যেকোনো ব্যাটিং লাইনের ঘুম হারাম করে দেয়ার মতো তারা। ফিল্ডিংয়েও অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে চলেছে। এক কথায় অলরাউন্ড পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেই আজকের ফাইনালে স্বাগতিক দল। এবং শিরোপার এক নম্বার দাবিদারও।

অপর দিকে কিউইদের মনে আজও দাগ কেটে আছে, ২০১৫ এর ফাইনাল। মেলবোর্নের সে ফাইনালে যেভাবে রণেভঙ্গ দিয়েছিল, অন্তত সেটা হতে দিতে চান না এবার। ওই আসরের অন্তত সাত-আটজন এ স্কোয়াডেও রয়েছেন। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, রস টেইলর, মার্টিন গাপতিল, ম্যাট হেনরি, টম ল্যাথাম, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্টদের সাথে নিকোলস, জিমি নিশাম, গ্রান্ডহোম, সেন্তনারদের সমন্বয় অসাধারণ। বিশ্বকাপের সূচনায় চমৎকার খেলে একের পর এক ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের দাবি হয়ে যায়। শেষের দিকে পারফরম্যান্সে ছন্দপতন ঘটে অবশ্য।

এক ম্যাচে আজকের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও ভেঙে পড়েছিল। চেস্টারলি স্ট্রিটে ইংল্যান্ডের করা ৩০৫/৮ এর জবাবে ৪৫ ওভারে ১৮৬ তে অলআউট কিউই। ল্যাথাম ছাড়া আর কারোরই ব্যাটে ছিল না হাফ সেঞ্চুরিও। নিউজিল্যান্ডের এ একটা সমস্যা। যে দিন খেলবে তো প্রতিপক্ষকে আর সুযোগ দিতে চায় না। সেমিফাইনালই তার প্রমাণ। ভারতকে যেভাবে চেপে ধরে, সেখান থেকে আর বের হতে পারেনি বিরাট কোহলির দল। অথচ ফেবারিট ছিল ভারতই। ঠিক উল্টা ছিল ’১৫ এর ফাইনাল।

ফলে কখন কী করবে তারা বোঝা মুশকিল। তবে এটাও ঠিক, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। দলটির শক্তিমত্তা, ক্রিকেট ঐতিহ্য কোনো দিক দিয়েই পিছিয়ে নেই। সেই প্রথম বিশ্বকাপ থেকেই নিয়মিত খেলে এলেও এ নিয়ে দ্বিতীয়বার খেলছে ফাইনালে। অথচ প্রতিবারেই তাদের হিসাব কষেই খেলতে হয়েছে প্রতিটা দলকে। ফলে শিরোপার অন্যতম দাবিদার কেন উইলিয়ামসনের দলও। প্রতিটা ডিপার্টমেন্টই তাদের গোছানো। ২০১৫ এর দলকে এর চেয়েও শক্তিশালী ও ব্যালান্সড মনে হয়। তবে এবারো তারা কম নয়।

দুই দলের মধ্যে সবমিলিয়ে ৯০ বার মোকাবেলা হয়েছে। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ড ৪৩ ও ইংল্যান্ড জিতেছে ৪১ ম্যাচ। এ ছাড়া টাই হয়েছে ২ ও রেজাল্ট হয়নি ৪ ম্যাচে। ২ দলের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলা হয় ৩১ ম্যাচ। যাতে ইংল্যান্ড জিতেছে ১৭ আর নিউজিল্যান্ড জিতেছে ১২ ম্যাচ। ২ ম্যাচে রেজাল্ট হয়নি। এ ছাড়া আইসিসি বিশ্বকাপে দুই দলের মধ্যে সাক্ষাৎ ঘটেছে ৯ বার। যাতে জয়ের পাল্লা ভারী নিউজিল্যান্ডের।

পাঁচবার জিতেছে কিউই বাকি চারবার ইংল্যান্ড। ফলে কে কাউকে ছাড় দেবে সহজেই এটা ভাবা বোকামি। সবমিলিয়ে একটা জাঁকজমকপূর্ণ ফাইনাল দেখার অপেক্ষা যা হয়নি বিগত ফাইনালে। দুই দলই যেভাবে খেলছে তাতে অমন এক ম্যাচের প্রত্যাশা করাই যায়। আইসিসিও প্রস্তুত নতুন মঞ্চ সাজিয়ে। কে হবে সেই নতুন চ্যাম্পিয়ন, তাদের তো বরণ করে নেবে তারা এটা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে!

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877